Ajker Patrika

৪২ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি জামালপুর আন্তজেলা বাস টার্মিনালে

জামালপুর প্রতিনিধি 
কাদা-পানিতে একাকার জামালপুর আন্তজেলা বাস টার্মিনাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাদা-পানিতে একাকার জামালপুর আন্তজেলা বাস টার্মিনাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

নির্মাণের ৪২ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি জামালপুর আন্তজেলা বাস টার্মিনালে। শহরের দড়িপাড়া এলাকায় জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এ টার্মিনালটি এখন জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত জায়গার মতো দেখায়।

টার্মিনাল ভবনের অবস্থাও করুণ। দেয়ালে ফাটল, ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে—সব মিলিয়ে যাত্রীদের মধ্যে সব সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা। নেই কোনো যাত্রীছাউনি, বিশ্রামাগার, খাবারের হোটেল কিংবা টয়লেট। টার্মিনাল এলাকাজুড়ে কাদামাটি আর আবর্জনায় ভরা। যদিও জেলা পরিষদ জানিয়েছে, টার্মিনাল উন্নয়নে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে।

জামালপুর থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে সড়কপথে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই বাস টার্মিনাল। এখান থেকে প্রতিদিন টাঙ্গাইল, ঢাকা, বগুড়া, পাবনা, বেনাপোলসহ ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল করে। কিন্তু টার্মিনালের নোংরা পরিবেশ ও ভঙ্গুর অবকাঠামোর কারণে চালক, শ্রমিক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

চালক ও যাত্রীরা জানান, টার্মিনালের ভেতরে প্রবেশ করা কঠিন। রাস্তায় দাঁড়িয়েই গাড়িতে উঠতে হয়। টার্মিনালের ভেতরে পানি, কাদা ও আবর্জনায় চলাচল প্রায় অসম্ভব। নেই কোনো টয়লেট বা খাবারের দোকান। চালক ও শ্রমিকদের থাকার ব্যবস্থা নেই। ঝড়-বৃষ্টিতে আশ্রয় নেওয়ার মতো কোনো ছাউনিও নেই।

চালক ফরমান খান বলেন, ‘বাংলাদেশে এমন নোংরা বাস টার্মিনাল আর কোথাও দেখিনি। গাড়ি থেকে নেমে বিশ্রামের কোনো সুযোগ নেই। গোসলের ব্যবস্থা, খাবার—কিছুই নেই। পুরো টার্মিনালই জরাজীর্ণ। এই কারণে অনেক যাত্রী আসতেই চায় না।’

শ্রমিক জনি বলেন, ‘দেশের অনেক জেলায় যাই। সব টার্মিনালেই খাবারের ব্যবস্থা থাকে। জামালপুরে আসলে মনে হয় ময়লা-আবর্জনার মধ্যে চলে এসেছি। আগের সরকার অনেক কিছু উন্নয়ন করেছে, কিন্তু এই টার্মিনালের কোনো উন্নয়ন হয়নি। অথচ এটি জেলার একমাত্র বাস টার্মিনাল। দ্রুত উন্নয়ন প্রয়োজন।’

কাদা-পানিতে একাকার জামালপুর আন্তজেলা বাস টার্মিনাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাদা-পানিতে একাকার জামালপুর আন্তজেলা বাস টার্মিনাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

এক নারী যাত্রী বলেন, ‘পরিস্থিতি খুব খারাপ। গাড়ি থেকে নামতে পারি না। টয়লেট নেই। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে নামতে হলে অনেক কষ্ট হয়। টার্মিনালে কাদা থাকার কারণে বাস ঢুকেও না। খাবার বা থাকার কোনো ব্যবস্থাও নেই।’

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবু বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে টার্মিনালের কোনো কাজ হয়নি। তাই অবস্থা খুবই খারাপ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমরা ৮০ লাখ টাকা উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করেছি। প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারা বড় প্রকল্প হিসেবে এটিকে প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠিয়েছে। অনুমোদন পেলে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ শুরু করব।’

কাদা-পানিতে একাকার জামালপুর আন্তজেলা বাস টার্মিনাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাদা-পানিতে একাকার জামালপুর আন্তজেলা বাস টার্মিনাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানা গেছে, জাতীয় পার্টির সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে তৎকালীন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজা খান ১৯৮৩ সালে টার্মিনালটি নির্মাণ করেন। ২ একর ৮৮ শতাংশ জমির ওপর একতলা ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্বে ১৮৬ দেশের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ মাত্র একটি: গবেষণা

একচেটিয়া ভাতা লেনদেনের সুবিধা হারাচ্ছে ‘নগদ’

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধান বিচারপতি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগের নাটক সাজানো হয়: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

আপনার ছেলেমানুষি মানায় না: প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে দুদু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত