Ajker Patrika

লালন ফকির ও হাসন রাজার অনুষ্ঠান জাতীয়ভাবে পালন করা উচিত: মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ মে ২০২৫, ১৭: ৪৮
সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী। ছবি: সংগৃহীত
সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী জাতীয় আয়োজনের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘জমিদারি সূত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে আসতেন। সেখানকার মানুষের সঙ্গে তাঁর আলাদা একটি সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সেটা ছিল জাগতিক ও ইন্টেলেকচুয়াল। রবীন্দ্রনাথের অনেক চিঠিপত্রে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের প্রকৃতির টানের পাশাপাশি এ দেশের একদল ভাবুক মানুষের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। বিশেষ করে গগন হরকরা।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘আমাদের দেশের নিজস্ব সংস্কৃতির প্রাথমিক অভিব্যক্তি হলো গান। আমাদের দেশের মানুষ যখন আনন্দ পায়, দুঃখ পায় কিংবা অনুভূতি জানাতে চায়, তখন তাদের প্রাথমিক অভিব্যক্তি হয় গান। আমি এইগুলোকে শুধু গান হিসেবে না দেখে কবিতা ও দর্শন হিসেবে দেখতে বলব। তাহলেই আমরা বুঝতে পারব আমাদের এই অঞ্চলের দর্শন ও ভাবের গভীরতা কতটুকু ছিল।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমার চোখে আপনাদের অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দার্শনিক ও গানের মানুষ হলো লালন ও সিরাজ। আমরা যেমন রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করছি, নজরুলজয়ন্তী পালন করছি, তেমনি আমাদের হীনম্মন্যতা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন বাংলাদেশে লালন ফকির ও হাসন রাজার অনুষ্ঠান জাতীয়ভাবে পালন করা উচিত বলে আমি মনে করি।’

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফরহাদ সিদ্দিক, ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক মনসুর মুসা, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বক্তব্য দেন।

আলোচনা শেষে মূল মঞ্চে রবীন্দ্রসংগীত, কবিতা আবৃত্তি, দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করবেন কুষ্টিয়া জেলা ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ের রবীন্দ্র শিল্পীরা। এর আগে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের কণ্ঠে জাতীয় ও রবীন্দ্রসংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এবারের আয়োজনে কুঠিবাড়ির মূল মঞ্চে প্রতিদিনই আলোচনা সভার পাশাপাশি রবীন্দ্রসংগীত, কবিতা আবৃত্তি, দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করা হবে। সঙ্গে কুঠিবাড়ি চত্বরে বসেছে বিশাল গ্রামীণ মেলা। নানা রকম পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।

এদিকে তিন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আঙিনা হাজারো দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। দর্শনার্থীদের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির পাশাপাশি কুঠিবাড়িকে পূর্ণাঙ্গ পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি এই অঞ্চলের মানুষের।

জমিদারি দেখাশোনার জন্য ১৮৯১ সালে প্রথম এই কুঠিবাড়িতে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নিরিবিলি পরিবেশ, জমিদারি আর ব্যবসার কারণে বারবার কুষ্টিয়ার এই কুঠিবাড়িতে ফিরে আসতেন তিনি। নিভৃত বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কবির জীবনের বেশ কিছু মূল্যবান সময় কেটেছে। এখানে বসে রচিত গীতাঞ্জলি কাব্যই রবীন্দ্রনাথকে এনে দিয়েছে নোবেল পুরস্কার আর বিশ্বকবির মর্যাদা। এ ছাড়া তিনি এখানে বসেই আমাদের জাতীয় সংগীতসহ অসংখ্য কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। কুঠিবাড়িতে সংরক্ষিত আছে সেসব দিনের নানা স্মৃতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আস্থায় বাজিমাত ইসলামী ব্যাংক

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত