Ajker Patrika

এসএসসি পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষ, থানায় মামলা 

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
এসএসসি পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষ, থানায় মামলা 

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় এক পক্ষের মামলা রুজু হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে এক পরীক্ষার্থীর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই অপর পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। মামলা সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। 

আজ রোববার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান তালুকদার। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় একপক্ষ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছে। অপরপক্ষের মামলা প্রক্রিয়াধীন। এখনো পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।’ 

এর আগে গতকাল শনিবার দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পূর্বাশা ক্লাব এলাকায় প্রথম হামলার ঘটনা ঘটে এবং পরে যদুবয়রা ইউনিয়নের জয়বাংলা বাজারে পৃথক হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

এদিকে একপক্ষের নেতা ও যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার সমর্থকদের নামে মিথ্যা মামলা করেছে প্রতিপক্ষরা। তারা ওই ঘটনায় জড়িত নয়। আমার সমর্থকেরা প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হওয়ার পরে পূর্বাশার (উত্ত্যক্ত) ঘটনা জানতে পেরেছি।’ 

মিজানুর রহমান মিজান আরও বলেন, ‘যদুবয়রা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বদিউজ্জামান পুলিশ ও মুখবাধা লোকজন নিয়ে শনিবার রাতভর আমার সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হয়রানি করেছে। পুলিশের ভূমিকা এমন হলে এলাকায় শান্তি নষ্ট হতে পারে।’ 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান সাবুর মধ্যে এলাকায় বিরোধ চলছে। তারা উভয়েই আওয়ামী লীগের নেতা। তাঁদের বিরোধের জেরে ইউনিয়নে উত্তাপ বিরাজ করছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর ইউনিয়নের গড়াই মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত নির্বাচনে কামরুজ্জামান সাবুর সমর্থিত প্যানেল বিজয় লাভ করে। নির্বাচনের পর থেকে এলাকায় উত্তাপ আরও বেড়ে গেছে। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কামরুজ্জামান সাবুর সমর্থিত দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী পরীক্ষা শেষে পান্টি কেন্দ্র থেকে যদুবয়রার দিকে আসছিল। পথিমধ্যে বেলা ১টা ১৫ মিনিটের দিকে পূর্বাশা ক্লাব এলাকায় হেলমেট ও মুখবাধা অবস্থায় ৫ থেকে ৬ জন হাতুড়ি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে পথরোধ ও উত্ত্যক্ত করে শিক্ষার্থীদের। এ সময় এক শিক্ষার্থীর ভাই রনি আহমেদকে (২৩) হাতুড়িপেটা করে জখম করে প্রতিপক্ষরা। রনি আহমেদ যদুবয়রা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। 

এরপর বেলা দেড়টার দিকে যদুবয়রা জয়বাংলা বাজারে শিক্ষার্থীর বাবা, স্বজন ও স্থানীয় দুপক্ষের আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে যদুবয়রা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সোহেল রানা (২৮), স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক বিল্লাল হোসেন (৩২) ও এক শিক্ষার্থীর চাচা বাবলু শেখ (৪০) গুরুতর জখম হন। 

এ বিষয়ে কামরুজ্জামান সাবুর সমর্থক ও মামলার বাদী বলেন, ‘চেয়ারম্যান গ্রুপের সোহেল, বিল্লাল, বায়োজিদসহ অনেকে আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করেছে এবং উত্ত্যক্তে বাধা দেওয়ায় ছেলে রনিকে হত্যার উদ্দেশ্যে হাতুড়িপেটা করেছে। পরে আমার ভাই ও আমাকে মারপিট করেছে তাঁরা। থানায় মামলা করেছি। সুষ্ঠু বিচার পাব বলে আশা করছি।’ 

অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান মিজানের সমর্থক যদুবয়রা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘প্রতিপক্ষরা পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমার মাথায় ও হাতে গুরুতর জখম রয়েছে। রাতেই থানায় লিখিত এজাহার দিয়েছি। তবে এখনো মামলা হয়নি।’ 

চেয়ারম্যানের অভিযোগ অস্বীকার করে যদুবয়রা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘রাতে আসামি গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। তবে কাউকে হয়রানি করা হয়নি। চেয়ারম্যান কেন অভিযোগ করছে তা জানি না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত