Ajker Patrika

রাস্তা কেটে দিয়েছেন জমির মালিকেরা, আড়াই কোটি টাকার ব্রিজ অকেজো 

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪, ০৯: ৪১
Thumbnail image

ময়মনসিংহের ত্রিশালে রাস্তা কেটে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এক সপ্তাহ ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কয়েক গ্রামের হাজারো মানুষ। এর ফলে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি ব্রিজও কার্যত অকেজো হয়ে পড়েছে। ঘটনাটি উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী ইজারাবন্দ গ্রামের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কের চিকনা ভায়া ছলিমপুর সড়কটির প্রায় তিন কিলোমিটার পাকা। এরপর প্রায় ২০০ মিটার কাঁচা রাস্তার পরই অলহরী নদীর (নাগেশ্বরী নদী) ওপর প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে এলজিইডির একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে।

এই ব্রিজ ব্যবহার করে মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী ইজারাবন্দ, জয়দা, ধূরধূরিয়া (ফুলবাড়িয়া) গ্রামের বিপুলসংখ্যক জনসাধারণ যাতায়াত করে। দীর্ঘদিন অস্থায়ী বাঁশ-কাঠের তৈরি ব্রিজে চলাচল করা বিপুলসংখ্যক মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সম্প্রতি ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। 

কিন্তু সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী ত্রিশাল ইউনিয়নের ছলিমপুর গ্রামের কয়েকজন অটোস্ট্যান্ড নিজেদের এলাকায় রাখতে রাস্তা কেটে ফেলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ত্রিশাল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন এলাকাবাসী।

তবে এ বিষয়ে উল্টো কথা বলছেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, অটোস্ট্যান্ড নিয়ে কথা হলেও মূল বিষয় ব্রিজ হওয়ার আগে ওই পাড়ের লোকজন টাকা দেওয়ার কথা বলে রাস্তার জন্য জমি নিয়েছিলেন। এখন তাঁরা টালবাহানা করছেন।

জমিদাতা পরিবারের লোক দেলোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সবার সুবিধার কথা চিন্তা করে অটোস্ট্যান্ড নিয়ে একটা আলোচনা হয়েছিল। আমরা চেয়েছিলাম সবার সঙ্গে বসে যেভাবে সুবিধা হবে সেভাবে করতে। কিন্তু মূল বিষয় সেটা না, মূল বিষয় হলো তাদের কথা অনুযায়ী জমির মূল্য হিসেবে টাকা দেওয়ার শর্তে আমরা তাদের জমির ব্যবস্থা করে দেই। এখন বেশ কয়েকবার তারিখ করেও টাকা না দিয়ে তারা টালবাহানা করছে। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারও জানে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ত্রিশাল ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. হাসিমুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি শোনার পরে আমি ওখানে গিয়ে কাউকে পাইনি। আশপাশের লোকজন বলল, জমিদাতাদের না জানিয়েই রাস্তার মাপ নেওয়ায় জমিদাতারা রাগ করছেন।’

রাস্তার সংযোগ ছাড়াই ব্রিজ হয়েছে জানিয়ে এই ইউপি সদস্য আরও বলেন, ‘ব্রিজ হওয়ার আগে ওখানে কোনো রাস্তা ছিল না, পরে আমি রাস্তা করে দিয়েছি। তবে রাস্তা কেন কাটল, সেটা আমি বলতে পারব না।’

ত্রিশাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি অবগত না। তবে শুনেছি রাস্তা কেটেছে। খোঁজ নিয়ে দেখব। যদি রাস্তা কেটে থাকে, তবে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’ 

ত্রিশাল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল আহমেদকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত