Ajker Patrika

গাড়ি আমদানিতে মোংলা বন্দরে রেকর্ড 

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
Thumbnail image

গাড়ি আমদানিতে রেকর্ড গড়েছে মোংলা বন্দর। বিগত বছরের তুলনায় সব রেকর্ড ভেঙে, যা চট্টগ্রাম বন্দরকেও ছাড়িয়ে গেছে। চলতি অর্থবছর ২০২১-২২ এ বন্দরে গাড়ি আমদানি হয়েছে ২০ হাজার ৮০৮টি। যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ আমদানির সংখ্যা বলে নিশ্চিত করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জাপান থেকে ২০০৯ সালের ৩ জুন ঢাকার গাড়ি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হক’স বে অটোমোবাইলস সর্বপ্রথম নতুন ও রিকন্ডিশন্ড ২৫৫টি গাড়ি আমদানির মধ্য দিয়ে মোংলা বন্দরে গাড়ি আমদানি শুরু হয়। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে অন্য আমদানিকারকেরাও মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি শুরু করে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে মোংলা বন্দরে গাড়ি আমদানি হয় ২৫৫টি। ২০০৯-১০ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ১১৯ টিতে। সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে মোংলা বন্দরে গাড়ি আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৮০৮ টিতে। 

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব ২৬০ কিলোমিটার, সেখানে ঢাকা থেকে মোংলা বন্দরের দূরত্ব ১৮০ কিলোমিটার। যে কারণে একটি গাড়ি বন্দর থেকে খালাসের পর খুবই কম সময় ও স্বল্প খরচে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছাতে সক্ষম হবে। এ জন্য মোংলা বন্দর ব্যবহার করে গাড়ি আমদানি বৃদ্ধি পাবে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মোস্তফা কামাল বলেন, চলতি অর্থবছরে মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি হয়েছে ৬০ শতাংশ। আর চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি হয়েছে ৪০ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের দুই বন্দরে গাড়ি আমদানি হয়েছে ৩৪ হাজার ৭৮৩টি। এর মধ্যে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ২০ হাজার ৮০৮টি এবং চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি হয়েছে ১৩ হাজার ৯১৩টি গাড়ি। বিগত অর্থবছরের তুলনায় এটিই সর্বোচ্চ রেকর্ড। শুধু তাই নয়, গাড়ি আমদানি শুরু হওয়ার ১৪ বছর পর এই প্রথম চট্টগ্রামকে পেছনে ফেলল মোংলা বন্দর। 

এ বিষয়ে গাড়ি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হক’স বে অটোমোবাইলসের স্বত্বাধিকারী ও বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সাবেক সভাপতি আব্দুল হক মোবাইলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমাদের মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি করার জন্য উৎসাহ দেন। কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারণে তখন মোংলা বন্দরে জাহাজ আসতে চাইত না। ব্যক্তিগতভাবে অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে আমি সর্বপ্রথম মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি শুরু করি। এরপর মোংলা বন্দর দিয়ে অনেক আমদানিকারক গাড়ি আমদানি শুরু করে। এখন তো গাড়ি আমদানিতে চট্টগ্রাম বন্দরকে পিছে ফেলে দিয়েছে মোংলা।’ 

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, মোংলা বন্দরে গাড়ি আমদানি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। কারণ আমদানিকারকদের বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা, স্বল্প সময়ের মধ্যে এই বন্দর থেকে গাড়ি খালাস, আমদানি করা গাড়ি রাখার জন্য উন্নতমানের শেড ও ইয়ার্ড নির্মাণ এবং আমদানি করা গাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সার্বক্ষণিক টহল ও সিসি ক্যামেরায় মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়। 

চেয়ারম্যান আরও বলেন, সময় এবং অর্থ বেঁচে যাওয়ার কারণে আমদানিকারকেরা এ বন্দরকে বেছে নিয়েছে। এখন পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের আরও সুযোগ তৈরি হল। ব্যবসায়ীরা গাড়ি আমদানি করে দ্রুতই এখান থেকে সড়ক পথে মাত্র ৪ ঘণ্টায় গাড়ি নিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে পারবেন। এতে করে তাঁরা ব্যাপক লাভবান হবেন। সড়ক ব্যবস্থায় উন্নতি হওয়ায় গাড়ি আমদানি বৃদ্ধিসহ এ বন্দরে ব্যাপক কর্মযজ্ঞের সৃষ্টি হবে। 

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারবিডা) সভাপতি মো. হাবিবুল্লাহ ডন বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় আমাদের ব্যবসায়ীদের আমদানি করা শতাধিক গাড়ি মোংলা বন্দর দিয়ে ৪ ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছে গেছে। সেতু চালু হওয়ায় এ বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানির আগ্রহ বেড়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত