Ajker Patrika

বাঘায় মাজার দিঘির পাড়ের রাস্তায় ধস, চলাচলে ঝুঁকি

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি      
বাঘা উপজেলা সদরের মাজার দিঘির পাড়ের রাস্তার মাটি ধসে পানিতে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাঘা উপজেলা সদরের মাজার দিঘির পাড়ের রাস্তার মাটি ধসে পানিতে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর বাঘা উপজেলা সদরের মাজার দিঘির পাড়ের ‘ওয়াকওয়ে’ রাস্তার দুটি অংশের মাটি ধসে পড়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও মাছ চাষের কারণে সারের ব্যবহারে পাড়ের মাটি নরম হয়ে ‘ওয়াকওয়ে’ রাস্তার দুটি অংশের প্রায় ৬০ মিটার ধসে যায়। এতে দর্শনার্থী ও প্রাতঃভ্রমণকারীদের জন্য রাস্তাটিতে চলাচল করা এবং পূর্ব পাশে গোরস্তানে লাশ বহন করে নিয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর আগে দিঘির সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও দর্শনার্থীদের দিঘির চারপাশ ঘুরে দেখার জন্য ‘ওয়াকওয়ে’ রাস্তা তৈরি করা হয়। দিঘিটি প্রায় ৬০ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত। এটি ওয়াকফ এস্টেটের মাজারের দিঘি নামে পরিচিত। এই দিঘিতে মাছ চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় হয়। দিঘির পশ্চিম পাড়ে মাজার-মসজিদ, সুলতানী আমলের বাঘা শাহি মসজিদ-ঈদগাহ ও পূর্ব পাড়ে কেন্দ্রীয় গোরস্তান। দিঘিপাড়ের রাস্তার দক্ষিণে বসতবাড়ি।

উপজেলার বাঘা পৌর সদরে অবস্থিত মাজার দিঘি পর্যটকের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী নয়নাভিরাম এ দিঘি দেখতে আসেন। তাঁরা মূলত এ ‘ওয়াকওয়ে’ রাস্তা ধরেই হাঁটেন, মাঝে মাঝে তৈরি করা সিমেন্টের বসার স্থানে বসে বিশ্রাম নেন ও ছবি তোলেন। এ ছাড়া সকাল-বিকেল বহু মানুষ এখানে হাঁটতে আসেন। পাশে বাঘা কেন্দ্রীয় গোরস্তানে লাশ নেওয়ার জন্য ওয়াকওয়ে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। ধসের কারণে এখন ওয়াকওয়েটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সেখানে আরও বড় ধস নামার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ না করায় দিঘির পানির ঢেউয়ে ‘ওয়াকওয়ে’র রাস্তার নিচের মাটি দুর্বল হয়ে পড়ে। এর পরে টানা বৃষ্টিতে মানুষের হাঁটার জন্য তৈরি করা রাস্তার (‘ওয়াকওয়ে’) পাশে থাকার গাছ মাটি ধসে পড়েছে দিঘির পানিতে। মাসখানেক আগেও দক্ষিণ পাড়ের এক জায়গার মাটি ধসে পড়েছে। রাস্তাকে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করতে হলে দিঘির পাড়ে গ্রেড ওয়াল (প্রতিরক্ষা দেয়াল) নির্মাণ করা জরুরি। স্থানীয় অনেকে বলেছেন, দিঘির পাড়ের চারপাশে রাস্তা ‘ওয়াকওয়ে’ তৈরি পর থেকে মোটরসাইকেলসহ ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ ছিল। বেশ কিছু দিন ধরে কিশোর-তরুণরা নামীদামি মোটরসাইকেল নিয়ে সকাল-বিকেল সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এতে ‘ওয়াকওয়ে’ রাস্তার পাশের মাটি দুর্বল হয়ে ক্ষতিসাধিত হয়েছে।

মাজার দিঘির পাড়ে নিয়মিত হাঁটতে আসা দক্ষিণ মিলিক বাঘা গ্রামের আলাউদ্দিন বলেন, ‘ওয়াকওয়ে’ রাস্তাটি নির্মাণের পর দীর্ঘদিন এটির সংস্কার হয়নি। এখন বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। আরেকজন উপজেলার বাজুবাঘা ইউনিয়নের আমোদপুর গ্রামের নুরুজ্জামান বলেন, অনেক আগে সংস্কারের দরকার ছিল। কিন্তু এখনো কেউ ব্যবস্থা নেয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বাঘা পৌর প্রশাসক শাম্মী আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। পৌরসভা কর্তৃক দিঘির পূর্ব পাড়ের স্থানটি প্রকল্পের মাধ্যমে সংস্কার করে ঘাট নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দিঘিতে বেশি পানির কারণে কাজ শুরু করা যায়নি। তবে যেখানে ওয়াকওয়ের পাশের মাটি ধসে যাওয়া স্থানটি দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।’ এ ছাড়া বাঘা-আড়ানি সড়কের খন্দকার সপিং কমপ্লেক্সের মোড় থেকে পূর্ব দিকে বাঘা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের পাশ দিয়ে মসজিদ-মাজারে যাতায়াতের জন্য দিঘির পাড় পর্যন্ত রাস্তার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ইউএনও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত