Ajker Patrika

২ দিনের মাথায় শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর আবারও হামলা

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯: ৪০
২ দিনের মাথায় শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর আবারও হামলা

বগুড়ার শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর দুই দিনের মাথায় আবারও হামলা হয়েছে। এতে উজ্জ্বল সিং (৩৫) ও সুজন সিং (২৮) নামের দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল গ্রামের ওয়েস্টার্ন অয়েল মিলের সামনে এই হামলা হয়। হামলাকারীরা স্থানীয় জোতদারদের লোক বলে অভিযোগ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর। তবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকেরাই আগে হামলা করেছে বলে জোতদারদের পাল্টা অভিযোগ।

স্থানীয়রা জানান, উজ্জ্বল সিং ও সুজন সিং ওয়েস্টার্ন অয়েল মিলের শ্রমিক। আজ বুধবার সকালে তাঁরা কাজে যোগ দিতে গেলে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া ২০-২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল তাঁদের ওপর লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে তাঁরা গুরুতর আহত হন। পরে তাঁদের শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

দুজনকে মারধরের পর জোতদারেরা এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে নৃগোষ্ঠীদের বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। 

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী তূরী সিংয়ের সদস্য জয়দেব কুমার জয় আজকের পত্রিকাকে বলেন, `দুজনকে আহত করার পর জোতদারেরা আবার আমাদের ওপর হামলার জন্য সংঘবদ্ধ হয়। এ জন্য তারা আম্বইল ও গড়তা মসজিদের মাইক ঘোষণা দেয়। এরপরে তারা ৩০০-৪০০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের এলাকায় ছুটে আসে। আমরা প্রাণভয়ে পাশের কেশবপুর গ্রামে আশ্রয় নেই। এ সময় তারা আমাদের বেশ কিছু ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে।' 

জোতদারদের সমর্থক সুজন আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, `আমাদের ফারুক হোসেন নামের এক প্রতিবন্ধী যুবক ওয়েস্টার্ন অয়েল মিলের সামনে গেলে উজ্জ্বল ও সুজন তাঁকে পিটিয়ে আহত করে। পরে এলাকার কয়েকজন তাদের মারধর করেছে।'

এ বিষয়ে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের বগুড়া জেলার সভাপতি সন্তোষ সিং বলেন, `ফারুকের ওপর কেউ হামলা করেনি। সে মিলের ট্রাকের ধাক্কায় আহত হয়েছে। এটাকে অজুহাত করে জোতদার ফারুক ও মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করেছে।'

তবে হামলার কথা অস্বীকার করেছেন ফারুক হোসেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, `আদিবাসীরা ফারুকের ওপর হামলা করলে স্থানীয়রাও তাদের মারধর করেছে। আমি শুধু দূর থেকে দেখেছি।'

এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান খোন্দকার বলেন, `খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমিও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে এবং সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'

জানতে চাইলে শেরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তাদের শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এলাকার আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নিতে শেরপুর থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'

উল্লেখ্য, আবাদি জমির দখল নিয়ে শেরপুরে গত রোববার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সঙ্গে জোতদারদের সংঘর্ষ হয়। এদিন ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল গ্রামে সকাল নয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে নারী, শিশুসহ উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও জোতদারদের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা বৈঠক হয়। সেখানে দুই পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়। দুই পক্ষেরই জমির কাগজপত্র যাচাই করে বিবাদ নিরসনের সিদ্ধান্ত হয়। সমঝোতার পরও আজকে এ হামলা হলো। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত