Ajker Patrika

বরের ব্যতিক্রমী শখ, পুকুরের ওপর সাজানো হয় বাসরঘর

শেরপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২২, ১৯: ০৩
বরের ব্যতিক্রমী শখ, পুকুরের ওপর সাজানো হয় বাসরঘর

বিয়েবাড়িতে বিশেষ গুরুত্ব পায় বর-কনের জন্য বাসরঘর সাজানোর দিকটি। সাধারণত কোনো একটি ঘরকে বিভিন্নভাবে সাজানো হয়ে থাকে বাসরঘর হিসেবে। তবে গতকাল শুক্রবার একটি বিয়েতে বাসরঘর তৈরি করে সাজানো হয়েছে। আর তা হয়েছে একটি পুকুরের ওপরে। 

পুকুরের ওপর ব্যতিক্রমী এই বাসরঘর বানিয়ে নজর কেড়েছেন শেরপুরের মো. হালিম মিয়া (২৫) নামে এক ঝালাই ওয়ার্কশপ শ্রমিক। নিজের বিয়েতে ব্যতিক্রমী কোনো আয়োজনের শখ থেকে তৈরি করা হয় এই বাসরঘর। সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের সাতানীপাড়া এলাকায় এ আয়োজন করেন হালিম মিয়ার নানা, চাচাসহ কয়েকজন। এই বাসরঘরের খবরটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেটি দেখতে ভিড় জমাতে শুরু করে স্থানীয়সহ আশপাশের এলাকার লোকজন। 

বিয়েবাড়ির পাশের পুকুরের ওপর তৈরি করা বাসরঘরপরিবার সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের সাতানীপাড়া এলাকার মো. আবদুল হামিদের ৯ ছেলেমেয়ের মধ্যে সবার ছোট মো. হালিম মিয়া। তিনি পেশায় একটি ওয়ার্কশপের ঝালাই শ্রমিক। তাঁর ইচ্ছা ছিল সীমিত সাধ্যের মধ্যে ব্যতিক্রমীভাবে নিজের বিয়ের আয়োজন করার। সেই ইচ্ছা থেকেই এমন ভিন্ন আয়োজনের কথা মাথায় আসে তাঁর। পরে তাঁর নানা, চাচাসহ কয়েকজন মিলে বাড়ির পাশে পুকুরের ওপর বাসরঘর তৈরির কাজ শুরু করেন। ঘরটি সম্পন্ন হওয়ার পর সেটির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘরটি দেখতে ভিড় জমাতে শুরু করেন আশপাশের লোকজন। অনেকেই ঘরের ভেতরে ও পুকুরের পাড় থেকে সেলফি তোলেন। 

বর মো. হালিম মিয়া বলেন, ‘আমার বিয়ের কথা চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে ব্যতিক্রমী কিছু করার বিষয় মনে হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে আমার নানা, চাচাসহ বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলি। তারা পুকুরের পানির ওপর বাসরঘর তৈরি করার উদ্যোগ নেয়। গত চার-পাঁচ দিন ধরে আমার নানা, চাচাসহ কয়েক বন্ধু আমাদের বাড়ির পাশে পুকুরের ওপর খুব কষ্ট করে এই বাসরঘর তৈরি করেন। পরে আস্তে আস্তে আশপাশের মানুষ বাসরঘরটি দেখতে আমার বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করে। বিষয়টি আমার কাছে খুব ভালো লাগছে।’

 বিয়েবাড়ির পাশের পুকুরের ওপর তৈরি করা বাসরঘরহালিমের ভাতিজা রূপন ফরাজি ও সোহেল সরকার বলেন, ‘আমাদের চাচার ইচ্ছা ছিল ব্যতিক্রমীভাবে বিয়ে করবেন। পরে তাঁর বিয়ে ঠিক হলে আমরা পারিবারিকভাবে কয়েকবার বসে সিদ্ধান্ত নিই কী করা যায়। একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয় পানির ওপরে বাসরঘর করার। পরে বাড়ির পাশের পুকুরের মাঝখানে বাসরঘর তৈরির কাজ শুরু হয়। বানানোর সময় অনেকেই আজেবাজে কথা বলেছে। তবে ঘরটি সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেলে এই বাসরঘর দেখতে মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করে।’ 

পার্শ্ববর্তী টাংগারপাড়া এলাকা থেকে বাসরঘরটি দেখতে আসা তরুণ শোয়াইব রহমান বলেন, ‘এর আগে আমার জীবনে এমন বাসরঘর দেখি নাই। এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পেরে দেখতে এসেছি। আসলেই বিষয়টি অন্যরকম।’ 

বিয়েবাড়ির পাশে পুকুরের ওপর তৈরি করা বাসরঘরহেরুয়া তালুকপাড়া থেকে আসা মো. খায়রুল বাশার বলেন, ‘পানির মধ্যে বাসরঘর তৈরির আইডিয়াটি সত্যিই চমৎকার। ঘরটি খুব ভালো হয়েছে।’ একই কথা জানান শেরপুর শহর থেকে ঘর দেখতে যাওয়া কবির আহমেদ, মেহেদী হাসানসহ বেশ কয়েকজন যুবক। 

এ বিষয়ে চরশেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সেলিম মিয়া আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে এমন একটি ব্যতিক্রমী বাসরঘর তৈরি করায় মানুষের মাঝে বেশ সাড়া পড়েছে এবং হইচই শুরু হয়েছে। আমি নিজেও কখনো পানির ওপর তৈরি এমন বাসরঘর দেখিনি। বাসরঘরটি দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে। এমন বাসরঘরের বিষয়টি নিয়ে পুরো ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত