Ajker Patrika

তিন দিনের রিমান্ডে মেয়র আব্বাস

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ১৭
Thumbnail image

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার জেরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর বিচারক শংকর কুমার এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরীর বোয়ালিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাবুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার মেয়র আব্বাসের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলেন। এ আবেদনের শুনানির জন্য সোমবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে মেয়র আব্বাসকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে আদালতে নেওয়া হয়। এরপর আসামির উপস্থিতিতেই শুনানি শুরু হয়। দুপুর ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত আদালত উভয় পক্ষের কথা শোনেন। 

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আসলাম সরকার আদালতকে বলেন, মেয়র আব্বাস আলী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে আপত্তিকর কথা বলে সম্প্রীতি নষ্ট করেছেন। পরে ফেসবুকে লাইভে এসে তিনি বলেছেন, এক বড় হুজুরের পরামর্শে তিনি ম্যুরাল নির্মাণ থেকে সরে এসে এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। কে সেই বড় হুজুর, সেটা জানা দরকার। এ জন্য আব্বাসকে পুলিশের রিমান্ডে দেওয়া দরকার। 

আসলাম সরকার বলেন, জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) শায়খ আবদুর রহমানকেও ‘বড় হুজুর’ বলা হতো। তাঁর জন্য দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছিল। তাঁর নির্দেশে আদালতে বোমা মেরে দুজন বিচারককে হত্যা করা হয়। এই বড় হুজুরকেও শনাক্ত করা দরকার। আইনের আওতায় আনা দরকার। তা ছাড়া, আব্বাসের আরও এ ধরনের বক্তব্য আছে। বিপুল সম্পদ আছে তাঁর। এসব কীভাবে হয়েছে, সবকিছু জানার জন্য তাঁর রিমান্ড দরকার। 

অন্যদিকে মেয়র আব্বাসের পক্ষে রিমান্ডের বিরোধিতা করে রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ তৌফিক জাহিদী আদালতকে বলেন, মেয়র আব্বাস তাঁর নিজের ডিভাইস থেকে ম্যুরাল নিয়ে বক্তব্য ছড়াননি। তিনি ফেসবুক লাইভে এসেই স্বীকার করেছিলেন যে, ওই কথোপকথন তাঁর। সাধারণত ‘ক্লু লেস’ মামলায় সর্বশেষ ‘চিকিৎসা’ হিসেবে পুলিশি রিমান্ড দেওয়া হয়। এ মামলায় শুধু একটা ফরেনসিক রিপোর্ট নিয়েই পুলিশ তদন্ত শেষ করতে পারে। রিমান্ডের প্রয়োজনীয়তা নেই। 

তবে উভয় পক্ষের কথা শোনার পর আদালত মেয়র আব্বাসের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আব্বাসের পক্ষে তাঁর জামিনেরও আবেদন করা হয়েছিল। আদালত তা নামঞ্জুর করেছেন। এ ছাড়া আব্বাসকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। জেল কোড অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে আদালত আদেশে বলেছেন।

রিমান্ড শুনানির সময় মেয়র আব্বাস আলী আদালতের কাঠগড়ায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন। শুনানি শেষেই তাঁকে আবার প্রিজন ভ্যানে তুলে কারাগারে নেওয়া হয়। সম্প্রতি মেয়র আব্বাসের ঘরোয়া বৈঠকের দুটি অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে। একটি অডিওতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন করলে ‘পাপ হবে’ এমন মন্তব্য করতে শোনা যায় আব্বাসকে। পর পর দুবার নৌকা নিয়ে মেয়র হওয়া আব্বাসের এ রেকর্ড ছড়িয়ে পড়লে রাজশাহীতে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। তাঁকে আওয়ামী লীগের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সিটি করপোরেশনের একজন কাউন্সিলর।

পৌরসভার সব কাউন্সিলর মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। এ দিকে গ্রেপ্তার এড়াতে মেয়র আব্বাস ঢাকায় একটি হোটেলে গিয়ে লুকিয়ে থাকেন। ১ ডিসেম্বর ভোরে র‍্যাব সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন বোয়ালিয়া থানা-পুলিশ তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। সেদিন তদন্ত কর্মকর্তা তাঁর ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণের ১৩০০ কোটির এক টাকাও দেননি হলিডে ইনের মালিক

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

গণ–সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন বিএনপি নেতা

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত