Ajker Patrika

জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার, ৩৮ দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
Thumbnail image
কবর থেকে লাশ উত্তোলন দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়। বুধবার কুমারখালীর উত্তর কয়া বাইতুল মামুর কবরস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দাফনের প্রায় ৩৮ দিন পর কবর থেকে তরিকুল শেখ নামের এক ট্রাকচালকের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। আজ বুধবার বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের উত্তর কয়া বাইতুল মামুর কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়। তরিকুল শেখ ওই এলাকার ছাবদুল শেখের ছেলে।

আদালতের নির্দেশে লাশটি উত্তোলনের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন উদ্দিন, কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান ও নিহত তরিকুলের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ জানায়, তরিকুল শেখ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ট্রাকচালক ছিলেন। ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর তরিকুল মোংলার বন্দর থেকে পঞ্চগড় যাচ্ছিলেন। পথে কুষ্টিয়ার বাইপাস সড়কের জগতি এলাকায় পৌঁছালে তাঁর কাছে গাঁজা চান তাঁর সহকারী আল আমিন শেখ (২৭)। এ সময় গাঁজা না দিলে লোহার গ্রিসগান দিয়ে তরিকুলের মাথা, গলা, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত দিয়ে হত্যা করে আল আমিন। হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে আল আমিন সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজায় এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হিসেবে ওই দিনই ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশটি দাফন করা হয়।

পুলিশ আরও জানায়, ঘটনার দুদিন পর ১৬ ডিসেম্বর সহযোগী আল আমিন আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। ওই দিনই নিহত তরিকুলের চাচা মো. আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সহযোগী আল আমিনকে আসামি করা হয়। পরদিন ১৭ ডিসেম্বর পুলিশ কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত ২২ ডিসেম্বর লাশটি উত্তোলনের অনুমতি দেন। আর প্রক্রিয়া শেষে বুধবার লাশটি উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, মাদকদ্রব্য গাঁজা না পেয়ে চালককে হত্যা করেছিলেন সহযোগী আল আমিন। আদালতের জবানবন্দিতে আসামি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। বর্তমানে আসামি কারাগারে রয়েছেন।

তবে নিহতের পরিবারের দাবি, পাওনা টাকার জেরে তরিকুলকে লোহার গ্রিসগান দিয়ে হত্যা করে দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়েছিলেন তাঁর ট্রাকের সহযোগী আল আমিন শেখ। তিনি জেলার খোকসা উপজেলার শিংগুড়িয়ার চরপাড়া এলাকার আক্কাস আলীর ছেলে।

এ বিষয়ে মামলার বাদী মো. আব্দুল্লাহ বলেন, তারিকুলের কাছে ৫০ হাজার টাকা চায় সহযোগী আল আমিন। টাকা না পেয়ে তরিকুলকে লোহার গ্রিসগান দিয়ে হত্যা করে দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়েছিল। পরে আসামি সত্যতা স্বীকার করেছেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন উদ্দিন বলেন, আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কবর থেকে মরদেহটি উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত