Ajker Patrika

নিয়মবহির্ভূতভাবে পেনশনের টাকা কাটার অভিযোগ হিসাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২১: ৩২
রাজশাহীতে অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষীদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহীতে অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষীদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিভাগীয় হিসাব ভবনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষীরা। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এই অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত পাঁচজন কারারক্ষী উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে নগরের লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা ও অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষী মো. রবিউল ইসলাম লেবু লিখিত বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ২৫ মে তিনি কারারক্ষী পদে যোগ দেন। ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পরও পদোন্নতি না পাওয়ায় ২০২১ সালের ১ আগস্ট স্বেচ্ছায় অবসর নেন। এরপর অবসরোত্তর ছুটি (পিআরএল) ভোগ শেষে পেনশনসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দিয়ে হয়রানির শিকার হন।

রবিউল ইসলাম অভিযোগ করেন, বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অডিটর মো. ওহেদুজ্জামান তাঁর সার্ভিস বই ও ইনক্রিমেন্টসংক্রান্ত কাগজ দেখে বলেন, ২০১১ সালে তিনি নাকি একটি ইনক্রিমেন্ট অতিরিক্ত পেয়েছেন, যা তিনি প্রাপ্য ছিলেন না। বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করলে অডিটর তাঁকে হয়রানি করতে শুরু করেন এবং পেনশন বিলম্বিত করার হুমকি দেন।

পরে ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অডিটরের বানানো একটি ফিক্সিশন নোটে স্বাক্ষর দিতে তাঁকে বাধ্য করা হয়। এরপর ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর রবিউল ইসলামের নামে ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৪ টাকার একটি চেক ইস্যু করা হয়, যা তিনি অগ্রণী ব্যাংকের নিজ হিসাবে জমা করেন।

রবিউল ইসলাম বলেন, অবসরোত্তর ছুটিকালীন নিয়মিত ইনক্রিমেন্টও দেওয়া হয়নি। তাঁর মূল বেতন ২১ হাজার ৩১০ টাকা নির্ধারণ করে মোট ২২ লাখ ৫ হাজার ৫৮৫ টাকার মধ্যে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৮০০ টাকা কেটে রাখা হয়। ফলে তাঁর মাসিক পেনশন ১০ হাজার ৭০ টাকার বদলে ৯ হাজার ৫৮৯ টাকা নির্ধারিত হয়, যা তিনি এখনো নিচ্ছেন।

অবসরপ্রাপ্ত এই কারারক্ষী দাবি করেন, হিসাব অফিসের কর্মকর্তাদের কারণে তিনি এখন পর্যন্ত মোট ২ লাখ ৮২ হাজার ৪১ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। দেশের অন্য কোনো জেলায় পেনশন থেকে এমনভাবে টাকা কেটে রাখার নজির নেই বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

রবিউল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি। তিনি অবিলম্বে তদন্ত করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে হেতেমখাঁ এলাকার বাসিন্দা ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধান কারারক্ষী সৌহিদুল ইসলাম, ভদ্রা এলাকার বাসিন্দা কারারক্ষী মালোয়ার হোসেন, নিউমার্কেট এলাকার বাসিন্দা কারারক্ষী জহুরুল ইসলাম ও কাটাখালী এলাকার বাসিন্দা কারারক্ষী জাহির আলী উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিভাগীয় হিসাব ভবনের নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফকিরহাটে বাসের চাপায় পথচারী শিশু নিহত

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাটে রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগামী বাসের চাপায় মো. সামিরুল ইসলাম (১১) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। খুলনা-মোংলা মহাসড়কের কাটাখালী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সামিরুল ইসলাম কুমিল্লার হোমনা এলাকার মো. সাইফুল ইসলামের ছেলে। সে তার বাবার সঙ্গে কাটাখালীতে একটি ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপে কাজ করত। সেই সুবাদে তারা কাটাখালী এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, রোববার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সামিরুল ইসলাম বাসা থেকে কাজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। কাটাখালী এলাকায় এসে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী সেতু পরিবহন নামের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উত্তম পাল জানান, শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। 

কাটাখালী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাফর আহম্মেদ বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক ও সহযোগী পালিয়ে গেছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাগরে বিকল ট্রলার নিয়ে ভাসছিলেন ১৩ জেলে, উদ্ধার করল নৌবাহিনী

কক্সবাজার প্রতিনিধি
উদ্ধার করা ১৩ জেলে। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার করা ১৩ জেলে। ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূলে বিকল হয়ে ভাসতে থাকা একটি ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী। আজ রোববার সকালে নৌবাহিনীর এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল শনিবার বিকেলে বঙ্গোপসাগরে টহলের সময় নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা শহীদ মহিবুল্লাহ’ একটি মাছ ধরার ট্রলার ভাসতে দেখে উদ্ধারে নামে। কুতুবদিয়া দ্বীপের লাইট হাউস থেকে প্রায় ২০ মাইল দূরে গভীর সমুদ্রে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়। ট্রলারে থাকা জেলেরা নৌবাহিনীর জাহাজ দেখতে পেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আলো ও হাত দিয়ে সংকেত প্রদর্শন করেন। এ সময় নৌবাহিনীর জাহাজটি সংকেত দেখে বিপদগ্রস্ত জেলে ও ট্রলারের কাছে ছুটে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে নৌবাহিনীর সদস্যরা ট্রলারসহ জেলেদের উদ্ধার করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উদ্ধারের পরপরই জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি দেওয়া হয়। পরে জেলেদের ও ট্রলারটি নিরাপদে তীরে এনে পরিবার ও মালিকপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জেলেরা জানিয়েছেন, ৬ নভেম্বর থেকে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে মাঝসমুদ্রে ভাসতে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাটোরে পদ্মার চরে বিশেষ অভিযানে আটক ২০, বিপুল দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

নাটোর প্রতিনিধি 
আটক ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চল—চর জাজিরা, চর লালপুর এবং চর দিয়ার বাহাদুরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ সাঁড়াশি অভিযানে ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে দুটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

শনিবার দিবাগত রাত থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ, র‍্যাব, ডিবি এবং এপিবিএনের চার শতাধিক সদস্য যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করেন।

আটক ২০ জনের মধ্যে দুজন হ্যাকার, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং ছয়টি ওয়ারেন্টের আসামি রয়েছেন। এ ছাড়াও আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হত্যা মামলার আসামি এবং দুজন চিহ্নিত মাদক কারবারি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম জানান, চর দিয়ার বাহাদুরপুরের বালুমহালের ছাউনি থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র (দেশীয় তৈরি ওয়ান-শুটারগান ও একটি রিভলবার) উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়াও উদ্ধার হওয়া দেশীয় অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ছয়টি বড় ড্যাগার, ২২টি হাঁসুয়া, চারটি চাকু ও ছোরা, দুটি চাপাতি।

উদ্ধার করা অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
উদ্ধার করা অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

অভিযানস্থল থেকে একটি টিউবওয়েল এবং অনেকগুলো বালু বিক্রির রসিদ জব্দ করা হয়।

নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, লালপুর উপজেলার চরাঞ্চলে এবং পদ্মা নদীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশের এই বিশেষ অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎বিআরটি প্রকল্পের সেতুর নিচে যুবকের মরদেহ

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের টঙ্গীতে উড়ালসেতুর নিচে অজ্ঞাতনামা (৩০) এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ‎রোববার সকাল ৯টার দিকে বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়ালসেতুর টঙ্গী স্টেশন রোড অংশের নিচে মরদেহটির সন্ধান মেলে।

‎থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন।

‎স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রোববার সকালে স্থানীয় লোকজন বিআরটি প্রকল্পের উড়ালসেতুর ৬৮ নম্বর পিলারের পাশে ওই যুবকের মরদেহটি দেখতে পায়। পুলিশকে খবর পাঠালে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এই যুবককে দুর্বৃত্তরা অন্য কোথাও হত্যা করে মরদেহটি সেতুর নিচে ফেলে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

‎টঙ্গী পশ্চিম থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদের ভাষ্য, যুবকের পরিচয় শনাক্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যদের খবর পাঠানো হয়েছে। আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত