Ajker Patrika

সড়কঘেঁষা দুই বিদ্যালয়, সীমানাপ্রাচীর না থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি

মো. জাকিরুল ইসলাম, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) 
সড়কঘেঁষা দুই বিদ্যালয়, সীমানাপ্রাচীর না থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি

সড়ক ঘেঁষে পাশাপাশি রয়েছে দুটি বিদ্যালয়। একটি প্রাথমিক, অন্যটি মাধ্যমিক। বিদ্যালয় দুটিতে রয়েছে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী। কোনো প্রাচীর না থাকায় সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের দাবি দ্রুত সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের। 

বিদ্যালয় দুটি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় সদর থেকে নড়াইল-শাকুয়াই ইউনিয়নের প্রধান সড়কের খরমা এলাকার খরমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাঘমারা খরমা কুমুরিয়া (বিকেবি) উচ্চবিদ্যালয়। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থীরা খেলা ও ছোটাছুটি করছে। বিদ্যালয়টির পাশে রয়েছে বাজার। সড়কটি উপজেলার নড়াইল, শাকুয়াই ও বিলডোরা এলাকার মানুষ যাতায়াত করায় অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনের চাপ থাকে বেশি।

এদিকে সীমানাপ্রাচীর না থাকায় শিশুশিক্ষার্থীদের সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ার আশঙ্কা করছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ অভিভাবকেরা। 

বিদ্যালয় দুটি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৭ সালে নড়াইল ইউনিয়নে ৫০ শতাংশ জমিতে ওই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে সেখানে ছয়জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৩৯ জন। পাশে রয়েছে বিকেবি উচ্চবিদ্যালয়। এতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৯০ জন। ১৯৭২ সালে স্থাপন করা হয় এ বিদ্যালয়।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা জানান, সড়ক লাগোয়া বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ। সীমানাপ্রাচীর না থাকায় শিক্ষার্থীরা মাঠে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার সময় বল সড়ক পেরিয়ে যায়। শিশুরা কোনো কিছু না বুঝেই সেই বল দৌড় দিয়ে সড়ক থেকে আনতে যায়। এভাবে বল আনতে গিয়ে এর আগে পাঁচ শিশু অটোরিকশার ধাক্কায় আহত হয়েছে। ২০১৮ সালে এক শিশু দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। স্কুলের সীমানাপ্রাচীর দেওয়া হলে শিশুশিক্ষার্থীরা অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত থাকবে। 

খরমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফি সাদিক খান বলে, টিফিনের সময় রাস্তার ওপারে বাজারে দোকানে যেতে ভয় হয়। 

একই শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাফাত বলে, স্কুলের মাঠে ফুটবল খেলাই। বল রাস্তার ওপারে যায়। একদিন বল আনতে গিয়ে রাস্তায় অটো ধাক্কা দিয়েছে। 

সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আলিফ ইমরান বলে, এই সড়কে অটোরিকশা চলাচল বেশি করে। সীমানাপ্রাচীর না থাকায় সড়ক পার হতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। এমনকি খেলার সময়ও ঝুঁকিতে থাকতে হয়।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আব্দুর রশিদ বলেন, একসঙ্গে দুটি বিদ্যালয় এখানে। একদিকে রাস্তাটি সরু, অন্যদিকে অতিরিক্ত গাড়ি চলাচল করে। সীমানাপ্রাচীর থাকলে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা অনেকটা কমে যাবে। 

বিকেবি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন খান বলেন, শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় মাঠে খেলাধুলা করে। সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়। সীমানাপ্রাচীর খুব জরুরি। 

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিপ্রা দেবী বলেন, দুটি বিদ্যালয়েরে একটি মাঠ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় মাঠে দৌড়াদৌড়ি করে। সীমানাপ্রাচীর করা দরকার। 

বিকেবি উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন মানিক বলেন, বিদ্যালয়টি প্রধান সড়ক ঘেঁষে হওয়ায় সীমানাপ্রাচীর অতি প্রয়োজন। 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেলিমা আক্তার খাতুন বলেন, উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়কে পর্যায়ক্রমে সীমানাপ্রাচীরের আওতায় আনা হবে। বিশেষ করে কোনো বিদ্যালয়ের পাশে বাজার থাকলে কিংবা জমি দখল হওয়ার আশঙ্কা থাকলে সে ক্ষেত্রে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক সায়েম জানান, এ ব্যাপারে তিনি অবগত রয়েছেন। বিদ্যালয়টির সীমানাপ্রাচীর নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেলুয়ার হোসেন বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার জানা নেই। সীমানাপ্রাচীরের বরাদ্দ উপজেলা পরিষদ থেকে দেওয়া হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

চাকরিতে কোটা: সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আসছে সমান সুযোগ

রাজপথের চাপে কোনো বিচার করা সম্ভব নয়: চিফ প্রসিকিউটর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

News Hub