Ajker Patrika

ডিজেলের দাম বাড়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা

নলডাঙ্গা (নাটোর) প্রতিনিধি
ডিজেলের দাম বাড়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা

নাটোরের নলডাঙ্গার হালতি বিলের কৃষকেরা ডিজেল তেলের দাম বৃদ্ধিতে উৎপাদন খরচ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন। ডিজেল তেল লিটারে ১৫ টাকা দাম বৃদ্ধিতে বোরো ও রবি শস্য রোপণের আমেজে ভাটা পড়েছে। এতে ডিজেল চালিত সেচ পাম্পের খরচসহ অন্যান্য খরচ মিলে প্রতি বিঘায় ৩-৪ হাজার টাকা বাড়তি গুনতে হবে। এ জন্য তাঁরা ডিজেল চালিত সেচ পাম্প নির্ভর কৃষকদের ভর্তুকি চান এবং প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, নলডাঙ্গার হালতি বিলসহ আশপাশের মাঠে রোপা-আমন ধান ঘরে তুলবেন। তাই কৃষকের ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ। তবে ডিজেল তেলের দাম বাড়ায় সেই আমেজের গুঁড়েবালি ঘটেছে। এ জন্য বোরো আবাদ কমিয়ে অন্য আবাদ করার চিন্তা করছেন অনেক কৃষক। ডিজেল তেলের দাম কমানো সম্ভব না হলে লিটারে ১৫ টাকা ভর্তুকির দাবি জানান কৃষকেরা। 

সোনাপাতিল গ্রামের কৃষক আসাদ আলী বলেন, আমনের আবাদ শেষে বোরো আর রবি শস্যের জন্য মাঠে জমি প্রস্তুত করে পেঁয়াজ-রসুনসহ বিভিন্ন ফসল রোপণের কাজ শুরু করেছি। আর কিছুদিন পরে শুরু হবে কৃষকদের প্রধান ফসল বোরো ধানের চাষ। সে জন্য ব্যবহার করতে হবে সেচ, পাম্প ও পাওয়ার টিলার। কিন্তু হঠাৎ করেই ডিজেলের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

আরেক প্রান্তিক কৃষক দেলবর আলী বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধিতে ধানের চাষ করাই দুষ্কর হয়ে যাবে। হালচাষের খরচ বেড়ে গেছে। এতে সেচের খরচ বেড়ে যাবে। ফলে সব চাপ এসে পড়বে কৃষকদের ওপর।

পাওয়া টিলার চালক মিলন বলেন, আগে ৩০০ টাকায় প্রতি বিঘা জমি চাষ দিতাম। এখন ডিজেলের দাম বাড়ায় ৩৫০ টাকায় চাষ দিচ্ছি। 

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন (ক্যাব) নাটোর জেলা সভাপতি শামীমা লাইজু বলেন, বোরো ধান চাষ অধিকাংশই সেচ নির্ভর। শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি পানি সেচ দেওয়া হয় ডিজেল দিয়ে। কাজেই এই পরিস্থিতিতে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি আমাদের কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাই কৃষকদের কথা ভেবে জ্বালানি উন্নয়ন তহবিলের জমাকৃত অর্থ থেকে ভর্তুকির মাধ্যমে অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধিকে সমন্বয় করা গেলে কৃষকেরা উপকৃত হবে। 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফৌজিয়া ফেরদৌস বলেন, হালতি বিলে মোট ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে রবি ও বোরো আবাদ করা হয়। এর মধ্যে বোরো ধান ৮ হাজার ৮০০ হেক্টর, পেঁয়াজ রসুন ৩ হাজার ৬১০ হেক্টর, ভুট্টা ১ হাজার ৮২০ হেক্টর ও গম ৮৫০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব আবাদে সেচ মৌসুমে উপজেলায় ডিজেলের চাহিদা ৪ হাজার ২০০ ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন, ৮০০টি পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর ১৫ টির গড়ে প্রতিদিন ২৩ টন। এ হিসেব অনুযায়ী প্রতিদিন ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা কৃষকদের খরচ হবে। বর্তমান বাড়তি দামের জন্য কৃষকদের আনুমানিক প্রতিদিন গড়ে ৩ লাখ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত