Ajker Patrika

বিএমডিএতে অস্থিরতা, সেচ কার্যক্রম ব্যাহতের আশঙ্কা

  • রাসিকের সাবেক মেয়র ও আ.লীগ নেতা খায়রুজ্জামান লিটনের সহকারী ছিলেন ইডি শফিকুল
  • বদলির আদেশের পরও ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করেন তিনি
  • মামলা, বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো, সাময়িক বরখাস্ত ও শোকজের ঘটনাও ঘটে
  • বিষয়টা মন্ত্রণালয় দেখছে বলে জানান বিএমডিএর ভারপ্রাপ্ত সচিব এনামুল কাদির
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮: ৫৬
বিএমডিএতে অস্থিরতা, সেচ কার্যক্রম ব্যাহতের আশঙ্কা

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সদ্য সাবেক নির্বাহী পরিচালক (ইডি) শফিকুল ইসলামকে তাঁর দপ্তর থেকে বের করে দেওয়াকে কেন্দ্র করে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে সংস্থাটিতে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শফিকুলের মামলা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো, দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও আটজনকে শোকজের মতো পদক্ষেপের ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাঁরাও পাল্টা কর্মসূচি দিতে যাচ্ছেন। এসব কারণে ভরা মৌসুমে যেকোনো সময় বন্ধ হতে পারে সেচ কার্যক্রম।

এদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তোপের মুখে শফিকুল অফিস ছাড়ার পর গত সোমবার নতুন ইডি নিয়োগ দেয় সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে অতিরিক্ত সচিব তরিকুল আলমকে ইডি নিয়োগ করা হয়। এ নিয়েও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাঁরা বলছেন, বিএমডিএর কাজ প্রকৌশলবিদ্যার। প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ পদে অযোগ্য।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উত্তেজনা

গত ১৪ জুলাই বিএমডিএর ইডি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম। সূত্র বলছে, তিনি একসময় রাজশাহীর সাবেক সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সহকারী ছিলেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়। কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও তিনি বিএমডিএ ছাড়ছিলেন না।

ফলে ২৩ মার্চ একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী গিয়ে তাঁকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করেন। এরপরই হেনস্তার অভিযোগে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন শফিকুল। ১৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম উল্লেখ করে তিনি মামলাও করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ৫০ থেকে ৬০ জনকে। ঘটনার পরপরই তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। একজন নির্বাহী প্রকৌশলী ও একজন সহকারী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শোকজ করা হয়েছে আটজনকে। ২৫ মার্চ স্বাক্ষর করা শোকজের এই চিঠি তাঁরা পেয়েছেন গত মঙ্গলবার। একের পর এক এই পদক্ষেপের ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে তাঁরাও পাল্টা কর্মসূচি গ্রহণের পরিকল্পনা করছেন। গত ২৬ মার্চ রাজশাহী এবং ২৭ মার্চ রংপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিএমডিএর একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ইডি শফিকুল ছিলেন প্রশাসনের কর্মকর্তা। তাই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি নিজের ক্ষমতা দেখিয়ে অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। প্রভাব খাটিয়ে একজনকে বাধ্যতামূলক অবসর এবং দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করিয়েছেন। তদন্তের আগেই এভাবে অব্যাহতি ও সাময়িক বরখাস্ত করা একেবারেই নজিরবিহীন। ফলে বিএমডিএর সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ। তাঁরাও আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সেচ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।

বিরোধ কেন ইডির সঙ্গে খায়রুজ্জামান লিটনের সুপারিশে শফিকুল বিএমডিএর ইডি হয়েছিলেন বলে জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে আওয়ামী সরকারের পতনের পরই তাঁর সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দূরত্ব বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি আরও প্রকট হয় যখন আওয়ামী সরকারের পতনের পরও সেই দলের সমর্থক ও সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন করতে থাকেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মাহফুজুর রহমান নামের এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ছাড়া কাউকেই পাত্তা দিতেন না শফিকুল। মাহফুজুর বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের চাকরিবিষয়ক সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ মনোনীত আইইবি রাজশাহী কেন্দ্রের সদস্য। তাঁর পরামর্শ মোতাবেক ইডি ১৭ বছর ধরে বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজশাহীতে বদলি করে না এনে বিগত সরকারের সুবিধাভোগীদেরই একের পর এক নানা সুবিধা দিতে থাকেন। নিজের বদলির আদেশের পরও ইডি শফিকুল ইসলাম বিএমডিএর নাজিরুল ইসলাম নামের এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে বদলির আদেশ জারি করেন। অথচ নাজিরুল বিগত সরকারের আমলে অনুমোদিত ২৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হিসেবে কাজ করছেন। নাজিরুল গত সরকারের আমলে মোট তিনটি প্রকল্পের পিডি হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, বদলির আদেশের পরও ইডি শফিকুল গত ১৩ মার্চ দুটি আদেশে ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করেন। এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি আরও দুই আদেশে ২৭ জনকে বদলি করা হয়। আর যেসব কর্মচারী জুলাই আন্দোলন দমনে সরাসরি লাঠি হাতে মাঠে নামেন, তাঁদের বহাল রাখা হয়। ইডির বদলির আদেশের পর মাহফুজুর রহমান কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাদের ডেকে মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদনপত্র পাঠানোর নির্দেশনা দেন। এতে শফিকুল ইসলামকে বিএমডিএতেই রাখার দাবি জানাতে বলা হয়।

এসব বিষয়ে কথা বলতে সদ্য সাবেক ইডি শফিকুলকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

বিএমডিএর ভারপ্রাপ্ত সচিব এনামুল কাদির বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএমডিএতে একটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা ঠিক। তবে এটা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। বিষয়টা এখন মন্ত্রণালয় দেখছে।’

মনগড়া তদন্ত কমিটির অভিযোগ

এদিকে শফিকুলকে তাঁর দপ্তর থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় সংস্থার চেয়ারম্যান মনগড়া তদন্ত কমিটি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নির্দেশনা অমান্য করে নিজের ইচ্ছেমতো তদন্ত কমিটি করেছেন বলে অভিযোগ।

বিএমডিএ পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সাইফুল ইসলাম হীরকের দাবি, কৃষি উপদেষ্টা তাঁকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করতে বলেছিলেন। কিন্তু বিএমডিএ চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামান উপদেষ্টার নির্দেশনা আমলে না নিয়ে ইচ্ছেমতো তদন্ত কমিটি করেছেন। এই কমিটি ভেঙে দিতে তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার বিএমডিএ চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী চিঠিটি গ্রহণ করেছেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে ফোন করা হয় বিএমডিএ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামানকে। তিনি পরিচয় পেয়েই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে আর ফোন ধরেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাছ ধরতে গিয়ে ভারতে আটক ৬ জেলে, ১৩ মাস পর হস্তান্তর

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও সীমান্ত দিয়ে ছয় বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের হস্তান্তর করা হয়।

হস্তান্তর হওয়া মৎস্যজীবীরা কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার বাসিন্দা। তাঁরা হলেন আবুল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫), বাহাদুর মিয়ার ছেলে বিপ্লব মিয়া (৪৫), ইসহাক আলীর ছেলে মীর জাফর আলী (৪৫), ইছাক আলীর ছেলে বকুল মিয়া (৩২), ফকির আলীর ছেলে আমের আলী (৩৫), সলিমুদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে চাঁন মিয়া (৬০)।

বিজিবি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ নভেম্বর জিঞ্জিরাম নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ভুলক্রমে সীমান্ত অতিক্রম করে তাঁরা ভারতের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় স্থানীয় পুলিশ ও বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের আটক করে। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁরা সেখানে প্রায় ১৩ মাস সাজা ভোগ করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সন্ধ্যায় শেরপুর ৩৯ বিজিবির দায়িত্বে থাকা এলাকার হাতিপাগার বিজিবি কোয়ার্টার মাস্টার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ভারতের কিল্লাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সঙ্গে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিএসএফ ছয় বাংলাদেশি নাগরিককে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর তাঁদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ১৬
কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট এলাকা থেকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মো. মিলন। ছবি: উত্তরা আর্মি ক্যাম্প
কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট এলাকা থেকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মো. মিলন। ছবি: উত্তরা আর্মি ক্যাম্প

রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে বিদেশি পিস্তল, গুলিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। তাঁরা হলেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মো. মিলন।

সেনাবাহিনী জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত ছিলেন।

গতকাল মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনীর ৬ স্বতন্ত্র এডি ব্রিগেডের অধীনস্থ উত্তরা আর্মি ক্যাম্প।

উত্তরা আর্মি ক্যাম্প থেকে আজ বুধবার পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক সেবনরত অবস্থায় শীর্ষ সন্ত্রাসী আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই স্থানে তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের কাছ থেকে একটি স্প্যানিশ পিস্তল ও তিনটি গুলি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এই দুজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত