Ajker Patrika

পাবনায় রেলের জমিতে বিএনপি ও আ.লীগ নেতার ভবন

শাহীন রহমান, পাবনা 
পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌর সদরে রেলওয়ের জায়গায় নির্মাণাধীন ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌর সদরে রেলওয়ের জায়গায় নির্মাণাধীন ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে রেলের জায়গা কৃষিজমি হিসেবে ইজারা নিয়ে শ্রেণি পরিবর্তন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। পৌর সদর এলাকায় ঈশ্বরদী-জয়দেবপুর রেললাইন থেকে মাত্র ২০ গজ দূরে এই ভবন নির্মাণ চলছে। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, তাঁদের ভূমি কৃষিজমি হিসেবে ইজারা নিয়ে অনুমোদনবিহীন ভবন নির্মাণের সুযোগ নেই।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, বড়াল ব্রিজ স্টেশনের পশ্চিম পাশে রেলের প্রায় এক একর পুকুর বালু ভরাট করে বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। সেখানে প্রায় চার হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে একটি ভবনের নির্মাণ প্রায় শেষ করে আরেকটি ভবনের কাজ শুরু করেছেন শ্রমিকেরা। আশপাশে নির্মাণসামগ্রী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। তবে পাশেই কয়েক বছর আগে অবৈধভাবে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করতে গেলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বাধায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কয়েক বছর পর এখন পাশেই আবার নতুন করে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মহির উদ্দিন, মন্ডতোষ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আরশেদ আলী, পাটুলিপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ, সাবেক ইউপি সচিব গোলাম আম্বিয়া, হাসিনুর রহমান বিপ্লব, ডি এম আব্দুস সাত্তার, প্রভাষক কুরবান আলী ও আব্দুল মতিন এই ভবন নির্মাণ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, রেলওয়ের পুকুরে আগে মাছ চাষ করা হতো। চার বছর আগে ড্রেজার দিয়ে বালু ফেলে পুকুর ভরাট শুরু করেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে উপজেলা প্রশাসন বালু ভরাট বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে পুকুরটি আবার ভরাট করা হয়। এখন সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মহির উদ্দিন বলেন, ‘দুই বছর আগে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে বাণিজ্যিক করা হয়েছে। তাই ভবন নির্মাণ করছি। এতে আপনাদের সমস্যা কী?’

পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌর সদরে রেলওয়ের জায়গায় নির্মাণাধীন ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌর সদরে রেলওয়ের জায়গায় নির্মাণাধীন ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা

অন্যদিকে আরেক দখলদার কুরবান আলী জানান, ভবন নির্মাণের লিখিত কোনো অনুমতি নেই। তবে উল্লাপাড়া রেলওয়ের কানুনগো শরিফুল ইসলাম তাঁদের মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন। কিন্তু ঘটনার বিষয়ে উল্লাপাড়া এলাকার রেলওয়ে কানুনগো শরিফুল বলেন, এ ধরনের কথা কারও সঙ্গে হয়নি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজশাহী অঞ্চলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা (পশ্চিম) রেজাউল করিম বলেন, রেলওয়ের জায়গায় অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের সুযোগ নেই। সারা দেশে রেলওয়ের জায়গা থেকে অবৈধ ভবন উচ্ছেদের অভিযান চলমান। ভাঙ্গুড়ার বিষয়টিও দেখা হবে।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুন নাহার বলেন, ‘রেলওয়ের জায়গায় ভবন নির্মাণ হচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। নির্মাণাধীন ভবনের ছবিসহ তথ্য পাকশী রেলওয়ে কর্মকর্তাকে প্রেরণ করেছি। তাঁরা যদি আমাদের সহযোগিতা চান, তাহলে সেটা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত