Ajker Patrika

জেসমিনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পুলিশে হস্তান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
জেসমিনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পুলিশে হস্তান্তর

র‍্যাবের হেফাজতে মারা যাওয়া নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের (৩৮) ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ফরেনসিক বিভাগ প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তরও করেছে। কিন্তু ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে জেসমিনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে কি উঠে এসেছে তা নিয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। 

জেসমিনের মৃত্যুর পর ২৫ মার্চ রামেকের মর্গে ৩ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড মরদেহের ময়নাতদন্ত করে। এই বোর্ডের প্রধান ছিলেন রামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন। আজ রোববার রাতে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত হয়েছে। আজ অফিস সময়ের মধ্যেই পুলিশকে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।’ 

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে জেসমিনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে কি মতামত দেওয়া হয়েছে তা জানতে চাইলে ডা. কফিল উদ্দিন বলেন, ‘এটা একটা সিরিয়াস ইস্যু। এটা নিয়ে আমি সরাসরি কিছু বলতে পারব না। আপনারা যদি কোনোভাবে প্রতিবেদন পান, তারপর কোনো বিষয় বুঝতে না পারলে আমি বুঝিয়ে দেব। এখন এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’ 

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুভাষ চন্দ্র বর্মন প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার কথাই অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি রিপোর্ট পাইনি। আমি কিছু বলতে পারব না।’ এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। 

রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে শুনলাম যে রিপোর্ট এসেছে। এখন কী রিপোর্ট এসেছে সেটা আমি জিজ্ঞেস করিনি। রিপোর্ট কোর্টে গেলে সবাই জানতে পারবে।’

রাজশাহী নগর পুলিশের কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, ‘জেসমিনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হয়েছে কি না আমি জানি না। এটা তো আমার পর্যায়ে আসার কথাও না।’ তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গেই কথা বলার পরামর্শ দেন। 

র‍্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল গত ২২ মার্চ সকালে নওগাঁ থেকে জেসমিনকে আটক করে। স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁকে নিয়েই র‍্যাব এ অভিযান চালায়। এনামুল হকের অভিযোগ, জেসমিন ও আল-আমিন নামের এক ব্যক্তি তাঁর ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন বিভিন্নজনকে। এভাবে তারা প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। 

এদিকে আটকের পর ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসমিন মারা যান। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। জেসমিনের মৃত্যুর পরদিন ২৫ মার্চ রামেকের মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জেসমিনের মরদেহ গোসল করানো হয় রাজশাহীতেই। 

পরে কাফন পরানো মরদেহ কফিনে করে নওগাঁয় নিয়ে যায় র‍্যাব। সেখানে র‍্যাবের উপস্থিতিতেই মরদেহ দাফন করেন স্বজনেরা। 

এর আগে মৃত্যুর দিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একজন নারী সহকারী কমিশনার জেসমিনের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। কিন্তু জেসমিনের শারীরিক অবস্থার অনেক কিছুই সুরতহাল প্রতিবেদনে উঠে আসেনি। ময়নাতদন্তের সময় মর্গে তা খেয়াল করেন সেদিন দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. তাজনীন জাহান। তারপর তিনিই বিভাগীয় প্রধানকে ডাকেন। তারপর বিভাগীয় প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন আরেক প্রভাষককে নিয়ে মর্গে যান এবং বোর্ড গঠন করে ময়নাতদন্ত করেন। এরপর ময়নাতদন্ত করা হয়। 

জেসমিনের মৃত্যুর পর রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগ্ম সচিব এনামুল হকের করা একটি মামলার কথা জানা যায়, যেটি রেকর্ডের সময় ২৩ মার্চ। জেসমিন ও তাঁর কথিত সহযোগী আল-আমিনকে এতে আসামি করা হয়। আল-আমিনকে ২৬ মার্চ ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তিনি একজন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত