Ajker Patrika

সাংসদ শিমুলের হুমকিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের জিডি

প্রতিনিধি, রাজশাহী
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২১, ০২: ৫০
সাংসদ শিমুলের হুমকিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের জিডি

নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুলের বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের সভাপতি ড. সরকার সুজিত কুমার। এ অভিযোগে তিনি গত ২৯ জুলাই নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

তবে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ শিমুল বলেন, হুমকির অভিযোগ মিথ্যা। তিনি মামলা করবেন বুঝতে পেরে সুজিত কুমার জিডি করেছেন। সাংসদ শিমুলের পাল্টা অভিযোগ, এটা ষড়যন্ত্র। প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ বেশ কয়েকজন এর সঙ্গে যুক্ত।

নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, একটা জিডি হয়েছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে বলা যাবে। 
সরকার সুজিত কুমার ‘নাটোর জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধ’ নামে একটি বই লিখেছেন। ওই বইয়ে সাংসদ শিমুলের বাবা হাসান আলী সরদারকে একজন রাজাকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ড. সুজিত সরকার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রাজশাহী মহানগরের নির্বাহী সভাপতি। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মহানগরীর কুমারপাড়া এলাকায় থাকেন। তাঁর জন্মস্থান নাটোরের সিংড়া।

ড. সুজিতের বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছে ২০০৯ সালে। পরে দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। জিডিতে সুজিত সরকার অভিযোগ করেছেন, সম্প্রতি নাটোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠন নিয়ে দলীয় বিভেদ দেখা দিলে বিষয়টি উঠে এসেছে। নেতা-কর্মীরা বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলছেন, সাংসদ শিমুলের বাবা রাজাকার। এ কারণে সাংসদ শিমুল তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে হুমকি দিয়েছেন। সাংসদ শিমুল বলেছেন, নাটোরের কিছু লোক লেখককে টাকা দিয়ে এই বই লিখিয়েছেন। সাংসদ শিমুলের পক্ষ নিয়ে ইতোমধ্যে কিছু অপরিচিত সন্ত্রাসী হুমকি দিয়েছেন বলে জিডিতে উল্লেখ করেছেন তিনি। 

সুজিত সরকার বলেছেন, এ ধরনের হুমকিতে ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে তাঁর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ জন্য নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে তিনি জিডি করেছেন।

হুমকি দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ শিমুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বাবা রাজাকার ছিলেন না। নির্বাচনের আগে আমাকে বেকায়দায় ফেলতে এই বই প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে আমি নিজেই বিষয়টা জানতাম না। সম্প্রতি জানতে পেরে তাঁর কাছ থেকেই বইটি সংগ্রহ করে আনিয়েছি। এখন এটা নিয়ে আমি মামলা করব।’ তিনি বলেন, তাঁকে মোবাইল ফোনে কে হুমকি দিয়েছে, সেই নম্বর দিয়ে তদন্ত করলেই সেটা বেরিয়ে আসবে।

পরে হোয়াটস অ্যাপে সাংসদ শিমুল বইটির আগের ও পরের সংস্করণের ছবি তুলে পাঠান। তিনি বলেন, আগের সংস্করণের পুরাতন কোর্টপাড়া এলাকার হাসান আলী নামের এক ব্যক্তিকে রাজাকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু পরের সংস্করণে লেখা হয়েছে হাসান আলী সরদার। আগে ঠিকানার জায়গায় শুধু পুরাতন কোর্টপাড়া লেখা হলেও এবার বন্ধনী দিয়ে তার পাশে কান্দিভিটা এলাকা যুক্ত করা হয়েছে। সাংসদ শিমুল এটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন। আর এর সঙ্গে সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি, প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান এবং নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ পুরোপুরি জড়িত বলে অভিযোগ করেন সাংসদ শিমুল। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত