Ajker Patrika

নওগাঁয় শিক্ষার্থীদের মারধর করার অভিযোগ নিয়ে উত্তেজনা

নওগাঁ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২২, ১৯: ২০
Thumbnail image

নওগাঁর মহাদেবপুরে স্কুলড্রেস না পরে স্কুলে আসায় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের একটি পক্ষ বলছে, হিজাব পরে আসার কারণেই শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়েছে। আরেকটি পক্ষ বলছে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষক শাসন করেছেন। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে কোন্দল থাকায় নিজ স্বার্থ হাসিলে একটি পক্ষ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানা উসকানি দিচ্ছে।

ঘটনার এক দিন পর ওই বিদ্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে ওই শিক্ষক বলছেন, স্কুলড্রেস পরে না আসায় তিনি শিক্ষার্থীদের কিছুটা শাসন করেছেন। এতে এখন ধর্মীয় রং চড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। 

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। ঘটনার দিন তিনি স্কুলের কাজে বাইরে ছিলেন। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে শোকজ করা হবে বলেও জানান তিনি। 

এ ব্যাপারে মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় কোনো পক্ষেরই অভিযোগ পাননি তিনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই শিক্ষকের বাড়ি এবং স্কুলটিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

ঘটনা গত বুধবারের। ওই দিন দুপুরে শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনাটি ঘটে উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। অভিযোগ ওঠে, ‘হিজাব’ পরার কারণেই নাকি ওই শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়েছে। এরই জের ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা ওই স্কুলে গিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানান। স্কুলে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে না পেয়ে স্কুলের আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত বুধবার স্কুলে হিজাব পরে যাওয়ার কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে লাঠিপেটা করেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘স্কুলড্রেস না পরে এলে বিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না।’ 

যদিও স্থানীয় বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই দিন শুধু মেয়েদের নয়, মারধর করা হয়েছিল ছেলেদেরও। স্কুলড্রেস না পরার কারণেই এভাবে ‘শাসন’ করা হয়। কয়েকজন মেয়েকে মারধর করেন আমোদিনী পাল। আর ছেলেদের মারধর করেন স্কুলের অন্য এক পুরুষ শিক্ষক। স্কুলড্রেস না পরে আসার কারণ জানতে চাইলেও এ নিয়ে কেউ সুস্পষ্ট কিছু বলেননি। 

এরপর স্কুল থেকে বাড়িতে চলে যায় অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণি পড়ুয়া প্রায় ১৮ জন শিক্ষার্থী। ঘটনার পরদিন এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ওই বিদ্যালয়ের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

কয়েকজন অভিভাবক অবিলম্বে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আমোদিনী পাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোনো ধর্মীয় ইস্যুতে নয়। স্কুলড্রেস পরে আসতেই কিছুটা শাসন করেছিলেন তিনি। এর ওপর এখন ধর্মীয় রং লাগানো হচ্ছে। কিছু লোক এ কাজ করছে। তিনি জানান, এর আগেও শিক্ষার্থীদের স্কুলড্রেস পরে স্কুলে আসার কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু তারা শোনেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত