Ajker Patrika

পায়ে গুলি লেগে রক্তক্ষরণে মৃত্যু শিশু সাদের, পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু রাজমিস্ত্রি তুহিনের

সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
Thumbnail image

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় নিহতদের মধ্যে দুজন মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের। একজন কাজ শেষে ফেরার পথে, অন্যজন কৌতূহলী হয়ে বাসার নিচে নামলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। 

নিহতরা হলেন–উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের ধল্লা খানপাড়া গ্রামের মো. বাহাদুর খানের ছেলে মো. সাদ মাহমুদ খান (১৩) এবং তালেবপুর ইউনিয়নের ইসলামনগর গ্রামের শেখ বুদ্ধর মেয়ের স্বামী ও কুমিল্লা জেলার বাঞ্ছারামপুরের মো. সাইদুল ইসলামের ছেলে মো. তুহিন আহমেদ (২৮)। 

সাদ মাহমুদের বাবা মো. বাহাদুর খান বলেন, সাভার যাবালে নূর দাখিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল সাদ মাহমুদ। গত ২০ জুলাই বাসার ছাদে ফুপাতো ভাই মো. হাসিবুলের (১৩) সঙ্গে খেলা করছিল। সাভার নিউ মার্কেটের দিকে হঠাৎ ধোয়া দেখে কৌতূহলী হয়ে বাসার নিচে রাস্তায় নামে। এ সময় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছি। হঠাৎ সাদ মাহমুদের পায়ে গুলি লাগলে সে সেখানে লুটিয়ে পড়ে। পথচারীরা ধরাধরি করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। এ মৃত্যুর জন্য পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়েছেন তিনি। 

বড় বোন তাসলিমা খানম নাজনীন বলেন, ‘সাদের বয়স কম। সে এই আন্দোলনের কিছুই বোঝে না। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ধোয়া দেখে বাসার নিচে নামার পরই তাকে গুলি করে পুলিশ। দৌড় না দিলে আবার গুলি করবে বলে ধমকায় পুলিশ। এ সময় আরও একজনকে গুলি করা হয়। তাদের সাহায্য করতে এক রিকশাচালক এগিয়ে এলে তাকেও গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই আমরা।’ 

ধল্লা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ রকম মৃত্যু কারও কাম্য না। এটা আসলেই দুঃখজনক। আমি তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’ 

অপরদিকে তুহিন আহমেদের স্ত্রীর চাচাতো ভাই মো. সুজন শেখ জানান, নারায়ণগঞ্জে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন তুহিন। গত ১৮ জুলাই বিকেলে কাজ থেকে বাসায় ফেরার পথে চিটাগং রোড ডাচ বাংলা ব্যাংকের কাছে পেটে গুলিবিদ্ধ হন তুহিন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। স্ত্রী রিয়া আক্তার (২৪) ও পরিবারকে জানালে অ্যাম্বুলেন্স যোগে সিঙ্গাইর পাঠিয়ে দেন তাঁর সহকর্মীরা। বাড়িতে এনে অবস্থার অবনতি হলে ১৯ জুলাই সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে অস্ত্রোপচার শেষে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ জুলাই সাড়ে ১১টার দিকে তিনি মারা যান। 

তালেবপুর ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘তুহিন ইসলামনগর গ্রামের শেখ বুদ্ধর মেয়ের স্বামী। জানতে পেরেছি, নারায়ণগঞ্জে কাজে গিয়ে আন্দোলনের মধ্যে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তার তিন বছর বয়সী একজন ছেলে আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত