Ajker Patrika

রাজশাহী ওয়াসা

কাজ নেই, মজুরি ষোলো আনা

  • কার্যালয় থেকে পাম্প নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তারপরও রয়েছেন অপারেটর।
  • অপারেটররা কর্মস্থলে না গেলেও মজুরি পান।
  • প্রতিবছর ৫ কোটি টাকার ওপরে মজুরি দেয় ওয়াসা।
রিমন রহমান, রাজশাহী 
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৫, ১৩: ১৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

একসময় রাজশাহী নগরে পানি সরবরাহের জন্য প্রতিটি পাম্পে একাধিক অপারেটর থাকতে হতো। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকেই এই পাম্প নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তারপরও পাম্পগুলোয় দুই থেকে তিনজন করে পাম্প অপারেটর রাখা হয়েছে। তাঁদের বেতন-ভাতা খাতে বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও লোকসান কমাতে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে পানির মূল্য।

রাজশাহী ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, শহরে পাম্প রয়েছে ১২৩টি। দুবছর আগেই ৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পাম্পগুলোতে রাশিয়া ও ভারত থেকে আনা সুইচ ডিভাইস লাগানো হয়। এখন পাম্পগুলো অফিস থেকেই চালু ও বন্ধ করা হয়। তারপরও পাম্পে পাম্পে রাখা হয়েছে দুই থেকে তিনজন অপারেটর। এদের বেশির ভাগই দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া। ওয়াসা সূত্র জানিয়েছে, এখন দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে অস্থায়ী কর্মচারী আছেন ১৯৩ জন। এর বেশির ভাগই পাম্প অপারেটর। দক্ষ কর্মচারীরা ৬০০ ও অদক্ষ কর্মচারীরা ৫০০ টাকা মজুরি পান। তাঁদের পেছনে বছরে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা খরচ হয়। সূত্র বলছে, কাজ না থাকলেও এই টাকা ব্যয় করছে ওয়াসা।

কেউ থাকে না পাম্পে

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওয়াসার এক অফিস আদেশে পবিত্র রমজান উপলক্ষে পাম্পের অপারেটরদের সময়সূচি দেওয়া হয়। এতে দেখা যায়, প্রতিটি পাম্পে তিন শিফটে তিনজন অপারেটর কাজ করছেন। তবে এটা শুধু কাগজেই। কর্মস্থলে গিয়ে তাঁদের পাওয়া যায় না।

রাজশাহী নগরের দড়িখড়বোনা এলাকায় রেলওয়ের গেটকিপারের ঘরেই ওয়াসার পাম্প চালু ও বন্ধ করার ডিভাইস বসানো আছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় সেখানে গিয়ে রেলওয়ের গেটকিপারকে পাওয়া যায়। তবে সেখানে ওয়াসার কোনো পাম্প অপারেটরকে পাওয়া যায়নি। রেলওয়ের ওই গেটকিপার বললেন, পাম্পে কেউই থাকেন না। তাঁরা মাঝে মাঝে আসেন।

নগরের বিসিক পাম্পে গিয়ে দেখা যায়, ঘরটি তালাবদ্ধ। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শ্রমিক নেতা বাকী বিল্লাহ সাগর ও রুবেল এই পাম্পের অপারেটর। স্থানীয়রা জানান, তাঁরা পাম্পেই আসেন না। সব সময় ঘরটি তালাবদ্ধ থাকে। ওয়াসার প্রধান কার্যালয়ের পাশেই উপশহর হাউজিং এস্টেট পাম্পে গিয়েও তালাবদ্ধ পাওয়া গেল ঘর।

রাজশাহী ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী পারভেজ মামুদ বলেন, ‘এখনো পরীক্ষামূলক সময় চলছে। অটোমেশনের পাশাপাশি আমরা পাম্প অপারেটরদেরও রেখেছি, যেন কখনো ডিভাইস কাজ না করলে ম্যানুয়ালি পাম্প চালানো যায়। তবে আগামী বছরই জনবল কমাতে শুরু করব।’ পাম্পে অপারেটরদের না থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘যাঁরা নির্দেশনা অমান্য করেন, তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ব্যয় মেটাতে বাড়ছে পানির দাম

লোকসান কমাতে সর্বশেষ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়াসা পানির মূল্য তিনগুণ বাড়িয়ে দেয়। ওয়াসার বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৩ কোটি ৫২ লাখ টাকার পরিচালন ব্যয় করে ১৭ কোটি ৭২ লাখ টাকার পানি বিক্রি করে ওয়াসা। অর্থাৎ লোকসান হয় প্রায় ৬ কোটি টাকা। এমন লোকসান এড়াতে গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় আবারও পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে।

এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ‘ভুল পদক্ষেপে রাজশাহী ওয়াসা ব্যয় বাড়াচ্ছেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত