Ajker Patrika

একজনের ভাতার টাকা অন্য জনের মোবাইল নম্বরে

প্রতিনিধি, ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ১৯
একজনের ভাতার টাকা অন্য জনের মোবাইল নম্বরে

ছায়মন নেছা (৭৫)। দারিদ্র্যের কশাঘাতে কেটেছে তার পুরো জীবন। ১৫ বছর আগে হারিয়েছেন স্বামী জুনাব আলীকে। এরপর বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে যা পেতেন তাই দিয়ে এক ছেলেকে নিয়ে চালাতেন সংসার। দরিদ্র হলেও বিধবা ভাতার জন্য চেষ্টা করে মেলেনি কখনো। জীবন সায়াহ্নে এসে জুটেছে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড। কার্ড পেয়ে তাঁর মুখে হাসি ফুটলেও তা স্থায়ী হয়নি বেশি দিন। কেননা তাঁর ভাতার টাকা যাচ্ছে অন্যের মোবাইল নম্বরে। 

জানা গেছে, ছায়মন নেছা থাকেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার আছিম ইউনিয়নের লাঙল শিমুল গ্রামে। নিজস্ব কোন থাকার জায়গা নেই তাঁর। পাঁচ যুগের বেশি সময় ধরে থাকছেন মৃত আব্দুল আজিজের জমিতে। এক ছেলে আব্দুল খালেক (৩০) একজন ভ্যান চালক। তাঁর আয় দিয়েই তাঁর মা এবং স্ত্রীকে নিয়ে কোন রকমে চলে তাঁদের সংসার। বয়স্ক ভাতা পেলে কিছুটা ভালোভাবে সংসার চালাতে পারতেন এই বৃদ্ধা। 

ছায়মন নেছার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বয়স্ক ভাতার আবেদনের সময় যে মোবাইলের নম্বর দেওয়া হয়েছিল তাতে টাকা আসছে না। পরবর্তীতে অফিসের মাধ্যমে যে সিম কার্ড কিনেছেন সেইটাতেও ভাতার টাকা আসেনি। নগদ এর এজেন্ট পয়েন্টে গিয়ে জানতে চান টাকা আসছে কি না। এজেন্ট মালিক বলেন এই ভাতার সিরিয়াল নম্বর-৬৭১ এর টাকা অন্য নম্বরে চলে গেছে। 

ছায়মন নেছা জানান, এই ভাতার জন্য তিনি অনেক ঘোরাঘুরি করেছেন। ভাতা পাবেন বলে খুব খুশি হয়েছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন এই ভাতার টাকা দিয়ে ঈদটা ভালোভাবে কাটাবেন। কিন্তু জুন মাসে আশপাশে অনেকেই টাকা পেলেও তিনি পাননি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাঁকে যে বিকাশ নম্বর দেওয়া হয়েছে এটার বদলে অন্য আরেকজনের নম্বরে টাকা যাচ্ছে। 

উপজেলা আনুহাদী গ্রামের নার্গিস আক্তার বলেন, `আমি দুইবার ব্যাংক থেকে টাকা তোলছি যখন অফিস থেকে সিম কিনছি তার পরে আর টাকা পাইনি।' 

এমন অভিযোগ নিয়ে প্রতিদিন সমাজ সেবা অফিসে আসতে দেখা যাচ্ছে ভুক্তভোগীদের। একটি প্রতারক চক্র সারা দেশে এমন প্রতারণা করছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ভুক্তভোগীদের। 

সমাজ সেবা অফিসে দায়িত্ব পালনের অবহেলার কারণে এমনটা হচ্ছে বলে দাবি করেন ভুক্তভোগীরা। 

এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা হাসান কিবরিয়া বলেন, উপজেলায় মোট ৪০ হাজার ২৩৯ জন সুবিধাভোগী রয়েছেন। অনেক ভাতাভোগী একটু সময় লাগছে। সবার টাকাই আসবে। 

১০ নম্বর কালাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মাস্টার ৬ নম্বর পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বাদল জানান, ভাতা ভোগীরা ঠিকমতো টাকা না পাওয়ায় আমাদের মানুষের নানা রকম কথা শুনতে হচ্ছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল ছিদ্দিক বলেন, `এমআইএস করার পর বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক যার যার মোবাইল নম্বরে টাকা পাঠান। এরপর আমাদের এখানে আর কোন কাজ নাই। এমন সমস্যার কথা বলে কেউ অভিযোগ করেনি। করলে আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।'

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নয়াদিল্লিতে নতুন হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ, ৩ মাস সময় নিল ভারত

খেজুরে অতি মুনাফা, হতাশ ক্রেতা

চাপে পড়ে ৫টি বাস রিকুইজিশন দিয়েছেন পিরোজপুরের ডিসি, সরকারের হস্তক্ষেপ নেই: প্রেস সচিব

কলাবাগানে সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মরদেহ উদ্ধার

রাতে স্বামীর জন্মদিন উদ্‌যাপন, সকালে নদীতে মিলল নববধূর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত