Ajker Patrika

সন্তান প্রসবের ২ ঘণ্টা পরই কেন্দ্রে হাজির এসএসসি পরীক্ষার্থী

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
সন্তান প্রসবের ২ ঘণ্টা পরই কেন্দ্রে হাজির এসএসসি পরীক্ষার্থী

সন্তান জন্মের কয়েক ঘণ্টা পর পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে এক ছাত্রী। আজ মঙ্গলবার সকাল ৮.৩০ মিনিটে সন্তান প্রসবের পর নিজের ইচ্ছের জোরে পরীক্ষা শুরুর আগেই কেন্দ্রে উপস্থিত হয় পরীক্ষার্থী মেঘলা খাতুন। এদিকে ওই ছাত্রীর মনোবল নিয়ে স্থানীয়রাসহ চিকিৎসকেরা প্রশংসার দাবি করলেও তার বাল্যবিয়ের বিষয়টি সামনে আসায় কিছুটা বিব্রত অভিভাবকেরা। মেঘলা খাতুনের বাড়ি কুষ্টিয়ার চড় মিলপাড়ার গড়াই আবাসন এলাকায়।

কুষ্টিয়ার পূর্ব মিলপাড়ার নগর মাতৃসদন হাসপাতালে একটি ছেলে শিশুর জন্ম দেয় আলাউদ্দিন আহামেদ ক্যাডেট স্কুলের ছাত্রী মেঘলা খাতুন। সে কুষ্টিয়া হাই স্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল। 

স্থানীয়রা বলছে, ২০২১ সালের ১৫ মার্চ বিয়ে হয় মেঘলা খাতুনের। তার স্বামী আল আমিন একটি কারখানায় কাজ করেন। বিয়ের পরও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ায় সে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। আগের পরীক্ষাগুলো ঠিকভাবে দিলেও মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে তার প্রসব ব্যথা শুরু হয়। সকাল ৭টার দিকে কুষ্টিয়ার পূর্ব মিলপাড়ায় অবস্থিত নগর মাতৃসদন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এরপর সকাল ৮.৩০ মিনিটে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় সে। এর কিছুক্ষণ পর মেঘলা খাতুন শারীরিকভাবে সুস্থ বোধ করলে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা পোষণ করে। পরে পরীক্ষা পরিচালনা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরে পরীক্ষা শুরুর আগে ১০.৩০ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর সে যথাসময়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

পরীক্ষার্থী মেঘলা খাতুন জানায়, ‘আমি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও এখানকার ডাক্তার ও স্টাফরা আমাকে মানসিকভাবে সাহস জুগিয়েছেন। এখানকার সেবার মান অনেক উন্নত। তাই আমি আমার সন্তানকে আমার মায়ের কাছে রেখে পরীক্ষা দিতে গিয়েছি। স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি।’

এ বিষয়ে মাতৃসদন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ সুমাইয়া শারমিন বন্যা বলেন, ‘সন্তান জন্ম দেওয়ার পর আমরা মেঘলা খাতুনের শারীরিক পরীক্ষা করে তাকে পরীক্ষার হলে পাঠাই। পরীক্ষা শেষে আবার এখানে চিকিৎসা নিতে চলে আসেন তিনি। তার নবজাতক শিশু সন্তানটিও ভালো আছে।’

হাসপাতালের প্রজেক্ট ম্যানেজার রাহেলা পারভিন বলেন, ‘আমিসহ আমাদের সকল স্টাফ আজকে খুবই আনন্দিত। কারণ একজন পরীক্ষার্থী আমাদের এখানে সুস্থভাবে সন্তান জন্ম দিয়ে হলে গিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পেরেছে। ওই শিক্ষার্থীর শক্ত মনোবলের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। আমরা শুধু এ কাজে তাকে সাহায্য করেছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত