Ajker Patrika

কুয়েট বন্ধ: আবাসিক হল ছাড়েননি প্রায় দুইশ শিক্ষার্থী

খুলনা প্রতিনিধি
কুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পর আজ বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল ছাড়েন। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পর আজ বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল ছাড়েন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পরও অন্তত দুইশ শিক্ষার্থী আবাসিক হল ছাড়েননি। অসচ্ছলতাসহ নানা কারণে এসব শিক্ষার্থী হল ছাড়তে পারছেন না বলে দাবি করেছেন। আজ বুধবার সন্ধ্যার দিকে বিভিন্ন আবাসিক হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

কর্তৃপক্ষের আদেশ অনুযায়ী বুধবার সকাল ১০টার আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি আবাসিক হল ছাড়তে শুরু করেন। তবে সন্ধ্যায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন হলে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছেন বলে দাবি করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাছুদ বেলা দেড়টার দিকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থী হলে রয়েছেন, তাঁদের চলে যাওয়ার জন্য জোর করা হবে না। তাঁদের বোঝানো হবে। তবে কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম যেহেতু বন্ধ, প্রাচীরগুলোও ভাঙা, ভালো নিরাপত্তাও নেই। ফলে নিরাপত্তার জন্যই তাঁদের চলে যাওয়ার জন্য বোঝানো হবে। তারপরও তাঁরা হলে থেকে গেলে, তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। কোনো ধরনের জোরাজুরি করা হবে না।’

যদিও এর আগে উপাচার্য বলেছিলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা হল খালি করেছি। হলে কোনো রান্নাবান্না হবে না। আশপাশের হোটেলও বন্ধ থাকছে। কাজেই হলে যদি কোনো শিক্ষার্থী থাকতে চায়, তাহলে তার নিজ দায়িত্বে থাকবে। এখানে আমাদের কোনো দায়দায়িত্ব নেই।’

এর আগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুয়েট কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে। বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে আবাসিক হল খালি করা এবং একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

সকাল ৮টার দিকে কুয়েট ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করছেন। এ সময় আশিকসহ বেশ কয়েক শিক্ষার্থী জানান, প্রশাসন হল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে এবং একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। নিরাপত্তার কথা ভেবে এবং বাড়িতে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা লাঘব করতে আমরা হল ত্যাগ করছি। তবে উপাচার্য, সহ-উপাচার্যের পদত্যাগসহ তাঁদের যে ৬ দফা দাবি রয়েছে, সেই দাবির আন্দোলন চলমান থাকবে।

শহীদ স্মৃতি হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থী মো. ওবায়দুল্লাহ বিকেল ৫টার দিকে বলেন, আমাদের হলে এখনো ৫০ শিক্ষার্থী রয়েছেন। সাতটি হল মিলিয়ে এখনো অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। এক মাস পরেই ঈদ আসছে, অনেকের আর্থিক অবস্থা ভালো না, কেউ কেউ টিউশনি পেশার সঙ্গে জড়িত–এসব কারণে এসব শিক্ষার্থী হল ছেড়ে যাননি। আমরা আজ এবং কাল (বৃহস্পতিবার) হলে থাকব। এরপর সিদ্ধান্ত নেব, কী করা যায়।’

ওবায়দুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, ‘দুপুরে হলগুলোতে পানি সরবরাহ ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টা পর আবার সরবরাহ করায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুয়েটের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। এর মধ্যে ২ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি হলে আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। বাকি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের মেসে থাকেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তবে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে কুয়েটের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি-নর্থ) মো. নাজমুল হাসান রাজীব বলেন, ‘কুয়েট ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’

১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল ও বহিরাগতদের সঙ্গে কুয়েট শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সেই থেকে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণবিষয়ক পরিচালকের পদত্যাগ, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা, সংঘর্ষে জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিল ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

পরপর সংঘর্ষে উড়ে গেল বাসের ছাদ, যাত্রীসহ ৫ কিমি নিয়ে গেলেন চালক

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত