Ajker Patrika

জাল-পলো নিয়ে বলদা বিলে দল বেঁধে মাছ শিকার 

মহিউদ্দিন রানা, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) 
জাল-পলো নিয়ে বলদা বিলে দল বেঁধে মাছ শিকার 

ঘুটঘুটে অন্ধকার উপেক্ষা করেই বিলের পাড়ে জড়ো হন স্থানীয়দের পাশাপাশি আশপাশের উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে হই হুল্লোড় করতে করতে জাল-পলো নিয়ে মাছ ধরতে ঝাঁপিয়ে পড়েন শৌখিন মাছশিকারিরা। আজ রোববার ভোর থেকে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের বলদা বিলে দেখা মিলে মাছ ধরার এমন উৎসবের। এই উৎসবকে ‘হাইত’ বা গ্রামের ভাষায় ‘হাওক’ বলা হয়। 

স্থানীয়রা জানান, ঈশ্বরগঞ্জ সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে বলদা বিলের অবস্থান। বিলের বেশির ভাগ অংশ ঈশ্বরগঞ্জের মাইজবাগ ইউনিয়নের দত্তগ্রামে, কিছুটা জাটিয়া ইউনিয়নের কুমারুলে এবং এর কিছু অংশ পার্শ্ববর্তী নান্দাইল উপজেলার নান্দাইল ইউনিয়নে পড়েছে। 

উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের বলদা বিলে হাইত উৎসবহাইত উৎসবের খবর কয়েক দিন আগে থেকেই মাইকিং করে বিভিন্ন এলাকায় জানানো হয়। এ খবরে গতকাল শনিবার রাত থেকেই পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনার কেন্দুয়া, ময়মনসিংহের নান্দাইল, গৌরীপুর, উপজেলার শৌখিন মাছশিকারীরা মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে বিলের পাড়ে জড়ো হন। 

অনেকে আবার কাঁথা-বালিশও নিয়ে আসেন বিলের পাড়ে ঘুমাবেন বলে। এরপর ভোরের আলো ফোটার আগেই হই হুল্লোড় করতে করতে বিলের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন শৌখিন ওই সব মাছশিকারিরা। ভোর থেকে শুরু হয়ে এই উৎসব চলে দুপুর অব্ধি। 

এদিকে উৎসবের এই আমেজে মেতে ওঠে স্থানীয় শিশু-কিশোরসহ বয়োজ্যেষ্ঠরাও। মাছশিকারিদের জালে বোয়াল, রুই, কাতলা, টাকি মাছ বেশি উঠতে দেখা গেছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম মোস্তুফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই বিলে মাছ ধরে স্থানীয় ২৫০ থেকে ৩০০ পরিবার সারা বছরেই জীবিকা নির্বাহ করে। এরপর পানি কমে গেলে প্রতি বছরেই হাইত উৎসব হয়। মাছ ধরতে এবং দেখতে দূর দূরান্তেরা মানুষজন এখানে ছুটে আসেন। 

তিনি আরও বলেন, এই উৎসবে শামিল হতে বিল পাড়ের বাসিন্দাদের বাড়িতে একদিন আগেই এসে পড়েন আত্মীয়স্বজন। হাইতের এই দিনটিতে ঈদের মতোই আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন সবাই। এই উৎসবকে ঘিরে প্রতিটা বাড়িতেই রান্না হয় পোলাও, মাংস। 

হাইত উৎসবে মাছ ধরতে এসেছেন পার্শ্ববর্তী গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের টেঙ্গাপাড়া গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ্ব মো. আবুল কাশেম। কাশেম জানান, হাইত উৎসব হবে খবর পেয়ে গতকাল রাতে তিনি এখানে এসেছেন। বিলের পাড়ে পাটি বিছিয়ে, কাঁথা মুড়ি দিয়ে অপেক্ষা করেছেন ভোরের আলো ফোটার। ফজরের পরপরই সবার সঙ্গে নেমে পড়েন মাছ ধরতে। প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালোই মাছ পেয়েছেন তিনি। যে কারণে সারা রাতের কষ্টটা ভুলে গেছেন। 

বলদা বিলে হাইত উৎসবঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বলদা বিলে মাছ ধরতে যান শরীফ নামের এক যুবক। শরীফ বলেন, ‘জীবনের প্রথম হাইত উৎসবে অংশ নিয়েছি। মাছ তেমন না পেলেও প্রচুর পরিমাণ আনন্দ পেয়েছি। যা আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না’। 

উপজেলার জ্যৈষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম সানোয়ার রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, হাইত একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ উৎসব। বিভিন্ন খাল-বিল উন্মুক্ত জলাশয়ে হেমন্তকালের কোনো একদিন নানা বয়সী লোকজন একত্রে হয়ে মাছ ধরাকেই হাইত বলা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে সরকারের কোনো বিধি-নিষেধ নেই। তবে হাইত উৎসবকে কেন্দ্রকরে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করা এবং কোনো মালিকানাধীন জলাশয়ে জোরপূর্বক মাছ ধরার সুযোগ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুলিশ পরিচয়ে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
পুলিশ পরিচয়ে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি

পুলিশ পরিচয়ে কিশোরগঞ্জের এক সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই সাংবাদিক। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে ভুক্তভোগী সাংবাদিককে মোবাইল ফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক খায়রুল ইসলাম মাসিক কালের নতুন সংবাদের সম্পাদক ও দৈনিক নওরোজের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি। আর অভিযুক্ত জুয়েল ওরফে রুবেল ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার লংগাইর গ্রামের ছিদ্দিক মিয়ার ছেলে। হুমকি দেওয়ার সময় তিনি নিজেকে পুলিশ বলে দাবি করেন।

অভিযোগে বলা হয়, গত ২৭ আগস্ট নিকলী থানার পুলিশ কনস্টেবল বিল্লালের বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ এনে কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন এক তরুণী। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্য অভিযুক্ত বিল্লালের বক্তব্য নেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিল্লালের হয়ে জুয়েল ওরফে রুবেল পুলিশ পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন থানায় মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানি করাসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত সরকার বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়টি জানতে এ প্রতিবেদক হুমকিদাতাকে ফোন করলে নাম না বলে উল্টা ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বুয়েটের ঘটনায় অভিযুক্তের পক্ষে স্ট্যাটাস, পরে শর্তহীন ক্ষমা চাইলেন চাকসু নেতা

চবি প্রতিনিধি 
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নারীদের কটূক্তি করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শ্রীশান্ত রায় নামের এক শিক্ষার্থীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বুয়েটে ধর্ষণের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্ট দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নবনির্বাচিত নির্বাহী সদস্য আকাশ দাস। তাঁর এই পোস্ট ঘিরে ক্যাম্পাসে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া বিক্ষোভ সমাবেশও করেছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

চাকসু নির্বাচনে নির্বাহী সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেল থেকে নির্বাচিত হন আকাশ দাস। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে ধর্ষণের মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় তাঁকে ঘিরে চলছে নানা সমালোচনা। অনেকে বলছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা হারিয়েছেন।

বুয়েটে ধর্ষণের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দীর্ঘ এই ফেসবুক পোস্টের এক জায়গায় আকাশ দাস লেখেন, ‘একটা মেয়েকে কখনোই জোরপূর্বকভাবে ঘর থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা সম্ভব না, যদি না মেয়েটার আগ্রহ থাকে।’

ফেসবুকে তাঁর এমন মন্তব্যের পরপরই ক্যাম্পাসজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।

ফেসবুক পোস্টে আকাশ লেখেন, ‘সম্প্রতি বুয়েটের ধর্ষণ কান্ড নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। যে ছেলেটা ধর্ষণ করলো সবাই তার বিচার দাবি করছে। এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আমি যতটুকু বুঝি, একতরফাভাবে কখনো কাউকে দায়ী করা যায় না। ছেলেটা যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে অবশ্যই তার শাস্তি আমি দাবি করছি। কিন্তু মেয়েটা যে নির্দোষ এমনটাও তো নয়। বরং যে ধরনের ধর্ষণকাণ্ডগুলো ঘটে থাকে বেশিরভাগ মেয়েরাই ছেলেদের ফাঁসানোর জন্য ধর্ষণকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। এখানেও এমনটা ঘটেছে কি না সেটিও তদন্তের আওতায় আনা উচিত বলে আমি মনে করি।’

আকাশ দাসের এমন মন্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেছেন চাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি ইব্রাহিম রনি। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘চাকসুর নবনির্বাচিত সদস্য আকাশ দাশ (দাস) বুয়েটের ধর্ষণ ঘটনাকে ঘিরে তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে যে নিন্দনীয় মন্তব্য করেছেন, আমি তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তিনি যেন অবিলম্বে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন, এই আহ্বান জানাচ্ছি।’

ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় লেখেন, ‘আকাশ দাস চবি ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ধর্ষণকে কীভাবে নর্মালাইজড করেছে দেখেন! এরাই ক্যাম্পাসকে নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়বে।’

ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ পারভেজ লেখেন, ‘সম্প্রতি চাকসুর নবনির্বাচিত নির্বাহী সদস্য আকাশ দাশ (দাস) তার ব্যক্তিগত ফেসবুক ওয়ালে বুয়েটের ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে যে গর্হিত ও অমানবিক মন্তব্য করেছেন, আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এ ছাড়া তীব্র সমালোচনা করেছেন চাকসু নির্বাচনে বিজিত প্রার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

তীব্র সমালোচনার মুখে আকাশ দাস তাঁর পূর্ববর্তী সেই পোস্ট ডিলিট করেন এবং ক্ষমা চেয়ে আরও একটি পোস্ট লেখেন। সেই পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমার যে পোস্ট নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে আমি সে পোস্ট দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি অপরাধীর পক্ষ নিয়েছি বিষয়টি এমন নয়, বরং ঘটনাটি সম্পর্কে আমি পুরোপুরি ওয়াকিবহাল ছিলাম না।’

আকাশ বলেন, ‘আশা করি বিষয়টা আপনারা সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি সকলের কাছে শর্তহীন ক্ষমা চাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাটহাজারী থানা চত্বরে পুলিশকে আক্রমণ, শিবিরের সাবেক সভাপতি গ্রেপ্তার

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের হাটহাজারী মডেল থানা চত্বরে পুলিশকে আক্রমণ ও পুলিশি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মো. রায়হান (২৬) নামের এক শিবির নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে থানা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী মডেল থানার এসআই রুপন নাথ।

গ্রেপ্তার রায়হান হাটহাজারী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাদী চৌধুরী বাড়ির মো. আবুল কালামের ছেলে। তিনি হাটহাজারী কলেজ শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তিনি একাধিক মামলার আসামি বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাটহাজারী উপজেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক শোয়াইব চৌধুরী জানান, গ্রেপ্তার রায়হান একসময় হাটহাজারী কলেজের ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তাঁর কোনো পদ-পদবি নেই।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুর কাদের ভূঁইয়া জানান, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পৌরসভার আলীপুরের স্কুলছাত্র তানভির হত্যার আসামিদের আদালতে নেওয়া হচ্ছিল। ওই সময় শিবির নেতা রায়হানকে ছবি তুলতে ও ভিডিও ধারণ করতে থানা-পুলিশের এক কর্মকর্তা নিষেধ করেন। এতে ওই শিবির নেতা পুলিশের ওপর আক্রমণ করেন এবং পুলিশি কাজে বাধা দেন। তখন তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার রায়হানের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

তবে রায়হানকে চাকসু নির্বাচনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) কাজী তারেক আজিজ আহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।

ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের খানপুরে আবু হানিফ (৩০) নামের যুবককে হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লার মুরাদনগরের সায়েস্তারা গ্রামের ফরচান মিয়ার ছেলে বাহার (৩৬) ও তাঁর ভাই সাইদুল ইসলাম (২৫), নারায়ণগঞ্জ শহরের মেট্রোহল এলাকার শফিকুর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান জিতু (২৯)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িত অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

এ দিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নিরাপত্তাকর্মী আবু হানিফকে হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

৬৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি খোলা জায়গায় হানিফকে মাটিতে ফেলে বারবার ইট দিয়ে আঘাত করছেন কয়েকজন। অন্তত ৫-৭ জনের ওই দল দফায় দফায় তাঁকে পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

তথ্যমতে, গত সোমবার দুপুরে আবু হানিফকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে শহরের খানপুর জোড়া ট্যাংকি মাঠে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে তাঁকে দফায় দফায় মারধর করা হয়।

সন্ধ্যায় হানিফ সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাঁকে রাস্তায় ফেলে যান অপরাধীরা। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত আবু হানিফ স্থানীয় একটি বাড়ির নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরাসহ তাঁদের কয়েকজন সহযোগী আবু হানিফের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান। এরপর খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় দফায় দফায় মারধর করেন।

জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির বোন রাবেয়া বলেন, ‘দুপুরের দিকে হানিফ বাসায় শুয়ে ছিলেন। এলাকার কিছু ছেলে এসেই ভাইরে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। আমাদের কোনো কথাই শোনেনি, কী কারণে মারতেছে তাও বলেনি। অনেক পরে বলতেছে সে (হানিফ) নাকি কোন বাচ্চারে ধর্ষণ করতে চাইছে। কিন্তু কোন মেয়ে-কবে, তার কিছুই আমরা জানি না।’

নিহত ব্যক্তির ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘শুরু থেকে আমি ছিলাম না। আমি ছিলাম ডিউটিতে। দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, এলাকার কিছু যুবক ছেলে বাসায় ঝামেলা করতেছে। ফোন পাইয়া আমি বাড়িতে আসি। বাসায় আসার পর ওই ছেলেরা আমাকে ধইরা খানপুর জোড়া টাংকির মাঠে নিয়ে আসে। তখন দেখি, আমার সম্বন্ধীর (হানিফ) ভেতরে বসাইয়া রাখছে। ১০-১২ জন যুবক পোলাপান ছিল। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামের স্থানীয় একজনকে চিনেছি। সন্ধ্যায় হানিফ ভাইরে অটোতে তুলে কোথায় যেন নিয়ে চলে যায়। অনেক পরে আমরা তাঁরে হাসপাতালে পাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত