আয়নাল হোসেন, ঢাকা
নানা সমস্যার কারণে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে না সরকার। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে বস্তায় ভরে ধান খাদ্যগুদামে নিয়ে যাওয়া, ধান শুকিয়ে আর্দ্রতা ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনা, চিটার জন্য প্রতিমণে এক-দুই কেজি বেশি ধান নেওয়ার মতো নানা শর্ত এবং ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি করা। চলতি বছর আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার ৯২ দশমিক ৪ শতাংশই পূরণ হয়নি। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দেশের বিভিন্ন জেলার কৃষক, ব্যাপারী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকেরা বাড়ি থেকেই পাইকারদের কাছে ধান বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। পাইকারেরা কৃষকের বাড়ি এসে ধান কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা দামও মোটামুটি ভালো পাচ্ছেন। তুলনায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করা কৃষকের জন্য ঝামেলাপূর্ণ। ধান শুকিয়ে বস্তায় ভরে যানবাহন ভাড়া করে গুদামে নিতে হয়। সেখানে নিয়ম অনুযায়ী ধানের আর্দ্রতা, চিটার পরিমাণ ইত্যাদি বিষয়ে শর্ত থাকে। এ ছাড়া টাকা তুলতে ব্যাংকে যাতায়াতের ব্যাপার আছে। এসব কারণে অনেক কৃষক সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করতে আগ্রহী হন না। কয়েকটি জেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে সরকারি গুদামে ধান সরবরাহের বিষয়ে এ চিত্র পাওয়া গিয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া গ্রামের কৃষক আবু বকর বলেন, ‘গ্রেডিং ও শুকনা থাকার শর্ত, পরিবহন খরচ, মজুরি ইত্যাদি বিবেচনা করলে বাড়ি থেকে পাইকারের কাছে অথবা এলাকার বাজারে কাছাকাছি দামে বিক্রি করাই বেশি সুবিধার।’
তারাগঞ্জের ইকরচালী গ্রামের সম্পন্ন কৃষক আজারুল ইসলাম বলেন, ‘আমন হোক আর বোরো, খাদ্যগুদামোত ধান দিবার গেইলে খরচ আছে। ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি তো আছেই। হয়রানির জন্য দুই বছর থাকি খাদ্যগুদামে ধান না দিয়া বাড়িতে পাইকারের কাছে বিক্রি করি।’
পঞ্চগড় সদর উপজেলার কৃষক মশিউর রহমানও গুদামে ধান দেওয়ার ক্ষেত্রে আর্দ্রতা যাচাই, পরিবহন খরচ, ব্যাংকে গিয়ে টাকা নেওয়া ইত্যাদি ‘ঝামেলার’ কথা বলেন। তাঁর ভাষায়, ‘ঝামেলা কেন করিমো? বাজারত ভালো দাম পাচ্ছি হামরা।’
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম এলাকার কৃষক শহর আলী জানান, সরকারি ক্রয়কেন্দ্রে ধান দিলে তাঁর প্রতি মণে ২০০ টাকা পর্যন্ত লোকসান হতো এবার। তাই অধিকাংশ ধান পাইকারি বাজারে বিক্রি করেছেন।
বেশ কয়েক কৃষক বলেছেন, এবার বৃষ্টিতে ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে ফলনের গড় খরচ বেশি পড়েছে। সরকারি সংগ্রহমূল্যের চেয়ে বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে সরকারি গুদামে ধান দিতে চাচ্ছেন না তাঁরা।
লক্ষ্যমাত্রা ও সংগ্রহের ফারাক
রংপুরে আমন মৌসুমের ৯৩ দিনে দেড় শতাংশ ধানও সংগ্রহ করা যায়নি। ময়মনসিংহে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ৩৬৯ টন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো ধান সংগ্রহ হয়নি। পঞ্চগড়ে ৭ হাজার ২৯৩ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গত তিন মাসে সংগ্রহ হয়েছে ১২০ টন।
কুষ্টিয়ায় ৬ হাজার ৭২০ টন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। অভিযানে মাত্র এক-শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ৩৩ টাকা দরে সাড়ে ৩ লাখ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। সর্বশেষ ৪ মার্চ পর্যন্ত সরকারি গুদামে ধান এসেছে ২৬ হাজার ৭১৪ টন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কৃষকেরা কাঁধে-মাথায় করে ধান গুদামে নিয়ে যাওয়ার পর যদি তাঁদের ফেরত নিয়ে যেতে হয়, তাহলে বিষয়টি খুবই সমস্যাজনক। ধান সংগ্রহের যেসব নিয়ম রয়েছে, তা নিয়ে স্বার্থসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করে বিষয়টি আরও সহজ করা দরকার। বর্তমানে কৃষি মন্ত্রণালয় যে অ্যাপটি ব্যবহার করছে সেটি খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করার চিন্তা করা হচ্ছে। তাহলে সমস্যা কমে আসবে।’
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন রংপুর প্রতিনিধি শিপুল ইসলাম, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি, দেবাশীষ দত্ত, কুষ্টিয়া, আরিফ রহমান, ঝালকাঠি, শাহীন রহমান, পাবনা, ফাহিম হাসান, পঞ্চগড় ও আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, ঝিনাইদহ)।
নানা সমস্যার কারণে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে না সরকার। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে বস্তায় ভরে ধান খাদ্যগুদামে নিয়ে যাওয়া, ধান শুকিয়ে আর্দ্রতা ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনা, চিটার জন্য প্রতিমণে এক-দুই কেজি বেশি ধান নেওয়ার মতো নানা শর্ত এবং ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি করা। চলতি বছর আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার ৯২ দশমিক ৪ শতাংশই পূরণ হয়নি। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দেশের বিভিন্ন জেলার কৃষক, ব্যাপারী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকেরা বাড়ি থেকেই পাইকারদের কাছে ধান বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। পাইকারেরা কৃষকের বাড়ি এসে ধান কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা দামও মোটামুটি ভালো পাচ্ছেন। তুলনায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করা কৃষকের জন্য ঝামেলাপূর্ণ। ধান শুকিয়ে বস্তায় ভরে যানবাহন ভাড়া করে গুদামে নিতে হয়। সেখানে নিয়ম অনুযায়ী ধানের আর্দ্রতা, চিটার পরিমাণ ইত্যাদি বিষয়ে শর্ত থাকে। এ ছাড়া টাকা তুলতে ব্যাংকে যাতায়াতের ব্যাপার আছে। এসব কারণে অনেক কৃষক সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করতে আগ্রহী হন না। কয়েকটি জেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে সরকারি গুদামে ধান সরবরাহের বিষয়ে এ চিত্র পাওয়া গিয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া গ্রামের কৃষক আবু বকর বলেন, ‘গ্রেডিং ও শুকনা থাকার শর্ত, পরিবহন খরচ, মজুরি ইত্যাদি বিবেচনা করলে বাড়ি থেকে পাইকারের কাছে অথবা এলাকার বাজারে কাছাকাছি দামে বিক্রি করাই বেশি সুবিধার।’
তারাগঞ্জের ইকরচালী গ্রামের সম্পন্ন কৃষক আজারুল ইসলাম বলেন, ‘আমন হোক আর বোরো, খাদ্যগুদামোত ধান দিবার গেইলে খরচ আছে। ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি তো আছেই। হয়রানির জন্য দুই বছর থাকি খাদ্যগুদামে ধান না দিয়া বাড়িতে পাইকারের কাছে বিক্রি করি।’
পঞ্চগড় সদর উপজেলার কৃষক মশিউর রহমানও গুদামে ধান দেওয়ার ক্ষেত্রে আর্দ্রতা যাচাই, পরিবহন খরচ, ব্যাংকে গিয়ে টাকা নেওয়া ইত্যাদি ‘ঝামেলার’ কথা বলেন। তাঁর ভাষায়, ‘ঝামেলা কেন করিমো? বাজারত ভালো দাম পাচ্ছি হামরা।’
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম এলাকার কৃষক শহর আলী জানান, সরকারি ক্রয়কেন্দ্রে ধান দিলে তাঁর প্রতি মণে ২০০ টাকা পর্যন্ত লোকসান হতো এবার। তাই অধিকাংশ ধান পাইকারি বাজারে বিক্রি করেছেন।
বেশ কয়েক কৃষক বলেছেন, এবার বৃষ্টিতে ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে ফলনের গড় খরচ বেশি পড়েছে। সরকারি সংগ্রহমূল্যের চেয়ে বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে সরকারি গুদামে ধান দিতে চাচ্ছেন না তাঁরা।
লক্ষ্যমাত্রা ও সংগ্রহের ফারাক
রংপুরে আমন মৌসুমের ৯৩ দিনে দেড় শতাংশ ধানও সংগ্রহ করা যায়নি। ময়মনসিংহে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ৩৬৯ টন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো ধান সংগ্রহ হয়নি। পঞ্চগড়ে ৭ হাজার ২৯৩ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গত তিন মাসে সংগ্রহ হয়েছে ১২০ টন।
কুষ্টিয়ায় ৬ হাজার ৭২০ টন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। অভিযানে মাত্র এক-শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ৩৩ টাকা দরে সাড়ে ৩ লাখ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। সর্বশেষ ৪ মার্চ পর্যন্ত সরকারি গুদামে ধান এসেছে ২৬ হাজার ৭১৪ টন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কৃষকেরা কাঁধে-মাথায় করে ধান গুদামে নিয়ে যাওয়ার পর যদি তাঁদের ফেরত নিয়ে যেতে হয়, তাহলে বিষয়টি খুবই সমস্যাজনক। ধান সংগ্রহের যেসব নিয়ম রয়েছে, তা নিয়ে স্বার্থসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করে বিষয়টি আরও সহজ করা দরকার। বর্তমানে কৃষি মন্ত্রণালয় যে অ্যাপটি ব্যবহার করছে সেটি খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করার চিন্তা করা হচ্ছে। তাহলে সমস্যা কমে আসবে।’
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন রংপুর প্রতিনিধি শিপুল ইসলাম, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি, দেবাশীষ দত্ত, কুষ্টিয়া, আরিফ রহমান, ঝালকাঠি, শাহীন রহমান, পাবনা, ফাহিম হাসান, পঞ্চগড় ও আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, ঝিনাইদহ)।
বগুড়ায় আদালতে সঠিক সাক্ষ্য না দেওয়া, সাক্ষ্য দিতে হাজির না হওয়া এবং সরকারি আইন কর্মকর্তাদের দুর্বলতার কারণে গত এক বছরে ৬ শতাধিক মাদক মামলায় প্রায় ১ হাজার আসামি খালাস পেয়েছেন। এর মধ্যে ২২টি মামলায় ৪৪ জন পুলিশ ও র্যাব কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হননি। এ কারণে ৪৪ পুলিশ কর্মকর্তার ...
৪ ঘণ্টা আগেদিনাজপুরের দুলাল হোসেন পেশায় রংমিস্ত্রি। কাজের সন্ধানে তিনি ঢাকায় গিয়েছিলেন। জুটেছিল কাজও। তবে গত বছরের জুলাই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন তিনি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন রাজধানীর উত্তরায় মিছিলে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এখন ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটেন। তবে যে স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা এসেছিলেন, তা এখন ফিকে...
৪ ঘণ্টা আগে২০২০ সালে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরীর হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন আবুল বাশার সুজন। এর আগে ছিলেন পশুর হাটের ইজারাদার। অল্প সময়ের মধ্যেই ফারুকের ডান হাত হন। কিছুদিন পর তানোর পৌরসভার মেয়র হওয়ারও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন সুজন। সেখানে বাড়ি করেন...
৪ ঘণ্টা আগেদরিদ্র পরিবারের সন্তান নুর আলী (৪৭)। করতেন রাজমিস্ত্রির কাজ। জমিজমা তেমন ছিল না, বাবাও ছিলেন দিনমজুর। বাড়ি বলতে ছিল আধা পাকা টিনের ঘর। অথচ ১০ বছরের ব্যবধানে সেই ব্যক্তি কোটিপতি বনে গেছেন। শুধু তা-ই নয়। আধা পাকা টিনের ঘরের জায়গায় এখন বিশাল তিনতলা আলিশান বাড়ি। যার মূল্য কোটি টাকা।
৪ ঘণ্টা আগে