Ajker Patrika

দরপত্র জমা পড়েনি, ১২ হাটে খাস আদায়

  • উপজেলার ১২টি হাটবাজার খাস আদায়ে উন্মুক্ত ডাক হয়েছে।
  • এতে গত বছরের গড় তুলনায় ৭৯ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব কম।
শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৯: ৪৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় দরপত্র জমা না পড়ায় বাংলা ১৪৩২ সালের হাটবাজার ইজারায় ১২টি হাটবাজার খাস আদায়ে উন্মুক্ত ডাক হয়েছে। গত মঙ্গলবার উপজেলা প্রশাসনের হলরুমে খাস আদায়ে এ ডাক অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত তিন বছরে হাটবাজার ইজারার গড় টাকার ৬ শতাংশ বৃদ্ধি ধরে সম্প্রতি নিলাম বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ইজারা দরপত্র আহ্বান করে উপজেলা প্রশাসন। তবে ১২টি হাটের কোনো দরপত্র তখন জমা হয়নি। পরে শৃঙ্খলভাবে রাজস্ব আদায়ে খাস ডাকের সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা প্রশাসন। তবে এতে গত বছরের গড় তুলনায় রাজস্ব কম হয়েছে ৭৯ লাখ টাকার বেশি।

জানা গেছে, দরপত্রে হাটবাজারের দর বেশি ধরা হয়েছে দাবি করে কেউ জমা দেননি। পরে খাস ডাকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিকে হাটের ইজারামূল্য কমায় খাজনা কমবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কৃষক এবং হাটের ব্যাপারীরা।

শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় এবং উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর আড়িয়া ইউনিয়নের জামুন্না হাট ইজারায় সরকার পেয়েছিল ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪৩ ৫ টাকা, এবার ওই হাটের খাস আদায়ে ডাক হয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আড়িয়া বাজার থেকে গত বছর সরকার পেয়েছে ১৮ লাখ ৩১ হাজার ৪৮৭ ও ৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই দুটি ডাক পেয়েছেন বিএনপির নেতা শাহাদত হোসেন।

খড়না ইউনিয়নের টেংগামাগুর হাট থেকে গত বছর সরকার পায় ২৩ লাখ ৯১ হাজার ৭০৮, এবার ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৫০০ টাকায় খাস ডাক পেয়েছেন আল আমিন বাবু। খরনা হাট থেকে গত বছর পাওয়া গেছে ১২ লাখ ৩৩ হাজার ২১১, এবার এনামুল নামের বিএনপির নেতা খাস ডাক নিয়েছেন ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকায়। বীরগ্রাম হাট গত বছর ছিল ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৩৫, এবার ৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকায়। দাড়িগাছা হাট গত বছর ছিল ৭ লাখ ৫৪ হাজার ৭৭৩, এবার ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকায়।

এ ছাড়া গোহাইল ইউনিয়নের আতাইল হাট গত বছর ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৭৯৪, এবার ১৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। গোহাইল হাট গত বছর ২৮ লাখ ৫৫ হাজার ৬৮৩, এবার ১৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। রুপিহার হাট গত বছর ৪ লাখ ১৪ হাজার ২৪১, এবার ২ লাখ ৩ হাজার টাকা।

চোপীনগর ইউনিয়নের শাহনগর হাট গত বছর ২ লাখ ৪১ হাজার ৬২৮, এবার ১ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ টাকা। কামারপাড়া হাট গত বছর ১২ লাখ ৫৯ হাজার ৭১৫, এবার ৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা এবং আমরুল ইউনিয়নের নগরহাট থেকে গত বছর আদায় হয় ৬ লাখ ১২ হাজার ২৮৮, এবার ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকায় ডাক হয়েছে।

হিসাব করে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবার ওই হাটবাজার থেকে রাজস্ব কম আদায় হয়েছে ৭৯ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৬ টাকা।

চোপীনগর ইউনিয়নের সবজি ব্যাপারী আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে আজকের পত্রিকাকে বলেন, হাটের ইজারামূল্য কম হলে খাজনাও কম হওয়ার কথা। কিন্তু খাজনা যদি আগের মতোই বেশি নেওয়া হয়, তাহলে পণ্যের মূল্যও বেড়ে যাবে।

উন্মুক্ত ডাকে হাট পেয়েছেন এমন একজন ফারুক আহম্মেদ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উচ্চমূল্যের কারণে হাটের ইজারায় অংশ নেই নাই। এবার কম টাকায় বীরগ্রাম হাট পেয়ে আমি খুশি হয়েছি।’

শাজাহানপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল নাইম আজকের পত্রিকাকে বলেন, হাট-বাজার ইজারা-সংক্রান্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল কিন্তু ১২টি হাট-বাজারের কোনো দরপত্র তখন জমা পড়েনি। তিনি বলেন, ‘হাট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, সরকারনির্ধারিত ইজারামূল্য বেশি হওয়ায় লোকসানের ভয়ে কেউ এই হাটগুলো নিতে চাচ্ছেন না। পরে প্রত্যেক ইউনিয়নের নায়েবদের নিয়ে কমিটি করে খাস আদায় করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল নাইম আরও বলেন, সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে খাস আদায়ে উন্মুক্ত ডাক হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত