Ajker Patrika

মনিরামপুরে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, স্বামী-সতিন উধাও

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৪: ৩৩
যশোরের মনিরামপুরে আজ সোমবার সকালে চালকল মালিক স্বামীর বাড়ি থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় এলাকাবাসীর ভিড় করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরের মনিরামপুরে আজ সোমবার সকালে চালকল মালিক স্বামীর বাড়ি থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় এলাকাবাসীর ভিড় করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের মনিরামপুরে সাথী আক্তার (৩৫) নামের এক গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা জাহাতাব মোড়লের চাতালের একটি ঘরে তাঁর লাশ পাওয়া যায়।

সাথী আক্তার চাতাল মালিকের ছেলে আব্দুর রশীদ মিন্টুর ছোট স্ত্রী। তিনি চাতালে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সাথীর স্বামী ও সতিনের বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। লাশ বাড়িতে ফেলে তার স্বামী মিন্টু তাঁর বড় স্ত্রী, ছেলে ও পুত্রবধূকে নিয়ে পালিয়েছেন।

সাথীর স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকের এক লাখ টাকা না পেয়ে মিন্টু তাঁর বড় স্ত্রী ও ছেলে রিফাত হোসেনকে নিয়ে সাথীকে খুন করেছেন।

এদিকে বেলা ১টার দিকে সাথী আক্তারের লাশ উদ্ধারের সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্ত মিন্টুর বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এ সময় লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে। তবে এই বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সাথীর মা আলেয়া বেগম বলেন, ‘সকালে চাতালে লোকজন কাজ করতে এসে সাথীকে কাজের জন্য ডাকাডাকি করেন। পরে সাড়া না পেয়ে ঘরে গিয়ে দেখেন, মাটিতে মেয়ের গলাকাটা লাশ পড়ে আছে।’

আলেয়া বেগম বলেন, ‘সাথী আমার একমাত্র মেয়ে। চার মাস আগে ওর বাপের জমি বেচে মিন্টুর হাতে চার লাখ টাকা দিছি। মিন্টু আরও এক লাখ টাকা চেয়েছে। টাকা না দেওয়ায় সে আমার মেয়েকে গলা কেটে খুন করেছে। আমি মিন্টুর ফাঁসি চাই।’

সাথীর মা আরও বলেন, ‘সাথীর প্রথম স্বামীর ঘরে দুই ছেলে আছে। সেখানে বনিবনা না হওয়ায় ছেলে দুটোকে নিয়ে মেয়ে আমার বাড়ি থাকত। চার বছর আগে মিন্টু আমার বাড়ি গিয়ে সাথীকে চাতালে কাজের জন্য নিয়ে আসে। এরপর একদিন মিন্টু আমার মেয়েকে চাতালে ফেলে ধর্ষণ করে। আমি জানতে পেরে প্রতিবাদ করলে মিন্টু সাথীকে কাজী অফিসে নিয়ে বিয়ে করে। মিন্টু আমার মেয়েকে মারধর করত। আমার সামনে কয়েক দিন গলা টিপে ধরেছিল।’

দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) খাটুয়াডাঙ্গা ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম বলেন, মিন্টুর মেয়ে লিমাকে গ্রামে বিয়ে দেওয়া। সকালে লিমা বাবার বাড়ি এসে কাউকে না পেয়ে সাথীকে খোঁজে। পরে সাথীর ঘরে গিয়ে তাঁর লাশ দেখতে পেয়ে আমার বাড়িতে এসে জানায়। তাঁর বাড়িতে গিয়ে মিন্টু বা তাঁর প্রথম পরিবারের পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, মিন্টু এক সময় অবৈধভাবে অস্ত্র কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বেশ কয়েক বছর আগে তিনি অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। এরপর ১০-১১ বছর সাজা খেটে বেরিয়ে এসে সাথীকে বিয়ে করেন।

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী আজকের পত্রিকাকে বলেন, গৃহবধূ সাথীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর লাশ ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল। আমরা খুনের কারণ উদ্ঘাটন ও জড়িতদের আটকের চেষ্টা করছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত