Ajker Patrika

বৃষ্টির পানিতে খেতেই নষ্ট আড়াই কোটি টাকার ধান

খালিদ হাসান, শিবগঞ্জ, বগুড়া 
বৃষ্টির পানিতে খেতেই নষ্ট আড়াই কোটি টাকার ধান

চলতি মৌসুমের শেষ দিকে ঝড় বৃষ্টিতে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায়। কৃষি অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, প্রায় আড়াই কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে এই এলাকায়। হাঁটু পানিতে দিনের পর দিন পরে থাকায় ধানে পচন ধরায় সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়েছে প্রায় ১৫০ হেক্টর জমির ধান। এত কষ্টে আবাদের ফসল নষ্ট হওয়ায় বোবা কান্না কাঁদছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মুজাহিদ সরকার জানান, এ বছর শিবগঞ্জ উপজেলায় মোট ২১ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে উফশী জাতের ধান ১৮ হাজার হেক্টরে ও হাইব্রিড ধান আবাদ হয়েছে ৩ হাজার হেক্টরে। প্রতি হেক্টর জমিতে উভয় জাতের ধানের গড় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ মেট্রিকটন। প্রতি হেক্টরে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬৫ মন।

আল মুজাহিদ বলেন, ‘এ উপজেলায় ঘূর্ণিঝড়ে ৫৫০ হেক্টর জমি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে তা হিসাব করে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ হেক্টর।’ 

কৃষি অফিসের তথ্য মতে, ১৫০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২৪ হাজার ৭ শ ৫০ মন ধানের আবাদ হওয়ার কথা থাকলেও ঝড় বৃষ্টির কারণে তা সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়েছে। বর্তমানে শিবগঞ্জে বিভিন্ন জাতের ধান মন প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮শ থেকে ১ হাজার টাকায়। সেই অনুপাতে ২৪ হাজার ৭ শ ৫০ মন ধানের দাম দাঁড়ায় ১ কোটি ৯৮ লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২ কোটি ৪৭ লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার টাকা। যার সম্পূর্ণটাই লোকসান গুনতে হয়েছে কৃষকদের।

উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের লস্করপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন সাজু ৩ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছিলেন। কিন্তু ঝড়ে ২ বিঘা জমির প্রায় সম্পূর্ণ ধান নষ্ট হয়েছে তাঁর। সাজু জানান, পুরোপুরি পাকার আগেই ঝড়ে ধানের গাছ হেলে পড়ে। একপর্যায়ে পচন ধরে যায়। এক বিঘা জমির ধান কেটে বাড়ি আনলেও তা সেদ্ধ করার পর রোদের অভাবে শুকাতে পারছি না। সেগুলোও নষ্ট হচ্ছে।

উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের ভরিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ঝড়ে আমার ৩ বিঘা জমির ধান পচে গেছে। কিছু ধান কেটে এনে সেদ্ধ করছি। কিন্তু আবহাওয়া ভালো না হওয়ায় এই ধানও শুকাতে পারছি না।

এদিকে, বেশ কয়েক দিন পানিতে ডুবে থাকায় ধানের সোনালি রং অনেকটা কালো হয়ে যাওয়ায় বিক্রিও করতে পারছেন না অনেকে। এসব ধান সেদ্ধ করার পর শুকিয়ে চাল করলেও খেতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা।

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মুজাহিদ সরকার জানান, উপজেলায় সর্বমোট ৬ হাজার ৮০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের একটি তালিকা করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত