Ajker Patrika

তানোরে মামা শ্বশুরের বিরুদ্ধে বিধবার ধর্ষণ মামলা

প্রতিনিধি, তানোর (রাজশাহী) 
তানোরে মামা শ্বশুরের বিরুদ্ধে বিধবার ধর্ষণ মামলা

মামা শ্বশুরের বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন বিধবা এক ভাগনে বউ (২৬)। গতকাল রোববার রাজশাহীর তানোর থানায় মামা শ্বশুর উত্তম কুমার কর্মকারের (৩৯) নামে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগী। অভিযুক্ত উত্তম কুমার কর্মকার তানোর সদরের পাল হিন্দুপাড়া এলাকার পূর্ণ কর্মকারের ছেলে।

ভুক্তভোগী বিধবা তাঁর দূরসম্পর্কের ভাগনে বউ। তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা। বছর তিনের আগে তাঁর স্বামী মারা যান। আট বছর বয়সী একমাত্র ছেলেকে নিয়ে স্বামীর ভিটায় বসবাস করে আসছিলেন ওই বিধবা নারী।

এলাকাবাসী ও তানোর থানা-পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় আড়াই বছর ধরে বিয়ের প্রলোভনে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে আসছেন মামা শ্বশুর উত্তম কুমার। গত ২ আগস্ট বিধবার বাড়িতেই তাঁদের আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। ভুক্তভোগী মামলা না করায় শেষ পর্যন্ত মামা শ্বশুর উত্তম কুমারকে সন্দেহভাজন হিসেবে আদালতে তোলে পুলিশ। ওই দিনই তিনি জামিনে বেরিয়ে যান। এরপর ভাগনে বউয়ের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যান উত্তম। কিন্তু বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে রাজশাহী মহানগরীতে এক দফা আত্মহত্যারও চেষ্টা চালান ওই বিধবা নারী।

এ দিকে, মামা শ্বশুরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ওই বিধবা নারী উল্লেখ করেন, প্রায় আড়াই বছর ধরে তাঁর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে আসছেন উত্তম। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে গত ৭ আগস্ট তাকে কৌশলে অপহরণ করে রাজশাহীতে নিয়ে আসেন। এরপর ১০ থেকে ১২ আগস্ট তানোরের ভারসো এলাকায় এক বোনের বাসায় নিয়ে অবস্থান করেন। ওই সময় বিয়ের প্রলোভনে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন উত্তম। এরপর ১২ আগস্ট তাঁকে নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গণেশপাড়ায় আরেক আত্মীয়র বাড়িতে যান। সেখানে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এরপর তাঁকে নিয়ে ফিরে আসেন রাজশাহীর গোদাগাড়ীর মহিষালবাড়ি এলাকায় আরেক আত্মীয়ের বাড়িতে। সেখানে ২১ আগস্ট পর্যন্ত একই কায়দায় দফায় দফায় তাঁকে ধর্ষণ করেন মামা শ্বশুর।

বিয়ের জন্য চাপ দিলে ২১ আগস্ট বিকেলে তাঁকে নিয়ে রাজশাহী নগরীর কুমারপাড়া গঙ্গা মন্দিরে যান। কিন্তু বিয়ে না করে তালবাহানা করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় গড়ায়। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান।

ওসি রাকিবুল হাসান বলেন, রোববার বিকেলে উত্তম কুমার কর্মকারের নামে ওই বিধবা অবশেষে তানোর থানায় অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ৩। তবে রোববার সন্দেহভাজন হিসেবে উত্তম কুমারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে বোয়ালিয়া মডেল থানা-পুলিশ। তানোর থানা-পুলিশ এই মামলায় তাঁকে শ্যোন অ্যারেস্ট (গ্রেপ্তার) দেখানো হচ্ছে। এ ছাড়া ভুক্তভোগী ওই নারীকে সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত