Ajker Patrika

কুয়েটে হামলা-সংঘর্ষ: মুখোমুখি ছাত্রদল বৈষম্যবিরোধীরা

খুলনা প্রতিনিধিঢাবি সংবাদদাতাআজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনার পর পাঁচ দফা দাবি আদায়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে জেনে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। গতকাল দুপুরে কুয়েটে। ছবি: এএফপি
হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনার পর পাঁচ দফা দাবি আদায়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে জেনে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। গতকাল দুপুরে কুয়েটে। ছবি: এএফপি

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের পর মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদল। গতকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল বলেছে, ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে এই হামলা উসকে দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির ও নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ছাত্রদলের পরিণতি ছাত্রলীগের মতোই হবে।

এদিকে কুয়েটে মঙ্গলবারের সংঘর্ষের ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। এ ছাড়া একাডেমিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ এবং পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে শতাধিক আহত হন। এরপর মঙ্গলবার রাতেই শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি এবং উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বাইরে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের রাখা, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় প্রশাসন থেকে বহন করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। এসব দাবি গতকাল বেলা ১টার মধ্যে পূরণের আলটিমেটাম দেওয়া হয়। তবে গতকাল এই সময়ের মধ্যে দাবি মেনে না নেওয়ায় গতকাল বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দেন।

সিন্ডিকেট সভায় যেসব সিদ্ধান্ত

শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সকালের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৩তম সভা বসে। এই সভা থেকে সিদ্ধান্ত হয়, কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, গতকালের ঘটনায় জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আর জড়িত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করবে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে। ক্যাম্পাস এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এদিকে হামলার ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কুয়েটের সহ-উপাচার্য শেখ শরীফুল আলম জানান, কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

হামলার মনিটরিং হাসনাতের

কুয়েটে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনার পর বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা শোডাউন দিয়েছেন। এ ঘটনায় গতকাল বরিশালের সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। যশোরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। গতকাল বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের ক্রীড়াকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির। তিনি বলেন, কেন্দ্র থেকে কুয়েট সংঘর্ষ মনিটরিং করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ওমর ফারুক নেতৃত্ব দিয়েছেন।

নাছির বলেন, ‘বাংলাদেশের যেকোনো সংগঠনের রাজনীতি করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কীভাবে ছাত্রদলের তিনজন নেতার ওপর হামলা করে, সে প্রশ্ন আমরা রাখতে চাই। শিবিরের কাছে আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই, কুয়েটে তাদের কমিটি আছে কি না, গতকাল যে হামলা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। আর কোনো ক্যাম্পাসে যদি বিনা কারণে হামলার ঘটনা ঘটে, তাহলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দায় নিতে হবে।’

কুয়েটের সংঘর্ষে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবেশ ও মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রাতে রাজধানীতে নিজেদের কার্যালয়ে গতকাল রাতে এ নিয়ে বক্তব্য জানাতে সংবাদ সম্মেলন ডাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রাত ৯টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য জানা যায়নি।

এ ছাড়া গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত সমাবেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই দেশে যারা ছাত্রলীগ হয়ে উঠতে চাইবে, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে, তাদের পরিণতি ছাত্রলীগের মতোই হবে।’ ছাত্রদলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করে থাকেন চাপাতির রাজনীতি, হকিস্টিকের রাজনীতি আপনারা ক্যাম্পাসে আবার ইনস্টল করবেন, তাহলে আপনারাও ছাত্রলীগের পথে যাবেন।’

কুয়েটে আন্দোলনকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘ভিসি স্যারকে পদত্যাগ করতে হবে। উনি আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। দাবি বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

যেমন আছে ক্যাম্পাস

মঙ্গলবারের সংঘর্ষের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকে শিক্ষার্থী গতকাল সকাল থেকে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। ক্যাম্পাসের বাইরে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে যাঁরা ভাড়া রয়েছেন, তাঁদের অনেকে আতঙ্কিত। এদিকে হামলার ঘটনায় আটক করা হয়েছে পাঁচজনকে। জানতে চাইলে খানজাহান আলী থানার ওসি মো. কবির হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে থানায় মামলা হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (নর্থ) মো. নাজমুল হাসান রাজীব বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় গত রাতে ৫ জনকে আটক করা হয়েছিল। তবে এখনো কোনো মামলা হয়নি। ক্যাম্পাসের গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি ভালো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গ্রাহকদের বকেয়া না দিয়ে পালানোর চেষ্টায় কর্মকর্তারা, অবরোধ-বিক্ষোভ

শিপুল ইসলাম, রংপুর
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের রংপুর জোনাল অফিসে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকার বিমা পরিশোধ না করে অফিসের মালপত্র বিক্রি করে পালানোর চেষ্টা করছিলেন কর্মকর্তারা—এমন খবর পেয়ে গ্রাহকেরা দ্রুত অফিসে গিয়ে তাঁদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা। আজ রোববার বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার মধ্যরাতে অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আসবাব ও দামি সরঞ্জাম বিক্রি করে বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করলে সন্দেহ হয় স্থানীয় গ্রাহকদের। তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে অফিসে গিয়ে মালপত্র আটক করেন এবং কর্মকর্তাদের জবাবদিহির জন্য অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আজ সকাল থেকে অফিসের সামনে গ্রাহকের ভিড় করতে শুরু করে দুপুর গড়তেই জাহাজ কোম্পানি-স্টেশন রোডে জামাল মার্কেটের সামনে অফিসের নিচে নগরীর প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, জাহাজ কোম্পানি-স্টেশন রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন গ্রাহকেরা। এ সময় অফিসের লকার, চেয়ার-টেবিল, আসবাবসহ একটি ট্রাক দেখা যায়। অফিস কক্ষে চারজনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় বলে জানা গেছে।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, রংপুর বিভাগের প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের ১২১ কোটি টাকারও বেশি বিমা দাবি এখনো পরিশোধ করেনি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা টাকা না পেয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন।

রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রংপুর বিভাগের আট জেলায় ২৯ হাজার ৫৯৬ জন গ্রাহকের বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে, যার বিপরীতে ১২০ কোটি ৯৭ লাখ টাকারও বেশি পরিশোধ বকেয়া রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে টাকা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও গ্রাহকেরা বছরের পর বছর ধরে শুধু আশ্বাসই পাচ্ছেন।

রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবস্থান নেওয়া গ্রাহক নগরীর ভগিবালা এলাকার বৃদ্ধা আকলিমা বেগমের দুই বছর আগে বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু সেই টাকা দীর্ঘদিন ঘুরেও পাননি। আক্ষেপ করে আকলিমা বেগম বলেন, ‘স্বামী নাই, অনেক কষ্ট করে টাকা জমাইছি। সেই টাকা না দিয়ে অফিস নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে বিমা কোম্পানি লোকজন। আমার কষ্টের টাকা আমি ফেরত চাই। খবর পেয়ে সবার সঙ্গে এখানে অবস্থান নিচ্ছি।’

আরেক গ্রাহক নগরের আদর্শপাড়া গ্রাম এলাকার বাসিন্দা আজিজার রহমান বলেন, ‘ভবিষ্যতে ভালোর আশায় রিকশা চালিয়ে অনেক কষ্ট করে খেয়ে না-খেয়ে ১২ বছর ধরে টাকা জমিয়েছি। সেই টাকা না দিয়ে ফারইস্ট কোম্পানি অফিসের মালপত্র বিক্রি করে পালিয়ে যাচ্ছে। এই টাকা না পেলে পথে বসে যাব। আমার রক্ত-মাংস পানি করা টাকা আমি ফেরত চাই। এ জন্য আজ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি।’

রাস্তায় বসে বিমার কাগজপত্র নাড়াচাড়া করছিলেন আর চোখ দিয়ে জল পড়ছিল হারাগাছ এলাকার সায়েম বাদশা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বৃদ্ধ বয়সে যেন ভালোভাবে চলতে পারি, সেই আশায় বিমা করেছিলাম। না খেয়ে কষ্ট করে ১০ হাজার টাকা করে জমিয়েছিলাম। মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে, কিন্তু এখনো টাকা পাইনি। সরকার কাছে দাবি আমাদের আসল টাকাটা যেন ফেরত নিয়ে দেয়।’

এ বিষয়ে মহানগর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিতাসে অস্ত্র-গুলিসহ ৪ নারী গ্রেপ্তার

হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
উদ্ধার হওয়া গুলি ও অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার হওয়া গুলি ও অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার তিতাসে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ চার নারীকে গ্রেপ্তার হয়েছে। গতকাল শনিবার (২৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত থেকে আজ রোববার ভোর পর্যন্ত উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শাহপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিতাস-অস্ত্র২
তিতাস-অস্ত্র২

গ্রেপ্তার নারীরা হলেন শাহপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী ফারজানা (২৯), জসিমের স্ত্রী আমিনা (৩৭), জহিরের স্ত্রী জুবেদা (৩৩) ও আব্দুল কাদিরের স্ত্রী শান্তি বেগম (৬০)।

থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিতাস থানা-পুলিশের একাধিক টিম শাহপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় সেখান থেকে ১টি বিদেশি রিভলবার, ৬টি গুলি, ১টি এলজি বন্দুক, ২টি পাইপগান উদ্ধারসহ তিন নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় একই রাতে একই এলাকার আব্দুল কাদিরের বাড়িতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০টি সিসা কার্তুজ ও ৫টি ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার এবং আরও এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। আজ দুপুরে তাঁদের কুমিল্লা আদালতে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডিমলায় টিকা নিতে গিয়ে পিকআপের ধাক্কায় নানি-নাতনি নিহত

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের গয়াবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন ঘোড়ামারা রোড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের গয়াবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন ঘোড়ামারা রোড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর ডিমলায় টিকা নিতে যাওয়ার পথে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় নানি তাঁর ১৪ দিনের নবজাতক নাতনিসহ নিহত হয়েছেন। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের গয়াবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন ঘোড়ামারা রোড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের শুটিবাড়ি বাজারসংলগ্ন এলাকার আব্দুস ছাত্তার খানের স্ত্রী মোছা. সূর্য খাতুন (৫৫) এবং তাঁর নাতনি সামিয়া আক্তার (১৪ দিন) একই এলাকার বাসিন্দা বাবুল হোসেনের মেয়ে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকালে সূর্য খাতুন নাতনি সামিয়াকে নিয়ে টিকাদান কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন। রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি মালবাহী পিকআপ তাঁদের ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই নবজাতক সামিয়া মারা যায়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় সূর্য খাতুনকে উদ্ধার করে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনার পর পিকআপের চালক পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

নিহত নবজাতকের স্বজনেরা বলেন, নানি তাঁর নাতনিকে নিয়ে টিকা দিতে গিয়েছিল। সকালবেলায় হাসিখুশি ছিল সবাই। কিন্তু মুহূর্তেই সব শেষ হয়ে গেল।

স্থানীয়রা জানান, ওই সড়কে বেপরোয়া গতির কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে। পিকআপের চালককে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্টেশনমাস্টারের দুর্নীতি-স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি 
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে আক্কেলপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ‘আক্কেলপুরবাসী’র ব্যানারে এই মানববন্ধন হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অর্ধশতাধিক মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, খাদিজা খাতুন ২০ বছরের বেশি সময় ধরে আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সান্তাহার জংশনের দায়িত্বেও আছেন। স্থানীয় যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া এবং তাঁর মনগড়া প্রতিবেদনের কারণে চিলাহাটী এক্সপ্রেস ট্রেনের আক্কেলপুরে যাত্রাবিরতি বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তাঁকে দ্রুত এখান থেকে অপসারণের দাবি জানান তাঁরা।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আক্কেলপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও চিলাহাটী এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতির সমন্বয়ক আব্দুর রউফ মাজেদ। বক্তব্য দেন পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম চপল, তিলকপুর ইউপির সদস্য মামুনুর রশিদ পিন্টু, কলেজশিক্ষক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী, ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম তুহিন, মাসুদ চৌধুরী, ছাত্রদল নেতা আরমান হোসেন কানন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আক্কেলপুর, ক্ষেতলাল, নওগাঁর বদলগাছী-পত্নীতলা এবং বগুড়ার দুপচাঁচিয়া এলাকার যাত্রীরা এই স্টেশন ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করে। চিলাহাটী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি পেলে মানুষের ভোগান্তি অনেকটা কমবে। কিন্তু স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুনের মনগড়া প্রতিবেদনের কারণে তা বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুন বলেন, ‘আমি চিলাহাটী এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতির বিরোধিতা করে কোনো মৌখিক বা লিখিত প্রতিবেদন দিইনি। ২০২৪ সাল থেকে সান্তাহার জংশনের অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করছি। এক বছর তিন মাসে কোনো যাত্রী আমার দ্বারা হয়রানির শিকার হয়নি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত