Ajker Patrika

ফেরিওয়ালার কাছে কেজি দরে সরকারি বই বেচে দিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি 
ফেরিওয়ালার বস্তায় পাওয়া স্কুলের সরকারি বই। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফেরিওয়ালার বস্তায় পাওয়া স্কুলের সরকারি বই। ছবি: আজকের পত্রিকা

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে একটি প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সরকারি বই এক ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চার মণ বইসহ এক ফেরিওয়ালাকে আটক করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানতে পারেন, বইগুলো কেজি দরে বিক্রি করেছেন উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের কোলা গণিপুর গ্রামের শ্রীকৃষ্টপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শওকত আনোয়ার।

উপজেলার কোলা গণিপুর গ্রামের ১০ থেকে ১৫ জন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, আজ বেলা ১১টার দিকে একটি ভ্যানে কয়েকটি বস্তা নিয়ে যাচ্ছিলেন এক ফেরিওয়ালা। ওই সময় স্থানীয় লোকদের সন্দেহ হলে তাঁকে ভ্যানসহ আটক করা হয়। বস্তাগুলো খুলে শ্রীকৃষ্টপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সরকারি পুরোনো বই, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের নতুন কিছু বই এবং শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে ওই ফেরিওয়ালা জানান, শ্রীকৃষ্টপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শওকত আনোয়ারের কাছ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে চার মণ বই ও এক মণ পরীক্ষার খাতা কিনেছেন তিনি। এরপর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর স্থানীয় লোকজনদের চাপের মুখে ওই ফেরিওয়ালার কাছ থেকে বিক্রি করা বই ও খাতা ফেরত নিয়ে যান শওকত আনোয়ার।

ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর শ্রেণি পরিবর্তনের সময় তাদের বই ফেরত নেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় বাসিন্দা নূরনবী বলেন, ‘আমাদের গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুরোনো সরকারি কয়েক বস্তা বই, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতাসহ একটি ভ্যান আটক করা হয়েছে। সবাই দেখি বইগুলো সব নতুন। আমাদের প্রশ্ন, বইগুলো কি তাহলে সেই সময় বিতরণ করা হয়নি? নাকি পরের বছর বিক্রির জন্য জমা করে রেখেছিলেন প্রধান শিক্ষক।’

ভ্যানে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ফেরি করে ভাঙারি জিনিসপত্র কেনেন জালাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার কোনো দোষ নেই। আমি গ্রামের মধ্যে ফেরি করে ভাঙারি জিনিসপত্র কেনার সময় প্রধান শিক্ষক আমাকে ডেকে বইগুলো ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। তাই আমি সেগুলো ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিলাম।’

সরকারি বই নিয়ম না মেনে বিক্রির কথা স্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শওকত আনোয়ার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বইগুলো পড়েছিল। ২০২৪ সাল ও তার আগের বই ও খাতা। আমি ভুল করে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই বইগুলো বিক্রি করেছিলাম। যা নিয়মবহির্ভূত। বিগত বছরেও বই বিক্রি করেছিলাম। সেই বই বিক্রির টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠের এক পাশে বাগান বানিয়েছিলাম। আমি ভুল বুঝতে পেরে বিক্রিত বই ওই ফেরিওয়ালার কাছ থেকে ফেরত নিয়ে বিদ্যালয়ে রেখেছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দীকুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে সরকারি বই ফেরত নেওয়া বা বিক্রয়ের কোনো বিধান নেই। ঘটনাটি তিনি আমাদের কাউকে না জানিয়েই ঘটিয়েছেন। এবিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্বে ১৮৬ দেশের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ মাত্র একটি: গবেষণা

একচেটিয়া ভাতা লেনদেনের সুবিধা হারাচ্ছে ‘নগদ’

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধান বিচারপতি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগের নাটক সাজানো হয়: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

আপনার ছেলেমানুষি মানায় না: প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে দুদু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত