Ajker Patrika

চারঘাটে চাল-আটার চেয়ে ভুসির দাম বেশি, বিপাকে খামারিরা

সনি আজাদ, চারঘাট (রাজশাহী) 
চারঘাটে চাল-আটার চেয়ে ভুসির দাম বেশি, বিপাকে খামারিরা

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় চাল ও আটাকে ছাড়িয়ে গেছে ভুসির দাম। তবে দুধের দাম বাড়েনি। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় খামারিরা। তারা বলছেন, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে তারা নিঃস্ব হয়ে পড়বেন।

আজ মঙ্গলবার চারঘাটের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের ভুসি, চিটা, ভুট্টা ভাঙা, ফিড, খৈল, খড় ও সবুজ ঘাসের দাম বেড়ে গেছে। প্রতি বস্তা ভুসির দাম ১৮০-২৫০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে উপজেলা পৌর শহরের বাজারে প্রতি কেজি ভুসি ৫৮-৬২ টাকা দামে বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ চিকন চাল প্রতি কেজি ৪৮-৫৬ টাকা এবং প্রতি কেজি আটার প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৪৭-৫০ টাকায়।

উপজেলা সদরের পৌর মার্কেটের গোখাদ্য ব্যবসায়ী ইনারুল ইসলাম বলেন, ভুসিসহ সব ধরনের গোখাদ্যের দাম বেড়েছে। ব্র্যান্ড ভেদে প্রতি কেজি ভুসি ৫৮-৬২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৮-৫২ টাকা কেজি এবং এক মাস আগে ছিল ৩৯-৪৩ টাকা কেজি। এক সপ্তাহেই বস্তা প্রতি বেড়েছে ২০০-২৫০ টাকা।

চাল ব্যবসায়ী রুহুল আমিন বলেন, প্রতি কেজি চিকন চাল প্রকার ভেদে ৪৮-৫৩ টাকা এবং মোটা চাল ৩৮-৪৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

মুদি দোকানি মহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে প্যাকেটের আটা প্রতি কেজি ৫০ টাকা এবং খোলা আটা ৪৩-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

সরেজমিনে আজ মঙ্গলবার সকালে পৌর শহরের কয়েকটি ফিড ও গোখাদ্যের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে গোখাদ্যের দোকানগুলোতে তেমন ক্রেতা নেই। দোকানিরা বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন।

এ সময় ফ্রেস ফিড দোকানের মালিক আব্দুল মতিন বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে ভুসি ও ফিডের দাম বেড়েছে। কিন্তু দুধের দাম কম। এ কারণে খামারিরা প্রয়োজনের চেয়ে অনেক কম গোখাদ্য কিনছেন। কয়েক দিন থেকে সারা দিনে দুই-তিন হাজার টাকার মালামাল বিক্রি করা যাচ্ছে। অথচ আগে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০-১৫ হাজার টাকারও বেশি বেচাকেনা হতো।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে চারঘাট উপজেলায় দুগ্ধ ও মোটাতাজাকরণ মিলে প্রায় ৮৮৩টি গরুর খামার ও ২ হাজার ৫২০টি ছাগলের খামার রয়েছে। অধিকাংশ খামারি বাজার থেকে ভুসি, চিটা, ভুট্টা ভাঙা, ফিড, খৈল, খড়সহ নানা রকম দানাদার গোখাদ্য কিনে গরু ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন।

উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের গবাদিপশু খামারি তোহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সামনে কোরবানির ঈদ, আর এখন প্রতি সপ্তাহে গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বাড়ছে। ঈদকে কেন্দ্র করে গরু-ছাগল পালন করছিলাম। কিন্তু গোখাদ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে মহা বিপাকে পড়েছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাজার মনিটরিং করতে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

সদর ইউনিয়নের ডেইরি খামারি আওলাদ হোসেন বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে খৈল ভুসির দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। অথচ দুধের দাম এক টাকাও বাড়েনি। এ অবস্থা থাকলে ঘরের টাকা এনে গাভিকে খাওয়াতে হবে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. নাজনিন নাহার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খামারিসহ প্রান্তিক কৃষকদের বলব, তাঁরা যেন শুধুমাত্র খৈল, ভুসি, দানাদার খাদ্যের প্রতি নির্ভরশীল না হয়ে কাঁচা ঘাস চাষ করে। এ ছাড়া তাঁরা যদি ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র এবং ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক ইত্যাদি প্রযুক্তি গ্রহণ করে, তাহলে দানাদারসহ অন্যান্য গোখাদ্যের চাহিদা পূরণ হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত