Ajker Patrika

খালাদের খারাপ ব্যবহারেই ঘর ছেড়েছিল তিন বোন: পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

প্রায় কাছাকাছি বয়সের তিন বোন ওরা। ২০১২ সালের দিকে বাবা-মা আলাদা হয়ে যান। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তারা মায়ের কাছেই থেকে যায়। বছর না ঘুরতে মা ক্যানসারে মারা যান। এতিম হয়ে পড়া তিন বোনের জায়গা হয় দুই খালার কাছে। কিন্তু খালাদের কাছে সেই প্রত্যাশিত ব্যবহার পায় না তারা। তাই দীর্ঘদিন পরিকল্পনা করে তিনজন মিলে সিদ্ধান্ত নেয় বাবার কাছে ফিরে যাবে। রাজধানীর আদাবর থেকে নিখোঁজ হওয়া ওই তিন বোনকে যশোরের হামিদপুর থেকে উদ্ধার করার পর তাদের সম্পর্কে এমন তথ্যই জানিয়েছে পুলিশ। 

আজ শনিবার এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। তিনি বলেন, খালাদের খারাপ ব্যবহারের কারণেই ঘর ছেড়েছিল তারা। আর টিকটকের আসক্তির নামে ঘর থেকে পালিয়ে যাওয়ার যে অভিযোগ তাদের খালা করেছেন সেটি ভিত্তিহীন। 

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, যশোর কোতোয়ালি থানার সহযোগিতায় তেজগাঁও পুলিশ তিন বোনকে উদ্ধার করে ঢাকায় নিয়ে এসেছে। তাদের আদালতে নেওয়া হবে। তারা কার কাছে থাকতে চায় বা তাদের কী দাবি, তা আদালতকে জানাবে। আদালত যে নির্দেশনা দেবেন, সে অনুযায়ী পুলিশ কাজ করবে। 

উপ পুলিশ কমিশনার জানান, তিন বোনের মধ্যে দুজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। আরেকজন ডিপ্লোমা পাস করেছে। যে ডিপ্লোমা পাস করেছে সে আদাবরে এক খালার কাছে থাকত। বাকি দুজন খিলগাঁওয়ে আরেক খালার কাছে থাকত। এসএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে তিন বোন আদাবরে আসে। সেখানেই তারা পরিকল্পনা করে বাড়িতে বাবার কাছে পালিয়ে যাওয়ার। তাদের কাছে কোনো ফোন ছিল না এবং তারা খালার পরিবারের ফোন দিয়ে মাঝে মধ্যে তাদের দাদির সঙ্গে যোগাযোগ করত। দাদির কাছে থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে তারা গাবতলী থেকে যশোর যায়। 

তিন বোনের টিকটক আসক্তির বিষয়ে খালা সাজিয়া নওশীনের অভিযোগের বিষয়ে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা তাদের কাছে কোনো মোবাইল ফোন পাইনি। তার খালারা গণমাধ্যমে বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন। সেসবর সত্যতা আমরা এখনও পাইনি। তিন বোনের ক্ষোভ রয়েছে খালাদের ওপর। আরও ভালো থাকতে পারত বলে ধারণা তাদের।’ 

তিন বোনকে শনাক্ত কিংবা উদ্ধার নিয়ে পুলিশ ও র‍্যাব উভয়ের কৃতিত্ব দাবির বিষয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো একটি ঘটনা ঘটলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি সংস্থাই ছায়া তদন্ত করে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি বিভাগই ভ্রাতৃপ্রতিম। আমাদের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টির কোনো কারণ নেই। আমরা যশোর থেকে তিন বোনকে রিকভারি করে রাজধানীতে এনেছি। রিকভারিটাই মূল বিষয়।’ 

গত ১৭ নভেম্বর কাউকে কিছু না বলে আদাবরে খালার বাসা থেকে তিন বোন নিখোঁজ হয়। পরদিন আদাবর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন খালা সাজিয়া নওশীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত