Ajker Patrika

শান্তি সমাবেশে নিহত রেজাউলের লাশ দাফন, হত্যাকারীদের বিচার দাবি পরিবারের

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৩, ১৭: ৩১
শান্তি সমাবেশে নিহত রেজাউলের লাশ দাফন, হত্যাকারীদের বিচার দাবি পরিবারের

শেরপুরের নকলার গ্রামের বাড়িতে নিজস্ব কবরস্থানে দাদির কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন রেজাউল ইসলাম (২১)। গতকাল রোববার রাতে উপজেলার চরঅষ্টধর ইউনিয়নের নারায়ণখোলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাড়ির কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

গতকাল রাত সোয়া ৮টার দিকে বড় দুই বোন ও মামা রেজাউলের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি পৌঁছান। পরে রাত সাড়ে ৯টার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দুই দাদি জবেদা খাতুন ও সখিনা বেগমের কবরের মাঝখানে তাঁকে সমাহিত করা হয়। গত শুক্রবার রাজধানীতে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের দুই নেতার অনুসারীদের হামলার মধ্যে পড়ে নিহত হন পথচারী হাফেজ রেজাউল।

পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নম্র-ভদ্র-সদালাপী রেজাউল কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। তাঁর তিন বোন রয়েছে। ময়মনসিংহ জামিয়া ফয়জুর রহমান মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা শেষ করে তিনি ঢাকায় একটি মাদ্রাসায় দাওরা হাদিস বিভাগে ভর্তি হন।

গত কোরবানি ঈদের কয়েক দিন আগে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন। গত বৃহস্পতিবার ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে জামালপুরের নরুন্দী থেকে ট্রেনে ঢাকায় যান। পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়ে ফেরার পথে রাজধানীর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হন রেজাউল।

গত শনিবার সকালে নকলা থানা-পুলিশ রেজাউলের চাচা আজাহারুল ইসলামের মোবাইলে ফোন করে রেজাউলের মৃত্যুর খবর দেয় এবং ঢাকায় গিয়ে লাশ আনতে বলে। পরে রেজাউলের বড় দুই বোন ও মামা আইনি প্রক্রিয়া শেষে গতকাল রাতে লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি যান।

এ সময় ছেলের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন রেজাউলের বাবা সাত্তার ও মা রেনুজা বেগমসহ তাঁর স্বজনেরা। বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন তাঁরা। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

রেজাউলের বড় বোন ফারহানা আফরিন সুমি বলেন, ‘আমার ভাই তো কোনো দল করত না। বিনা কারণে আমার ভাইকে মরতে হলো। আমার ভাইকে তো আর ফিরে পাব না। এখন একটাই চাওয়া, আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।’

দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করে রেজাউলের চাচা আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। কিন্তু আমার ভাতিজা রেজাউল কোনো দল করেনি। সে অত্যন্ত ভদ্র ও সহজ-সরল ছিল। আমি ও আমাদের পরিবার আওয়ামী লীগ করি। আজ আওয়ামী লীগেরই কর্মীদের হাতে আমার ভাতিজার প্রাণ গেল। বিনা কারণে কেন তাকে মরতে হলো? এ বিচারটাই আমরা চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত