Ajker Patrika

কালীগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ (সাতক্ষীরা) 
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২১, ১৫: ১১
Thumbnail image

সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা মৌসুমি বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত টানা ভারী বর্ষণে উপজেলা সদর, মথুরেশপুর, মৌতলা, কৃষ্ণনগর, বিষ্ণুপুর, দক্ষিণ শ্রীপুর, রতনপুর, তারালী, চাম্পাফুল, ভাড়াশীমলা ইউনিয়নসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। বাড়িঘরে পানি উঠেছে। জমির ফসল, রাস্তাঘাট, আমনের বীজতলা ডুবে গেছে, ভেসে গেছে পুকুর ও ঘেরের মাছ।

জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিকাংশ বিলে সদ্য রোপা আমন ও বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে। শতাধিক ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। উপজেলার ছোটদেরীর বিল, হাড়দ্দাহ বিল, সোলাকুড়ার বিল, সাপখালির বিল, কুশুলীয়ার বিল, উজুরপুর বিল, ছোট মিয়ার দরগা, বিষ্ণুপুর বিল, কৃষ্ণনগর বিল, বালিয়াডাঙ্গার বিলসহ কমপক্ষে ১২টি বিলে পানি থইথই করছে। এসব বিলের মাছের ঘের ভেসে গেছে। ইছামতী, কালিন্দী, কাকশিয়ালী, গোয়ালঘেঁষিয়াসহ আদি যমুনার তীরবর্তী এ বিলগুলোর পানি নদীতে প্রবাহিত না হওয়ায় তা উপজেলার দিকে এগিয়ে আসছে। অতিবৃষ্টিতে গ্রামাঞ্চলের সব পুকুর তলিয়ে গেছে। বেরিয়ে গেছে লক্ষাধিক টাকার মাছ। এ ছাড়া ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কাঁচা-ঘরবাড়ি। সবজির খেতগুলো ডুবে গেছে। যাতায়াতেও ভোগান্তি বেড়েছে এলাকাবাসীর।

কালীগঞ্জের পানিয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান বলেন, ‘তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার রানিতলা নামক স্থানটি। সবই এখন পানিতে তলিয়ে রয়েছে। পানি অপসারণের প্রধান পথ মৌতলা থেকে পাউখালী পর্যন্ত খালটির অধিকাংশ প্রভাবশালীরা দখল করে রাখায় বৃষ্টির পানি বাড়িঘরে উঠতে শুরু করেছে। তাই উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে খালটি দ্রুত পুনঃখননের দাবি জানাচ্ছি।’ 

সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে কালীগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিতসাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে সাতক্ষীরায় ৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগামী কয়েক দিন এভাবে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে বলেও জানান তিনি।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইকবাল আহমেদ জানান, ভারী বর্ষণে উপজেলার নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে সদ্য রোপা আমন, আউশ বীজতলার ক্ষতি হয়েছে। এবার উপজেলায় ১ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ৬০ শতাংশ অর্ধ পানিতে এবং বাকি ২০ শতাংশ বীজতলা এখনো পানিতে নিমজ্জিত হয়নি। তবে এই বৃষ্টিপাত যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সম্পূর্ণ বীজতলা পানিতে তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন খান জানান, হঠাৎ ভারী বর্ষণের ফলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় মারাত্মক কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি। তারপরও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সরকারি সহায়তা এলে অনুদান প্রদান করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত