Ajker Patrika

ব্যস্ত সড়কের কালভার্টে ৩ সুতা রড, অসন্তোষ

  • ব্যস্ত সড়কের এই কালভার্ট কত দিন টিকবে, তা নিয়ে স্থানীয়দের উদ্বেগ।
  • এলজিইডিতে অভিযোগ করা হলে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
  • ঠিকাদারের দাবি, শিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৫, ১০: ৪৯
নিম্নমানের রড দিয়ে নির্মাণাধীন কালভার্ট। সম্প্রতি রাজশাহীর পবা উপজেলার লিলি সিনেমা হলের মোড়-দারুশা সড়কের ডাঙ্গেরহাট এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিম্নমানের রড দিয়ে নির্মাণাধীন কালভার্ট। সম্প্রতি রাজশাহীর পবা উপজেলার লিলি সিনেমা হলের মোড়-দারুশা সড়কের ডাঙ্গেরহাট এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর পবা উপজেলায় অতি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ের কালভার্টটি নির্মাণে ৩ সুতা বা ১০ মিলিমিটার পুরুত্বের রড ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় ব্যস্ত সড়কের এই কালভার্ট কত দিন টিকবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা। তাঁরা বলছেন, বিষয়টি জানানোর পরও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঠিকাদার।

স্থানীয়রা জানান, কালভার্টটি নির্মাণ করা হচ্ছে রাজশাহীর লিলি সিনেমা হলের মোড়-দারুশা সড়কের ডাঙ্গেরহাট এলাকায়। এই সড়ক পবা উপজেলার বড় একটি অংশের সংযোগ স্থাপন করেছে। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিনই ভারী যান চলে। ভারী যানবাহনের চাপে চিকন রডের এই কালভার্ট বেশি দিন স্থায়ী হবে না।

জানা গেছে, প্রায় পাঁচ মাস ধরে এই কালভার্টের নির্মাণ চলছে। এতে ১০ মিলি রড ব্যবহার করতে দেখে স্থানীয়রা আপত্তি জানান। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন পাত্তা দেননি। এলজিইডিতে অভিযোগ করা হলে কর্মকর্তারা আসেন। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেননি।

শ্রমিক নবীর আলী জানান, ১০ মিলির পাশাপাশি ১২ ও ১৬ মিলি রডও ব্যবহার করা হচ্ছে। শ্রমিকদের সরদার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকার লোকজন একটু পরপর এসে অভিযোগ করছে। মনে হচ্ছে, এখানে কাজ করতে এসে পাপ করে ফেলেছি। আমরা লেবার মানুষ। আমরা কী করতে পারি?’

কালভার্টটির পাশেই ফার্নিচারের দোকানে কাজ করছিলেন ফয়সাল হোসেন। তিনি বলেন, ৩ সুতা রড দিয়ে ব্রিজ করছে। এ রকম ব্যস্ত রাস্তার ওপর এই চিকন রডের ব্রিজ তো টিকবে না। এলাকার লোকজনের খুব আপত্তি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক রেজাউল ইসলাম রনি। তাঁর দাবি, শিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। এলাকার লোকজন না বুঝেই অভিযোগ করে যাচ্ছেন।

কাজের সাইটে সব সময় এলজিইডির পবা উপজেলার উপসহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ আহমেদের উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাঁকে সেখানে পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে পবা উপজেলা প্রকৌশলী মকবুল হোসেন বলেন, ‘কেন সে সাইটে যায়নি, সেটা খোঁজ নেব।’ নিম্নমানের কাজের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ আমিও পেয়েছিলাম।’

এলজিইডির রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে আমিও কাজ দেখেছি।

ডিজাইনে ৩ সুতার রডের ব্যবহার রাখা হয়েছে। ঢাকা থেকে এই কাজের ড্রয়িং করেছে এলজিইডির ডিজাইন শাখা। তাই এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই।’

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী (সেতু ডিজাইন) ভাস্কর কান্তি চৌধুরী বলেন, ‘সেতু কিংবা কালভার্টে রেলিংয়ে লম্বালম্বিভাবে ১০ মিলির রড ব্যবহার করা যায়। কিন্তু মূল কাঠামোতে আড়াআড়িভাবে ১৬ মিলির কম রড ব্যবহার করা হয় না। বাস্তবে কী হচ্ছে, না দেখে বলতে পারব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত