Ajker Patrika

চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই পক্ষের বিরোধ, অর্ধশতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
Thumbnail image

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদী থেকে মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষ বিরোধ চলছে। এ নিয়ে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। আতঙ্ক সৃষ্টি করতে অর্ধশতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের নবাব জায়গীর পদ্মা নদীর ৮ নম্বর রক্ষা বাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পক্ষ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি হলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কয়েক দিন থেকেই পদ্মা নদী থেকে মাটি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এ নিয়ে অভিযোগ হয় ইসলামপুর পুলিশ ফাঁড়িতেও। পুলিশ উভয় পক্ষকে নিয়ে সমাধান করলেও আবারও মুখোমুখি হয় দুই পক্ষ। 

নবাব জায়গীর এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাড়িতেই বসে ছিলাম, সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিকট শব্দ পেলাম। টানা কয়েকবার এ শব্দ হলো। সঙ্গে সঙ্গেই এক ভাগনে ফোন দিয়ে বলল, মাটি কাটা নিয়ে দুই পক্ষের ঝামেলার সূত্র ধরে ককটেল বিস্ফোরণ হচ্ছে, আপনি নিরাপদ স্থানে সরে যান।’ 
 
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, ‘রাত থেকেই এলাকায় গুঞ্জন ছিল, সকালে ঝামেলা হবে। খবর পেয়েছিলাম, রাতেই ককটেল বানানো হচ্ছে, যা সকালে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। দুই পক্ষই হাঁসুয়া, চাকু, বোমা (ককটেল) নিয়ে মুখোমুখি হলেও সংঘর্ষ হয়নি বা কেউই হতাহত হয়নি। এ সময় আনুমানিক ৭০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আমাদের ধারণা আবারও যেকোনো মুহূর্তে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারে দুই পক্ষ।’ 

এ বিষয়ে নবাব জায়গীর এলাকার মো. মামুন ওরফে মামুন ডাক্তার বলেন, ‘নদী রক্ষা বাঁধের শেষে আমাদের পৈতৃক ১১ বিঘা জমি আছে। সেই ফসলি জমির মাটি কেটে নিতে চায় স্থানীয় আনারুল, দুরুল, স্বপন, শফিক, লুটু, শাহিনসহ তাদের সিন্ডিকেট চক্র। আমরা বাধা দিতে গেলে হুমকি দেয়। আজকে ৫০ টির বেশি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করে তারা। কয়েক দিন আগেও আমাদের মাটি কাটতে এলে ইসলামপুর পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দিলে থানা থেকে সমাধান করে দিলেও তা অমান্য করে তারা জোরপূর্বক মাটি কাটতে যায়।’ 

অভিযোগ অস্বীকার করে মো. লুটু ওরফে লুটু আলী বলেন, ‘আমরা নিজেদের জায়গায় পদ্মা নদীর মাটি কেটে বাঁধ সংস্কার কাজে দিচ্ছি। স্থানীয় আজিজুল ও টিপু চেয়ারম্যানের লোকজনের দুটি গ্রুপ একসঙ্গে হয়ে আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে সকালে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। ককটেলের শব্দ পেয়ে আমরা এলাকা থেকে পালিয়েছি। ঘটনার পর থেকেই মাটি কাটা বন্ধ রয়েছে।’ 

এ বিষয়ে কথা বলতে সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হবিবুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ময়েজ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পদ্মা নদীতে মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাটি আমিও শুনেছি। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানি না।’ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পদ্মা নদীতে মাটি কাটা নিয়ে বিরোধে ককটেল বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে এ ঘটনায় বেলা ৩টা পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত