Ajker Patrika

করোনায় সংসারের হাল ধরেছে শিশু, স্কুলে পাঠানো নিয়ে দ্বিধায় বাবা

প্রতিনিধি, মহম্মদপুর (মাগুরা) 
করোনায় সংসারের হাল ধরেছে শিশু, স্কুলে পাঠানো নিয়ে দ্বিধায় বাবা

ঘুম থেকে উঠেই ডিলার পয়েন্টে চলে যায় তামিম। ভ্যান ভর্তি পণ্য নিয়ে দোকানে দোকানে পৌঁছে দেয়। দৈনিক মজুরি ১০০ টাকা। তামিম মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। তেলিপুকুর গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর আলী আফজালের ছেলে। মা-বাবা ও দুই ভাই নিয়ে তামিমদের পরিবার। 

করোনা মহামারি শুরুর বছর সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত তামিম (১৩)। করোনায় স্কুল বন্ধ। টানাটানির সংসারে বোঝা হতে চায়নি সে। দোকানে পণ্য সরবরাহ করে যে টাকা আয় হয় পুরোটাই তুলে দেয় বাবার হাতে। মহামারির মধ্যে বাবার আয়ও প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে। তাই বলতে গেলে তামিম একাই হাল ধরেছে সংসারের। 

এর মধ্যে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে। কিন্তু তামিমের স্কুলে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। মহামারির প্রথম দিকে বাবার সঙ্গে খেত-খামারে কাজ করেছে। পরে পরিবারকে সহযোগিতা করতে একটা চাকরিতে নেয় সে। এখন পরিবারের প্রধান নির্ভরতায় পরিণত হয়েছে তামিম। ফলে বাবাও পড়েছেন উভয়সংকটে। 

তামিম জানায়, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভ্যানগাড়ি চালিয়ে পণ্য ডেলিভারি দেয় সে। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে এই কাজ করতে হয় তাকে। প্রতিদিন ১০০ টাকা মজুরি পায়। মাস শেষে বাবার হাতে তুলে দেয় সেই টাকা। 

তামিমের বাবা আলী আফজাল বলেন, ইচ্ছা ছিল ছেলে পড়ালেখা শিখবে। বড় অফিসার হবে। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে কিছুই সম্ভব হচ্ছে না। স্কুল খুললে কীভাবে স্কুলে পাঠাবেন সেটি নিয়ে দুর্ভাবনায় পড়েছেন তিনি। কারণ, তামিম স্কুলে গেলে আয় বন্ধ হয়ে যাবে। আর না গেলে পড়ালেখা বন্ধ। 

হরেকৃষ্ণপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউল আলম মুকুল জানান, করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় তামিমের মতো অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে তামিমের বাবার সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত