Ajker Patrika

বকশীগঞ্জে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি

ইসলামপুর ও জামালপুর প্রতিনিধি 
বকশীগঞ্জে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি

জামালপুরের বকশীগঞ্জে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ সোমবার বিকেলে বকশীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাংবাদিক এম এ সালাম মাহমুদ। তিনি দৈনিক দেশেরকন্ঠ পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি। 

অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার নাম ফরহাদ হোসেন পলাশ। তিনি বকশীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সদস্য এবং মেরুরচর গ্রামের বাসিন্দা। 

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের খাবার সরবরাহের ঠিকাদারি নিয়েছেন যুবলীগ নেতা ফরহাদ হোসেন পলাশ। রোগীদের খাবারের গুণগত মানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গতকাল রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান সাংবাদিক সালাম মাহমুদ। এ খবর জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ যুবলীগ নেতা মোবাইল ফোনে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে সাংবাদিক মাহমুদকে। একপর্যায়ে সালাম মাহমুদকে পিটিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তিনি। 

সাংবাদিক সালাম মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের খাবারের গুণগত মানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে যুবলীগ নেতা পলাশ মোবাইল ফোনে আমাকে গালিগালাজ করেন। সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের হত্যাকাণ্ড ইঙ্গিত করে পলাশ আমাকে বলেন, ‘‘আপনারা অনেক বড় সাংবাদিক হয়ে গেছেন। এই জন্যই তো মানুষ আপনাদের রাস্তায় পিটিয়ে মারে। এখনো সময় আছে ভালো হয়ে যান।’ ’ 

সালাম মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আইনি প্রতিকার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’ 

এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা ফরহাদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘সাংবাদিক সালামের সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে। কিন্তু আমি তাঁকে কোনো ধরনের হুমকি দিইনি। হত্যার হুমকি দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।’ 

জানতে চাইলে জামালপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা রাজু বলেন, ‘সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে আমি অবগত না। তবে যদি যুবলীগ নেতা কোনো সাংবাদিকে হুমকি দিয়ে থাকেন, তদন্তপূর্বক তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ লায়ন বলেন, ‘সাংবাদিক নাদিম হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই আরেক সাংবাদিকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় আমরা শঙ্কিত। অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা পলাশকে গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে জানা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ 

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘হুমকি দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিক সালাম মাহমুদ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

এর আগে গত ১৪ জুন রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম। পরদিন ১৫ জুন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। গোলাম রব্বানী বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। এ ঘটনায় ১৮ জুন সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে ২২ জনের নামে উল্লেখ করে বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। 

এ বিষয়ে সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের জামালপুর ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) পরিদর্শক গোলক চন্দ্র বসাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার তদন্তকাজ চলছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অনুসন্ধান চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত