Ajker Patrika

মরদেহের গোসল করাতে গিয়ে মেলে আঘাতের চিহ্ন, স্বামী পলাতক

বগুড়া প্রতিনিধি
মরদেহের গোসল করাতে গিয়ে মেলে আঘাতের চিহ্ন, স্বামী পলাতক

বগুড়ায় গৃহবধূ নাজমা বেগমের (৩২) মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টা ৫ মিনিটে মারা যান তিনি। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে গৃহবধূর পরিবারকে জানান স্বামী শহীদ মিয়া।

শহীদ মিয়ার বাড়ি বগুড়া সদর উপজেলার সাতশিমুলিয়া গ্রামে। আজ বুধবার সকালে স্ত্রীর মরদেহ দাফনের জন্য সেখানে নিয়ে আসেন তিনি। স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবেই মরদেহ দেখতে আসেন নাজমার স্বজনেরাও। চলছিল দাফনের প্রস্তুতি। কিন্তু ঘটনার মোড় ঘুরে যায় আজ দুপুরে দাফনের পূর্বে মরদেহ গোসলের সময়। মরদেহের শরীরের একাধিক জায়গায় মেলে রহস্যজনক আঘাতের চিহ্ন। এ নিয়ে কানাঘুষা শুরু হতেই লাপাত্তা হন স্বামী শহীদ মিয়া। 

এদিকে নাজমার ভাইয়ের ফোন পেয়ে মরদেহের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। 

সুরতহাল প্রতিবেদনে বগুড়া সদর থানার পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) জাকির আল আহসান জানান, নাজমার গলায়, পিঠেসহ শরীরের একাধিক স্থানে নানারকম দাগ দেখা গেছে। দাগগুলো কীসের তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। 

নিহতের স্বজনদের দাবি, নাজমাকে পিটিয়ে হত্যা করে ডায়রিয়ায় মৃত্যু বলে প্রচার করছেন স্বামী শহীদ মিয়া। 

নিহত নাজমা বেগম সদরের গোকুল মধ্যপাড়া এলাকার কামাল হোসেনের মেয়ে। তাঁর স্বামী শহীদ মিয়া বগুড়া সদরের সাতশিমুলিয়া গ্রামের ওলি মিয়ার ছেলে। 

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। এই দম্পতির রয়েছে দুইটি সন্তান। শহীদ পেশায় একজন গাড়িচালক। প্রায় চার মাস আগে কাজের সন্ধানে সপরিবারে সাভারের হেমায়েতপুরে যান তিনি। সেখানে বাসাভাড়া নিয়ে বসবাস করা শুরু করেন। তবে মাস চারেক ধরে বেকার রয়েছেন শহীদ। দাম্পত্য জীবনে মাঝে মধ্যেই তারা পারিবারিক কলহে লিপ্ত হতেন বলে জানা গেছে। 

মৃত নাজমার ভাই সোবহান বলেন, ‘আমার বোন-দুলা ভাই ঢাকা সাভারের হেমায়েতপুরে থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে দুলাভাই (শহীদ) আমাকে ফোনে বলেন যে আমার বোন ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বুধবার সকালে নাজমার মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসেন দুলাভাই। নাজমার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ভেবে সবাই মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু লাশের গোসল করানোর সময় দেখা যায় নাজমা আপার শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন। বিষয়টি নিয়ে কথা উঠতেই শহীদ বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।’ 

সোবহানের দাবি, নাজমা ও শহীদের দাম্পত্য জীবনে কলহ লেগেই থাকত। এর জেরে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন শহীদ। কেননা, এর আগেও একবার নাজমার শরীরে আগুন দিয়ে শহীদ তাঁকে হত্যাচেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন সোবহান। 

বগুড়া সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাকির আল-আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুপুরে ফোন পেয়ে সাতশিমুলিয়ায় গিয়ে মরদেহের সুরতহাল করি। মরদেহের গলায়, পিঠে, পাঁজরসহ শরীরের নানা স্থানে কিছু দাগ দেখতে পাই। 

এসআই জাকির আরও বলেন, ‘গত ২১ আগস্ট থেকে ২৩ আগস্ট রাত ১২টা ৫ মিনিট পর্যন্ত শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন নাজমা। এ বিষয়ে আমাদের কাছে মেডিকেল ডকুমেন্টস আছে। কী কারণে নাজমা মারা গেছেন তা এখনই বোঝা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ। ময়নাতদন্ত শেষে আগামীকাল মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

বৃদ্ধের চার বিয়ে, থানায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জেরার মুখে হাসির রোল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত