Ajker Patrika

উমেদ স্যার স্মরণীক, বিনা পয়সার ব্যতিক্রমী পাঠশালা

মিজান মাহী, দুর্গাপুর (রাজশাহী) 
উমেদ স্যার স্মরণীক, বিনা পয়সার ব্যতিক্রমী পাঠশালা

প্রতিবন্ধী সমাজের বোঝা নয়, সুযোগ পেলে তারাও মানুষ হয়—এ লক্ষ্যে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বেলঘরিয়া গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় উমেদ স্যার স্মরণীক প্রতিবন্ধী পাঠশালা। এখানে ইশারার মাধ্যমে বর্ণমালা ও হাতের লেখা শেখানো হয়। পাঠশালাটি আর ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আলাদা। সমাজের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবহেলিত বুদ্ধি, শ্রবণ ও বাক-প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এটি। পড়ানো হয় বিনা পয়সায়।

প্রতিবন্ধী শিশুদের আলোর পথ দেখাতে প্রয়াত শিক্ষক উমেদ আলী মোল্লার ছেলে শিক্ষানুরাগী ও একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম পাঠশালাটি গড়ে তোলেন। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পাঠশালাটিতে প্রতিবন্ধীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি রয়েছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় সাত মাইল দূরে পাঠশালাটি গড়ে তোলা হয়েছে। পাঠশালাটিতে বিনা বেতনে কাজ করছেন একজন প্রধান শিক্ষকসহ ১১ জন শিক্ষক।

এখানে পড়ানো হয় প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। বর্তমানে পাঠশালাটিতে ১৯২ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। পাঠশালাটিতে কেউ হাঁটতে পারে, কেউ পারে না। কেউ কথা বলতে পারে না, কেউ আবার কানে শোনে না।

উমেদ স্যার স্মরণীক প্রতিবন্ধী পাঠশালার চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী রাব্বি হাসান বলে, ‘এখানে এসে পড়তে পারি। আবার খেলতেও পারি। আবার গাড়িতে করে বাড়িতেও যাই। তাই খুব ভালো লাগে।’

পাঠশালাটির প্রতিষ্ঠাতা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা একজন শিক্ষক ছিলেন। আমিও এখন একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এখন বাবা নেই। তাই বাবার স্মরণে পাঠশালাটি প্রতিষ্ঠা করেছি। সেখানে প্রতিবন্ধী শিশুরা লেখাপড়া ও খেলাধুলা করে। ইতিমধ্যে উপজেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে পাঠশালাটি। এ ধরনের পাঠশালা উপজেলায় মাত্র একটিই। প্রতিষ্ঠানটি সরকারীকরণসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

পাঠশালার প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের আলোর পথ দেখাতে তাদের এ প্রচেষ্টা। বিনা বেতনে পাঠদান করছেন। যদিও তাঁদের সংসারে অভাব লেগেই আছে। তবু প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে।’

পাঠশালাটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সম্প্রতি আমি পাঠশালা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে বিনা পয়সায় প্রতিবন্ধী শিশুরা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা করতে পারে। আশা করি, অবহেলিত এসব প্রতিবন্ধী শিশু একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তারা দেশ ও জাতির কল্যাণে বিশেষ অবদান রাখবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত