Ajker Patrika

নান্দাইলে গ্রেপ্তার-আতঙ্কে বাড়িছাড়া ৮ গ্রামের বিএনপি নেতা-কর্মীরা

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯: ৫৬
নান্দাইলে গ্রেপ্তার-আতঙ্কে বাড়িছাড়া ৮ গ্রামের বিএনপি নেতা-কর্মীরা

কেউ শ্বশুরবাড়ি, কেউ বোনের, কেউবা অন্য কোনো আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আত্মগোপনে। ৭ ডিসেম্বর হরতাল-অবরোধের সমর্থনে মিছিল বের করলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়। এরপর ছয় দিন ধরে গ্রেপ্তার-আতঙ্কে এলাকাছাড়া দলের এসব নেতা-কর্মী।

সেদিনের সংঘর্ষে পুলিশসহ বিএনপির প্রায় ৪৫ নেতা-কর্মী আহত হন। পরে রাতেই বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিএনপির ১১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।

মামলার পর ঘটনাস্থলের আশপাশের গ্রামের বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার-আতঙ্কে রয়েছেন। সরেজমিন ঘুরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের উত্তরপালাহার, আতকাপাড়া, রামজীবনপুর, মোয়াজ্জেমপুর, সৈয়দগাঁও, নয়নপুর, কালেঙ্গা, বাহাদুরপুর গ্রামের বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাড়িছাড়া। এ অবস্থায় বর্তমানে মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের এসব গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এদিকে গত রোববার দুপুরে প্রভাস বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক ইমামুল হক কাঞ্চনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তা ছাড়া আসামি ধরতে পুলিশ বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিএনপি করার জন্য দুই ভাই ও এক চাচা তিন-চার মাস ধরে বাড়িছাড়া। আমিসহ বাড়ির মহিলারাও পুলিশের ভয়ে আতঙ্কে আছি।’

শাহাদাত হোসেন রাব্বি নামের এক ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘আমি অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। মা নেই, বাবা তেমন খোঁজ নেন না। ছোট এক প্রতিবন্ধীসহ তিন বোন রান্না করে খাওয়ায়। আমি রাজনীতিতে এসেছি কিছুদিন হলো। বড় নেতাও হতে পারলাম না। তারপরও নাশকতার দুই মামলার আসামি করা হয়েছে আমাকে। এখন গ্রেপ্তারের ভয়ে ছোট বোনদের রেখে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’

বাবু খান বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার দিন বাড়িতে থাকার পরও আমিসহ এক চাচাতো ভাইকে মামলার আসামি করা হয়েছে। এখন তো গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়িছাড়া।’

মোয়াজ্জেমপুর সাহেববাড়ি ও ইউনিয়ন পরিষদ বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের মামলার ঘটনায় বাজারে লোকজন কমে গেছে। পুলিশের ভয়ে আতঙ্কে রয়েছে অনেকে।

ময়মনসিংহ উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুলিশের মামলায় পরিবার ছেড়ে গ্রেপ্তার-আতঙ্কে বাড়িতে থাকতে পারি না। অপরাধ একটাই, বিএনপির রাজনীতি করি। ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশের মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি থাকায় সাধারণ মানুষজন পুলিশ দেখলেই দৌড়াদৌড়ি শুরু করে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈদেশিক সম্পর্কিত সদস্য ইয়াসের খান চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের এলাকাছাড়া করা হয়েছে। এখানে অনেক নিরীহ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে নেতা-কর্মীরা এই শীতে কষ্টে রাত কাটাচ্ছেন। সরকার মামলা দিয়ে বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করতে চাচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নান্দাইল মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওবায়দুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নির্দোষ কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এ পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত