Ajker Patrika

গাংনীতে কমেছে পাসের হার, মিষ্টি বিক্রেতারা হতাশ

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

ভালো খবরে মিষ্টিমুখ, এ তো আবহমান বাংলার ঐতিহ্য। বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিনে হরহামেশাই মিষ্টির চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। এ বছরে এমন প্রত্যাশা নিয়ে বাহারি রকমের মিষ্টি বানিয়েছিলেন মেহেরপুরের মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তাদের এ ‘আশার গুড়ে বালি!’ ফল প্রকাশের পর থেকে রাত পর্যন্ত মিষ্টির চাহিদা দেখে হতাশ তাঁরা। আগামী বছর থেকে এসব দিনে বেশি বিক্রির প্রত্যাশায় মিষ্টি বানাবেন না বলে ঘোষণাও দিচ্ছেন। 

আজ রোববার মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে,  গাংনী উপজেলায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৪ হাজার ৪১০জন। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৩ হাজার ২৩২ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ১ হাজার ১৭৮ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ২১১ জন শিক্ষার্থী। পাসের শতকরা হার ৭৩ দশমিক ২৮।

গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক জানান, গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার কমেছে।

সরেজমিনে উপজেলার দেবীপুর বাজারে দেখা যায়, মিষ্টির দোকানে বাহারি মিষ্টির পসরা সাজিয়ে রেখেছেন দোকানি। পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দোকানেই ক্রেতাশূন্য অবস্থা। মুখ মলিন দোকানিদেরও। 

ব্যবসায়ীরা জানালেন, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে জেনে আগের দিন অনেক মিষ্টি করে রেখেছেন তারা। তবে সারা দিন চলে গেছে মিষ্টি তেমন বিক্রি হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেশ প্রচার-প্রচারণা উল্লাস দেখা গেলেও, দিনে দিনে স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিকভাবে এই আনন্দ হারিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তারা। গত কয়েক বছর ধরেই এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে বলে দাবি তাদের।

মিষ্টি ব্যবসায়ী রিপন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বিশেষ দিনগুলোর জন্য বেশি মিষ্টি প্রস্তুত করে থাকি। আজ এসএসসির রেজাল্ট হবে তাই অন্য দিনের তুলনায় মিষ্টি বানিয়ে রেখেছি। তবে সারা দিন চলে গেল, ৪-৫ জন পরীক্ষার্থী মিষ্টি নিয়ে গেছে।’ 

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বর্তমানে ছেলে-মেয়েরা ভালো রেজাল্টের আনন্দ প্রকাশ করে ফেসবুকে। পরের বছর থেকে আর বেশি মিষ্টি বানাব না। বিক্রি না হলে, কিছুটা হলেও তো লোকসান হয়।’ 

অপর এক মিষ্টি ব্যবসায়ী আকরাম আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলায় অনেক ছেলে-মেয়েই তো ভালো রেজাল্ট করেছে শুনেছি, আশা করেছিলাম অনেক মিষ্টি বিক্রি হবে। সারা দিন চলে গেল, পাস করা শিক্ষার্থীরা মিষ্টি নিতে আসছে না। মাত্র কয়েকজন আসছে মিষ্টি কিনতে।’ 

স্মৃতি রোমন্থন করে আকরাম আলী বলেন, ‘এক সময় আমরা দেখতাম-ফল প্রকাশের একটা অন্যরকম আনন্দ ছিল। ছেলে-মেয়েরা পাস করলে অভিভাবকেরা মিষ্টির দোকানে ভিড় জমাতো। সেই দৃশ্য আর দেখা যাচ্ছে না। এবার থেকে পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিনগুলোতে অতিরিক্ত মিষ্টি বানাব না।’ 

এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া এক শিক্ষার্থীর বাবা আলফাজ উদ্দিন বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ আমার ছেলে পাস করেছে। যদিও খুব ভালো রেজাল্ট করতে পারেনি, তবুও ইনশা আল্লাহ মিষ্টি খাওয়াব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত