Ajker Patrika

শিবগঞ্জে ক্রেতা না থাকায় হাটে মুলা ফেলে রেখে যাচ্ছে কৃষক

বগুড়া প্রতিনিধি
শিবগঞ্জে ক্রেতা না থাকায় হাটে মুলা ফেলে রেখে যাচ্ছে কৃষক

বগুড়ার শিবগঞ্জে ক্রেতা না থাকায় সবজির হাটে মুলা রেখে চলে যাচ্ছে কৃষক। অথচ মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরত্বে বগুড়া শহরে মুলা বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা কেজি দরে। আর রাজধানী ঢাকায় মুলার দাম তো আরও কয়েক গুণ বেশি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে মহাস্থান হাটে ৭০-৮০ টাকা মণ দরে মুলা বিক্রি হলেও দুপুর ১২টার পর মুলা কেনার কোনো ক্রেতা ছিল না হাটে। তাই বাধ্য হয়ে অনেকেই আড়তে মুলা ফেলে রেখে চলে গেছেন। বাজারের আড়তদার আয়নাল হক এই কথা জানিয়েছেন।

শিবগঞ্জ উপজেলার লস্করপুর গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম মহাস্থান সবজির হাটে ১৫ মণ মুলা ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেন। তিনি বলেন, মুলা জমি থেকে উত্তোলন এবং পানি দিয়ে পরিষ্কার খরচ ৩০০ টাকা। আর ভ্যান ভাড়া বাবদ ৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। ১৫ মণ মুলা বিক্রি করে তাঁর পকেটে উঠেছে ৪০০ টাকা।

হঠাৎ মুলার দরপতনের কারণ হিসেবে আড়তদার আয়নাল হক হরতাল-অবরোধকে দায়ী করলেও কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বলছে হাটের মধ্যস্বত্বভোগীরা (ফড়িয়া) কারসাজি করে মুলার দর পতন ঘটিয়েছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বগুড়ার মাঠ ও বাজার পরিদর্শক আবু তাহের বলেন, আজ বৃহস্পতিবার বগুড়া শহরের পাইকারি সবজির বাজার রাজাবাজারে মুলা বিক্রি হয়েছে ৮ থেকে ১২ টাকা কেজি। আর শহরের খুচরা বাজারে মুলা বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে।

শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর গ্রামের কৃষক মিল্লাত হোসেন বৃহস্পতিবার সকালে মহাস্থান হাটে ৬০ মণ মুলা বিক্রি করেন ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। তিনি বলেন, চার বিঘা জমিতে মুলা চাষ করতে খরচ হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত মুলা বিক্রি হয়েছে ৩২ হাজার টাকা। এখনো জমিতে অনেক মুলা রয়েছে। যেভাবে দাম কমেছে, হাটে বিক্রি করতে আনলে ভ্যান ভাড়াই উঠবে না।

আড়তদার আয়নাল হক বলেন, ‘সকালে ১০০ টাকা মণ দরে মুলা কিনেছি। বাজারে আমদানি বেশি হওয়ায় দাম কমতে শুরু করে। বেলা ১২টার পর কোন ব্যাপারী মুলা কিনতে চাচ্ছেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, হরতাল অবরোধে ট্রাক কম, এ কারণে ভাড়া দ্বিগুণ। তিনি বলেন মুলা কেনার ব্যাপারী না থাকায় কৃষকদের অনেকেই আড়তে মুলা ফেলে রেখে চলে গেছেন। অনেকে আবার ১০-১২ মণ মুলা আড়তে রেখে ভ্যান ভাড়া ৪-৫ শ টাকা নিয়ে চলে গেছেন।’

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বগুড়ার মাঠ ও বাজার পরিদর্শক আবু তাহের বলেন, মুলার দর পতনের পেছনে হাটের কিছু মধ্যস্বত্বভোগীর (ফড়িয়া) কারসাজি রয়েছে। এ সময় কৃষক জমিতে আলু রোপণের জন্য মুলা দ্রুত বিক্রি করছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। আড়তে ফেলে রেখে যাওয়ার পর সেই মুলা বগুড়া শহর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশি দামে বিক্রি করছে তারা। অথচ কৃষককে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত