Ajker Patrika

গ্রাহকের দেড় কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা সিরাক বাংলাদেশ

শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ১১: ৫৫
গ্রাহকের দেড় কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা সিরাক বাংলাদেশ

ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভার কবিরপুরে সিটি কলেজ পাড়ায় ‘সিরাক বাংলাদেশ’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা গ্রাহকের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে শত শত মানুষের কাছ থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। 

জানা যায়, সিরাক বাংলাদেশ নামের ভুয়া অফিস খুলে লাখে ১০ হাজার করে ঋণ দেওয়ার কথা বলে টাকা আদায় করে। ২৫ সেপ্টেম্বর অফিস খুলে ১ অক্টোবর ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে এই টাকা আদায় করেন বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে। পরে ১ অক্টোবর অফিসে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান এই অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ঋণ পাওয়ার আশায় গ্রাহকেরা ৫ হাজার থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা শহরের কবিরপুর এলাকার সিটি কলেজ সড়কে একটি একতলা বাড়ির মূল ফটকের সামনে সাইনবোর্ড। তবে ফটকটি তালাবদ্ধ। সাইনবোর্ডটিতে লেখা আছে, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সিরাক বাংলাদেশ, ক্ষুদ্র ঋণদান ও কুটির শিল্প প্রকল্প’। অফিসের সামনে অনেক মানুষের ভিড় দেখা গেছে।

উপজেলার দিগনগর গ্রামের রুহুল আমিন আজকের পত্রিকাকে জানান, স্ত্রী লাভলী খাতুনের নামে বই খুলে ২ লাখ টাকা ঋণ নিতে চেয়েছিলেন। এ জন্য তিনি ২০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর বাড়িতে গিয়ে টাকা নিয়ে যান সংস্থাটির কর্মকর্তা নাজমুল হাসান নামের এক ব্যক্তি।

সাতগাছি গ্রামের ফিরোজ হোসেন জানান, স্ত্রী সীমা খাতুনের নামে বই করে জমা দিয়েছেন ৫ হাজার টাকা। তিনি ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিতে চেয়েছিলেন।

নাদপাড়া গ্রামের বজলুর রহমান জানান, স্ত্রী চকেলা খাতুনের নামে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিতে ৫ হাজার জমা দিয়েছেন। ২৯ সেপ্টেম্বর তাঁর টাকা নেওয়া হয়েছে। সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন ২ লাখ টাকা ঋণের আশায়। তিনি বিকাশের মাধ্যমে এই টাকা দিয়েছেন। 

সিরাক অফিসের পাশের বাড়ির বাসিন্দা মহি উদ্দিন জানান, সংস্থাটি যে বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিস করেছিল, সেই বাড়ির মালিক আকবার আলী থাকেন গ্রিসে। তাঁর স্ত্রী সীমা খাতুন ঝিনাইদহে বসবাস করেন। সীমা খাতুনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে বাসাটি ভাড়া নিতে চান সিরাক বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। তাঁরা বাসা দেখার কথা বলে সেখানে কিছু চেয়ার-টেবিল নিয়ে আসেন এবং পাঁচ থেকে ছয় দিনের মধ্যে অগ্রিম দিয়ে চুক্তিপত্র তৈরি করবেন বলে জানান। এরই মধ্যেই হুট করে বাড়ির ফটকে সংস্থার সাইনবোর্ড ঝোলান। মহি উদ্দিন আরও জানান, ১ অক্টোবর থেকে বাসা ভাড়া নেওয়া হবে না বলে তাঁর কাছে চাবি রেখে চলে যান সংস্থার কর্মকর্তারা। পরে তিনি তালা খুলে দেখেন ভেতরে কয়েকটি চেয়ার-টেবিল। তিনি জানান, নিজেও মেয়ে মিতা খাতুনের নামে বই খুলে ১৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। 

স্থানীয় সাইফুল ইসলাম জানান, সংস্থাটির কর্মকর্তারা খুব বেশি পরিচিতি পাননি। মাত্র পাঁচ দিন এখানে থাকলেও বেশির ভাগ সময় তাঁরা অফিসের মধ্যেই থেকেছেন। বাইরে অর্থ সংগ্রহের জন্য বেরিয়েছেন। তবে সংস্থার প্রধান বলে পরিচয় দেন নামজুল হোসেন।

বাড়ির মালিকের স্ত্রী সীমা খাতুন জানান, তাঁরা ফোনে কথা বলেছেন মাত্র। এখনো কোনো চুক্তি হয়নি। তিনি অসুস্থ ছিলেন। এই সময়ে চাবি নিয়ে খুলে সেখানে চেয়ার-টেবিল উঠিয়েছেন, এটা তিনি জানতেন না। 

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মাসুদ আহাম্মেদ জানান, সিরাক নামে কোনো সংস্থা ঋণ কার্যক্রমের জন্য নিবন্ধিত নয়। শৈলকুপা শহরে অফিস করেছে, এটাও তাঁদের জানা নেই। 

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, কোনো গ্রাহক এমন কোনোো অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত