Ajker Patrika

মেলার প্রচারে ঘাটতি, ভাড়ার টাকা উঠছে না ব্যবসায়ীদের

রাজশাহী প্রতিনিধি
মেলার প্রচারে ঘাটতি, ভাড়ার টাকা উঠছে না ব্যবসায়ীদের

গত ১৭ মার্চ থেকে রাজশাহীর কালেক্টরেট মাঠে শুরু হয়েছে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলা’। যা আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত চলবে। জেলা প্রশাসন আয়োজিত এই মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলছে। মেলায় স্টল সংখ্যা ৭০টি। 

সরেজমিনে দেখা হয়েছে, ক্রেতার অভাবে ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন। মেলায় বেচাবিক্রি তেমন নেই। মেলার প্রচারে ঘাটতি থাকায় মেলা জমেনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

মেলায় একটি স্টল দিয়েছেন নারী উদ্যোক্তা শেফালী বেগম। বেচাবিক্রি কেমন চলছে জানতে চাইলে শেফালী বেগম বলেন, ‘মেলার কোনো প্রচার-প্রচারণা নেই। তাই ক্রেতার সংকট। বেচাবিক্রি নেই। ১৩ দিনের এই মেলায় অংশ নিতে ১২ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে স্টল নিয়েছি। প্রতিদিনের হিসাবে ভাড়া ৯২৩ টাকা। মেলা শুরুর পর একদিনও ৯২৩ টাকার পণ্য বিক্রি হয়নি। এ অবস্থা শুধু আমার একার নয়, অন্য স্টলগুলোরও একই অবস্থা।’ 

শেফালী বেগমের স্টলের কর্মী কনা খাতুন জানান, গত ১৭ মার্চ মেলা শুরুর পর প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার বিক্রি হয়েছে। ২২ মার্চ কিছুই বিক্রি হয়নি। 

‘শৈল্পিক’ নামের একটি স্টলের সামনে গিয়ে বেচাবিক্রি কেমন জানতে চাইলে বিক্রয়কর্মী তরনী বলেন, ‘সারা দিনের মধ্যে আজ আপনিই প্রথম স্টলের সামনে এলেন। কিছু কিনলে আপনিই হবেন প্রথম ক্রেতা।’ 

তরনী আরও বলেন, ‘মেলার কোনো প্রচার-প্রচারণা নেই। কোথাও মাইকিং শুনছি না। মেলা করতে হবে তাই করা। আমাদের খুব খারাপ অবস্থা।’ 

‘রং এর মেলা’ নামের একটি স্টলে বসেছিলেন রিয়াজ উদ্দিন জুয়েল। এটি তাঁর বোন সানজিদা পারভীনের স্টল। রিয়াজ উদ্দিন জানান, মেলা শুরুর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তারা কিছুই বিক্রি করতে পারেননি। শুধু তার নিজের ভাগনি ৮০০ টাকা দামের একটি থ্রি-পিস নিয়ে গেছে। কেনা দামেই ভাগনিকে থ্রি-পিসটি দিয়েছেন তিনি। 

সানজিদা নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এ পর্যন্ত বিসমিল্লাহ বলতে পারিনি। টাকা দেব কোত্থেকে? রাজশাহীর মতো জায়গায় ১২ হাজার টাকা ভাড়া খুব বেশি হয়ে গেছে। মেলার সার্বিক পরিস্থিতি দেখে ভাড়া কমানো উচিত। তা না হলে আমাদের মতো ছোট নারী উদ্যোক্তাদের কোমর ভেঙে যাবে। মেলায় অংশ নেওয়ার আগ্রহ থাকবে না।’ 

মেলায় বেচাবিক্রি তেমন নেইএ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, ‘এই মেলার জন্য সরকারি কোনো অনুদান নেই। স্টলের আয় থেকেই ব্যয় করতে হচ্ছে। স্টল করা, প্যান্ডেল করা, লাইটিংসহ অন্যান্য নানা রকমের খরচ থাকে। তাও মেলায় যদি এমন মন্দাভাব থাকে তাহলে মেলা শেষে আমরা ব্যবসায়ীদের বিষয়টা দেখব। এখনো মেলার আরও কয়দিন আছে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়।’ 

মেলার প্রচার না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে আয়োজক কমিটির সদস্যসচিব আঞ্জুমান আরা লিপি বলেন, ‘প্রচার তো হচ্ছে। শহরে মাইকিং করছি। রাস্তায় আজ ব্যান্ড পার্টি নামাব। আর ব্যবসায়ী যারা তারা ব্যবসা মন্দার কথা একটু বলেই থাকেন।’ 

আঞ্জুমান আরা লিপি আরও বলেন, ‘মেলার স্টল থেকে ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা উঠবে। এই টাকা দিয়ে খরচ মেটানো হচ্ছে। জেলা প্রশাসক টাকা নেননি। মেলা শেষে যদি টাকা উদ্বৃত্ত থাকে সেক্ষেত্রে এই টাকা কী করা হবে তা কমিটিই সিদ্ধান্ত নেবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত