Ajker Patrika

পদ্মার চরে সেনাবাহিনীর অভিযান, জনমনে স্বস্তি

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি 
চরবিনোদপুরে অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। ছবি: আজকের পত্রিকা
চরবিনোদপুরে অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে বালু উত্তোলনকারীদের আস্তানায় অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। এই তৎপরতায় পদ্মাতীরবর্তী মানুষের মনে স্বস্তি ফিরেছে।

গত বৃহস্পতিবার দিনভর উপজেলার চরবিনোদপুরে একটি অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের আস্তানায় অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। সেখানে ছোট ছোট ঘর তৈরি করে বালু উত্তোলনকারীরা থাকার অস্থায়ীভাবে বসবাস করেছিলেন। তবে অভিযানের খবর পেয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা ড্রেজার সরিয়ে আগেই পালিয়ে যান। অবৈধ এই বালুমহাল যাতে পুনরায় চালু হতে না পারে, সেদিকে নজরদারি অব্যাহত রাখার ফলে অবৈধ বালু উত্তোলন শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

স্থানীয়রা জানান, লালপুরের পদ্মা নদীতে বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও চরের মাটি বিক্রির মহোৎসব চলে আসছে। ফলে নদীর পাড় ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে এই অঞ্চলের হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকেই। দিনের পর দিন প্রকাশ্যে এমন কার্যক্রম চললেও অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলন বন্ধে দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। তবে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে অবৈধ এই কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে চরাঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে।

এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে এখনো দৃশ্যমান অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালুর পাহাড়। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলেই অস্ত্র হাতে তেড়ে আসত সন্ত্রাসীরা। ফলে জমি থাকা সত্ত্বেও চরে গিয়ে ফসল ফলাতে পারেননি কৃষকেরা। বালু ও মাটির বাণিজ্যকেন্দ্রিক অভ্যন্তরীণ বিবাদে পদ্মার চরে প্রায়ই গোলাগুলির ঘটনাও ঘটত। ক্ষতিগ্রস্তদের মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচির পরও কোনো প্রতিকার মেলেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চরজাজিরা গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি জানান, আগে নৈরাজ্য চললেও এখন সেনাবাহিনীর তৎপরতায় গা ঢাকা দিয়েছে অবৈধ মাটি ও বালু উত্তোলনকারীরা। উত্তোলন করা কোটি কোটি টাকার বালু জব্দের পাশাপাশি চরাঞ্চলে সেনাবাহিনীর নিয়মিত টহলে স্বস্তি ফিরেছে কৃষকদের মধ্যে। নবোদ্যমে কৃষকেরা ফসল ফলাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের ফলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি চরাঞ্চলের কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তাই এই অবৈধ কার্যক্রম পুনরায় যেন না হয় সে জন্য প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রাখার দাবি জানান তিনি।

এদিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বলছেন, তারা কোনোভাবেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেবেন না।

নাটোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আসমা শাহীন বলেন, আর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। বালু উত্তোলন বন্ধে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত