Ajker Patrika

রেললাইনের ওপর বসেছে কোরবানির হাট, বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা

সাগর খান, আদমদীঘি (বগুড়া) 
আদমদীঘি উপজেলার নশরতপুর স্টেশনের রেললাইনের ওপর ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসানো হয় কোরবানির পশুর হাট। ছবি: আজকের পত্রিকা
আদমদীঘি উপজেলার নশরতপুর স্টেশনের রেললাইনের ওপর ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসানো হয় কোরবানির পশুর হাট। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নশরতপুর স্টেশনে রেললাইনের ওপর ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসানো হয়েছে কোরবানির পশুর হাট। ঈদুল আজহা উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে প্রতি শুক্র ও সোমবার এই হাট বসছে। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই লাইনের ওপরই বসেছে এই হাট।

স্থানীয়রা জানান, স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম-সংলগ্ন রেললাইনের ওপর বসানো হয়েছে হাটটি। অথচ এই পথে প্রতিদিন দোলনচাঁপা, করতোয়া, লালমণি, রংপুর ও বুড়িমারী এক্সপ্রেসসহ অন্তত ১৬টি আন্তনগর, লোকাল ও মেইল ট্রেন চলাচল করে। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

সান্তাহার থেকে গরু কিনতে আসা মমতাজ মাস্টার বলেন, ‘রেললাইনের পাশে গরু-ছাগল নিয়ে হাঁটাচলা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সরকার রাজস্ব পেলেও হাট বসানো উচিত নিরাপদ স্থানে। এখানে তো এমন কোনো জায়গা নেই।’

আরেক ক্রেতা হোসেন আলী অভিযোগ করেন, ‘অবৈধভাবে লাইনের ওপর হাট বসানো হয়েছে। পশুর কোনো মূল্যতালিকা টানানো হয়নি। আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত খাজনা, অথচ রশিদে গরুর সঠিক দাম লেখা হচ্ছে না।’

গত শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, স্টেশনের দুপাশের সচল ও অচল রেললাইন দখল করে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসেছে পশুর হাট। প্রচুর গরু, ছাগল ও ভেড়ার পাশাপাশি ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। হঠাৎ সান্তাহার থেকে বগুড়াগামী একটি ট্রেন আসার সংকেত পেলে ইজারাদারের পক্ষ থেকে মাইকিং করে গরু ও লোকজন সরিয়ে নিতে বলা হয়। পাশাপাশি গ্রাম পুলিশদের বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করতে দেখা যায়।

এমন অবস্থায় ট্রেনগুলোকে অনেক দূর থেকে হুইসেল বাজিয়ে গতি কমিয়ে চলতে হচ্ছে। এতে ঈদযাত্রার সময়সূচি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘বহুদিন ধরেই রেললাইনের ওপর গরুর হাট বসছে। এটা একেবারেই অনিয়ম। অথচ প্রশাসন এখানেই হাট ইজারা দিচ্ছে!’

হাট ইজারাদার লোকমান হোসেন বাবু দাবি করেন, ‘রেল মন্ত্রণালয় থেকে ইউএনও বরাবর একটি চিঠি এসেছে, চিঠিতে এখানে হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’

তবে বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাজেদুর রহমান বলেন, ‘রেললাইনে হাট বসানোর কোনো অনুমোদন আমাদের দেওয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত আনজুম অনন্যা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে আবেদন জমা পড়লেও ডিসি স্যার ও রেল কর্তৃপক্ষের অনুমোদন এখনো আসেনি। প্রভাবশালী ইজারাদার ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মিলে হাটটি অবৈধভাবে চালাচ্ছেন। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে, ইনশাআল্লাহ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত