Ajker Patrika

সব থাকলেও হয় না খেলাধুলা, ভবনে হয় চাল বিতরণ

মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
সব থাকলেও হয় না খেলাধুলা, ভবনে হয় চাল বিতরণ

বিশাল খেলার মাঠ, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নামে রয়েছে ভবন, আছে ক্রীড়া সংস্থার কমিটিও। কিন্তু বছরজুড়ে খেলাধুলার কোনো আয়োজন নেই। নিজেদের চাঁদার টাকায় খেলার সামগ্রী কিনে খেলাধুলা করেন তরুণেরা। সব আয়োজন থাকার পরও ব্যবহার করার সুযোগ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ তাঁরা। 

এমন চিত্র নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ক্রিয়া সংস্থার। কাগজে কলমে সংস্থাটির অস্তিত্ব থাকলেও বাস্তবে কোনো কার্যক্রম নেই। পৌরশহরের মাইলোড়া এলাকায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের বিশাল মাঠ ও ভবন থাকলেও নেই কোনো খেলার আয়োজন। ক্রীড়া সংস্থার কমিটি থাকলেও তাদের কোনো কার্যক্রম নেই। তিন বছর মেয়াদি এ কমিটি বহু আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলেও কোনো সভা ডাকা হয়নি। কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ভুলেই গেছেন তাঁদের দায়িত্ব! 

বর্তমানে যতটুকু খেলাধুলা হয়, তার সবটুকুই নিজেদের উদ্যোগে। মিনি স্টেডিয়ামের ভবনটিতে বর্তমানে ওএমএসের চাল বিতরণ করা হয়। 

এলাকার তরুণদের নিয়ে প্রায়ই খেলাধুলার আয়োজন করেন কামরুল ইসলাম ও আমিরুল ইসলাম মানিক নামে দুই সাবেক খেলোয়াড়। খেলার প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা থেকেই তাঁদের এ উদ্যোগ। তাঁরা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এখানে মাঠ থাকলেও খেলাধুলার কোনো আয়োজন নেই। এমনকি খেলার সরঞ্জাম কিনে দেওয়া বা উদ্বুদ্ধ করার মতোও কেউ নেই। আমরা নিজেরা চাঁদা তুলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে টুকটাক খেলাধুলা করি। ক্রীড়া সংস্থা বা সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নিয়ে টুর্নামেন্ট ছাড়া হলে তরুণেরা খেলাধুলায় আগ্রহী হতো। করোনার সময়টাতেও আমরা নিজের চেষ্টায় খেলাধুলাটা চালু রেখেছি। এতে করে শিক্ষার্থীরা খারাপ অভ্যাসে জড়াবে না। সুস্থ মনমানসিকতা বজায় রাখা ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন তাঁরা। 

তিন বছরের বেশি সময় আগে মোহনগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার কমিটি গঠন করা হয়েছিল। পদাধিকার বলে এ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ নেতা আবু ফয়েজ চৌধুরী কেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরেক আওয়ামী লীগ নেতা এমদাদুল ইসলাম খোকন। তবে এ কমিটি কত সদস্য বিশিষ্ট হয়েছিল তার তথ্য জানেন না সংশ্লিষ্টরা। 

স্থানীয় তরুণদের দাবি, ক্রীড়া সংস্থার কমিটির বড় পদগুলোতে ক্রীড়া প্রেমীদের রাখা হোক। তাতে খেলাধুলার প্রতি তাঁদের টান থাকবে। এভাবে রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হলে এমন দশাই হবে! 

বিশাল মাঠ খা খা পড়ে আছে, তরুণেরা খেলাধুলা করেন চাঁদা তুলেক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘খেলাধুলার আয়োজন হলে তরুণেরা এ দিকে আকৃষ্ট হবে। ফলে শারীরিক ফিটনেসের পাশাপাশি মাদক থেকেও দূরে থাকবে। তবে দুঃখজনক হলো-তিন বছর মেয়াদি ক্রীড়া সংস্থার কমিটি গঠন করার পর এর মেয়াদ চলে গেছে তবু আজ পর্যন্ত একটি সভাও হয়নি। এটি শুধু নামের কমিটি। কাজ বলতে কিছুই হয়নি। এত বড় মাঠ, ভবন তবুও খেলার কোনো আয়োজন নেই। খেলার জন্য এক বেশি বাজেট বরাদ্দের দরকার নেই।’ 

এই নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবু ফয়েজ চৌধুরী কেনু বলেন, ‘খেলাধুলার জন্য আমাদের কোনো বাজেট নেই। আর এখন তো ফুটবল খেলার সময় না। ফুটবল খেলার সময় (বর্ষাকাল) এলে সেটা হয়তো দেখা যেতে পারে। ক্রিকেট খেলাতে ঝগড়া হয়। তাই ক্রিকেট খেলার টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয় না। তবে বাজেটের জন্য ইউএনওকে অনেকবার বলেছি, অনেক রেজ্যুলেশন করেছি। কিন্তু কোনো বাজেট বরাদ্দ পাইনি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ইউএনও সাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, ‘খেলাধুলার সরঞ্জামাদি কেনার কোনো বাজেট নেই। ক্রীড়া সংস্থার কমিটির মেয়াদও হয়তো শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক করে গুছিয়ে নিয়ে বাজেট বরাদ্দ সংগ্রহ করে সরঞ্জামাদি কিনে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে আরেকটি প্রক্সি ওয়ারে জড়াতে চায়: ফরহাদ মজহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত