Ajker Patrika

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষক-সংকটে পাঠদান ব্যাহত

মো. ফাহাদ বিন সাঈদ, জাককানইবি 
শিক্ষক-সংকটে পাঠদান ব্যাহত

ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) চলছে চরম শিক্ষক-সংকট। প্রয়োজনীয় শিক্ষকের অর্ধেকও সেখানে কর্মরত নেই। যাঁরা আছেন তাঁদের মধ্যে আবার অনেকে গেছেন শিক্ষাছুটিতে। ফলে পাঠদান, গবেষণাসহ অন্যান্য কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫ সালের ডায়েরি অনুযায়ী, নতুন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ ছাড়াই বর্তমানে এখানে ১০ হাজার ৮০৯ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। আদর্শ অনুপাতে প্রতি ২০ শিক্ষার্থীর জন্য প্রয়োজন একজন শিক্ষক। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এখন প্রয়োজন ছিল অন্তত ৫৪০ জন সক্রিয় শিক্ষক। কিন্তু আছেন ২২০ জন। যাঁদের অনেকেই আবার শিক্ষাছুটিতে। ফলে বাস্তবে শিক্ষকসংখ্যা আরও কম।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চাইছে, আউটকাম বেইজড এডুকেশন (ওবিই) বাস্তবায়ন। যেখানে প্রতিটি বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পাঠদান, থিসিস, গবেষণা ইত্যাদি মিলিয়ে প্রয়োজন ৩০ থেকে ৩২ জন সক্রিয় শিক্ষক। থিসিস না থাকলেও ওবিই ছাড়াও বর্তমান সিলেবাস অনুসরণ করতে গেলে প্রয়োজন পড়ে অন্তত ১৫-১৬ জন শিক্ষক। কিন্তু এ সংখ্যাটা যেন বহু বিভাগের স্বপ্ন। কোথাও শিক্ষক তিন থেকে সাতজন। কোথাও নেই প্রয়োজনীয় স্টাফও।

জাককানইবিতে বিভাগ রয়েছে ২৪টি। এর মধ্যে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে চার, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগে তিন, ফোকলোর বিভাগে ছয়, ইতিহাস বিভাগে তিন, মার্কেটিং বিভাগে চার, দর্শন বিভাগে চার, নৃবিজ্ঞান বিভাগে চার ও পরিসংখ্যান বিভাগে তিনজন শিক্ষক পাঠদান করছেন।

পপুলেশন সায়েন্সে বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী শাওন বলেন, ‘আমাদের বিভাগে বর্তমানে শিক্ষক তিনজন। স্যাররা সংখ্যায় কম হওয়ায় একসঙ্গে অনেক কোর্স নিতে বাধ্য হন, ফলে ক্লাসের মানও কমে যায়। পর্যাপ্তসংখ্যক ক্লাস না নিয়েই কোর্স শেষ করতে হয়। যথাযথ সময়ে সেমিস্টার পরীক্ষাও হচ্ছে না, সেশনজট বাড়ছে। এ সংকটে আমরা শুধু সনদ নিচ্ছি; কিন্তু সত্যিকারের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। প্রশাসনের উচিত দ্রুত যোগ্য স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ করা এবং শিক্ষিত বেকার তৈরি হওয়া বন্ধ করা।’

এ নিয়ে কথা হলে ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, ‘আমার বিভাগসহ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিভাগে শিক্ষকের প্রবল সংকট রয়েছে। একজন শিক্ষককে একাধারে ক্লাস পরিচালনা, পাঠ্যক্রমের প্রস্তুতি, খাতা দেখা, প্রশ্ন তৈরি, মানসম্মত প্রবন্ধ প্রকাশ করা, একাডেমিক, প্রশাসনিক বিভিন্ন মিটিং এবং এক্সট্রা কারিকুলার কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মতো নানা দায়িত্ব পালন করে যেতে হয়। সে ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত শিক্ষক ও প্রয়োজনীয় জনবল যদি বিভাগে না থাকে তাহলে যেমন শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়, একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রস্তাবিত আউটকাম বেসড এডুকেশন বাস্তবায়ন করাও খুবই কষ্টসাধ্য।’

এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার জানতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিভাগে শিক্ষক-সংকট আছে। শিক্ষার্থীদের গুণগত শিক্ষা দিতে গিয়ে স্বল্পসংখ্যক শিক্ষকের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ বিষয়ে ইউজিসিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। গতকালও (সোমবার) তাদের সঙ্গে কথা বলে এসেছি। আশ্বাস দিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টি তারা গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতির ক্ষমতা পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট

এলাকার খবর
Loading...